প্ল্যাটফর্মে খোঁজ মিলল শিশুর

শনিবার রাত ৮ টা নাগাদ শিশুটিকে এক নম্বর প্লাটফর্মে একটি বোতল নিয়ে খেলা করতে দেখেন প্লাটফর্মে কর্তব্যরত মৃণালকান্তি দাস নামে এক জিআরপি কনস্টেবল। শিশুটিকে একা দেখেই তিনি চিনতে পারেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ১৭ অক্টোবর ২০১৭ ০১:১০
Share:

আপন: ঝাড়গ্রামে প্রতীকবাবুর সঙ্গে স্তুতি। নিজস্ব চিত্র

দু’দিন নিখোঁজ থাকার পরে শনিবার সন্ধ্যায় ঝাড়গ্রাম রেল স্টেশনের প্লাটফর্ম থেকে উদ্ধার হল চার বছরের শিশুকন্যা স্তুতি বর্মন ওরফে কুহু।

Advertisement

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার রাত ৮ টা নাগাদ শিশুটিকে এক নম্বর প্লাটফর্মে একটি বোতল নিয়ে খেলা করতে দেখেন প্লাটফর্মে কর্তব্যরত মৃণালকান্তি দাস নামে এক জিআরপি কনস্টেবল। শিশুটিকে একা দেখেই তিনি চিনতে পারেন। সঙ্গে সঙ্গে শিশুটিকে উদ্ধার করে জিআরপি থানায় নিয়ে আসা হয়। স্তুতির পরিবারকে খবর দেওয়া হয়। খবর পেয়ে ঝাড়গ্রাম থানার পুলিশ এসে স্তুতিকে থানায় নিয়ে যায়।

পুলিশের অনুমান, শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা নাগাদ টাটানগরগামী একটি লোকাল ট্রেন ঝাড়গ্রামে ঢোকে। যাঁরা বাচ্চাটিকে নিয়ে গিয়েছিল, তাঁরাই ওই ট্রেন থেকে বাচ্চাটিকে নামিয়ে দিয়ে পালিয়ে যায়। গত শুক্রবার দুপুরে ঘোড়াধরা এলাকায় বাড়ির উঠোনে খেলা করার সময় স্তুতি নিখোঁজ হয়ে যায়। শুক্রবারই ঝাড়গ্রাম থানায় অভিযোগ করেন স্তুতির পালক বাবা প্রতীক বর্মন।

Advertisement

রবিবার ঝাড়গ্রাম সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে স্তুতির মেডিক্যাল পরীক্ষা করানোর পর ঝাড়গ্রাম এসিজেএম আদালতে তোলা হয়। বিচারক অনিরুদ্ধ সাহা মেদিনীপুর চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির মারফত স্তুতিকে মানিকপাড়ার অনাথ আশ্রমে পাঠানোর নির্দেশ দেন। সরকারি আইনজীবী অনিল মণ্ডল বলেন, আবেদনকারী পালক পিতার হাতে শিশুটিকে দেওয়া হবে কি না সে বিষয়ে মেদিনীপুর চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির কাছে রিপোর্ট জানতে চাওয়া হয়েছে। আদালত আগামী বুধবার পরবর্তী শুনানি দিন ধার্য করেছে।

প্রতীকবাবু নয়াগ্রামের বাসিন্দা। প্রতীকবাবুর স্ত্রী অঞ্জনা বর্মন স্বাস্থ্যকর্মী ছিলেন। সন্তান না হওয়ায় তাঁরা পশ্চিম মেদিনীপুর শিশুকল্যাণ কমিটিতে আবেদনক্রমে ২০১৪ সালে মানিকপাড়ার একটি অনাথ আশ্রম থেকে ন’মাসের স্তুতিকে দত্তক নেন।

২০১৫ সালের মে মাসে শারীরিক অসুস্থতকার কারণে অঞ্জনাদেবীর মৃত্যু হয়। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী দত্তক নেওয়া শিশুকন্যার মা মারা গেলে একক ভাবে পালক পিতা কন্যা সন্তানকে আইনসঙ্গত অভিভাবক হতে পারেন না। তখন সংশ্লিষ্ট আশ্রমে কন্যা শিশুটিকে ফিরিয়ে দেওয়া বাধ্যতামূলক। অঞ্জনাদেবী মারা যাওয়ার পরে শিশুসুরক্ষা দফতর শিশুটিকে ফিরিয়ে নেওয়ার আইনি প্রক্রিয়া শুরু করে। মেয়েকে নিজের কাছে রাখার জন্য মেদিনীপুর জেলা আদালতের দ্বারস্থ হন প্রতীকবাবু। সেই মামলা এখনও চলছে। গত মঙ্গলবার মেয়েকে নিয়ে প্রতীকবাবু ঝাড়গ্রাম শহরের ঘোড়াধরায় ভাইয়ের বাড়িতে বেড়াতে আসেন। গত শুক্রবার দুপুরে ওই বাড়ির সামনের উঠোন থেকে নিখোঁজ হয়ে যায় শিশুটি।

ঝাড়গ্রামের পুলিশ সুপার অভিষেক গুপ্ত বলেন, শিশুটি এক জামা পরে নিখোঁজ হয়, অথচ অন্য জামা পরা অবস্থায় শিশুটিকে পাওয়া গিয়েছে। পুরো ঘটনাটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন