খাল থেকে উদ্ধার হওয়া মৃতদেহের পরিচয় মিলল। গত রবিবার সকালে তমলুকের গণপতিনগর গ্রামে প্রতাপখালি খাল থেকে এক ব্যক্তির দেহ উদ্ধার হয়। জানা গিয়েছে, মৃতের নাম মহাদেব সামন্ত (৪৫)। তাঁর বাড়ি নন্দকুমার থানার বহিচবেড়িয়া গ্রামে। স্থানীয় বাসিন্দাদের থেকে ঘটনার কথা জানতে পেরে সোমবার মহাদেববাবুর পরিবারের লোকেরা তমলুক জেলা হাসপাতালের মর্গে গিয়ে মহাদেববাবুর দেহ শনাক্ত করেন।
পুলিশ জানিয়েছে, মৃত ব্যক্তির দেহে পচন ধরে গিয়েছিল। তবে তাঁর প্যান্টের পকেটে দোকানের চাবি ছিল। ওই চাবি দেখেই পরিবারের লোকেরা মহাদেববাবুর দেহ শনাক্ত করেন। ঘটনায় স্থানীয় কয়েকজনের বিরুদ্ধে অভিযোগে সরব মৃতের পরিবারের লোকেরা।
পারিবারিক সূত্রে জানা গিয়েছে, আগে রোজভ্যালির এজেন্ট হিসেবে কাজ করতেন মহাদেববাবু। পরে বাড়ির কাছে নিকাশি বাজারে মুদি দোকান খোলেন তিনি। অভিযোগ, লগ্নিসংস্থার আমানতকারীরা তাঁর কাছে টাকা ফেরত চেয়ে প্রায়ই চাপ দিতেন। এমনকী দিন কয়েক আগে কয়েকজন আমানতকারী টাকা না পেয়ে তাঁকে মারধর করে বলেও অভিযোগ।
মহাদেববাবুর ভাই বাসুদেব সামন্তের অভিযোগ, ‘‘কয়েকদিন আগে এলাকারই তিনজন আমানতকারী দোকানে এসে দাদার কাছে টাকা ফেরত চেয়েছিল। দাদা টাকা ফেরত দিতে না পারায় তাঁকে মারধরও করে।’’ তাঁর দাবি, ‘‘ওই ঘটনার পর গত বৃহস্পতিবার দাদা দোকান থেকে বাড়ি ফেরেনি। আমরা ভেবেছিলাম হয়তো দাদা অন্য কোনও জায়গায় চলে গিয়েছেন। কিন্তু পরে এই ঘটনার কথা জানতে পারি।’’
মহাদেববাবুর মৃত্যুর ঘটনার তদন্ত চেয়ে মঙ্গলবার ‘অল বেঙ্গল চিটফান্ড ডিপোজিটার্স অ্যান্ড এজেন্টস্ ফোরাম’-এর পক্ষ থেকে পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ সুপারের কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হয়। ফোরামের পক্ষ থেকে তমলুক থানায় অভিযোগ দায়ের হয়। ফোরামের জেলা সভাপতি প্রদীপ দাসের অভিযোগ, ‘‘মহাদেববাবু আমাদের সংগঠনের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে যুক্ত। আমানতকারীদের টাকা ফেরতের আন্দোলনেও উনি জড়িত ছিলেন। তাঁর মৃত্যুর ঘটনার যথাযথ তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। এ ছাড়া অন্যান্য এজেন্টদের নিরাপত্তার ব্যবস্থাও নিতে হবে।’’ জেলা পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া বলেন, ‘‘ওই ব্যক্তির মৃত্যুর কারণ জানতে মৃতদেহের ময়না তদন্ত করা হয়েছে। তদন্ত শুরু হয়েছে। পরিবারের পক্ষ থেকে নির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’