ময়নাতদন্তের রিপোর্টে শ্বাসরোধের উল্লেখ
Young Girl Death

সৈকতে তরুণী খুনে কি যৌন ব্যবসা!

লাবণী পরিবার সূত্রের খবর, চাকদহ কলেজের ইতিহাস তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী লাবণী উত্তর ২৪ পরগনার সোদপুরে বিউটিশিয়ান কোর্স করছিলেন। যদিও ঠিক কোথায় সেই পার্লার রয়েছে, তা পরিবারের কারও জানা নেই বলে দাবি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মন্দারমণি শেষ আপডেট: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৭:৫৬
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

দেহ উদ্ধারের পর চার দিন কেটে গিয়েছে। চাঁদপুর সৈকতে তরুণীর দেহ উদ্ধারের ঘটনা কেউ গ্রেফতার পড়েনি। এদিকে, ভিন্‌ জেলার ওই তরুণীর মৃত্যু ঘিরে রহস্য ঘনীভূত হচ্ছে। কীভাবে তাঁর মেয়ে জেলার উপকূলের ওই এলাকায় এল, তা নিয়ে নিয়ে ধন্দে মৃতের পরিবার।

Advertisement

গত ১১ সেপ্টেম্বর ভোরে রামনগর-১ ব্লকের চাঁদপুর সাইক্লোন সেন্টারের পশ্চিম দিকে সৈকতের ধারে এক তরুণীর অর্ধনগ্ন দেহ পাওয়া যায়। দিন দুয়েক পরে তরুণীর পরিচয় জানা যায়। মৃতের নাম লাবণী দাস (২৮)। তাঁর বাড়ি নদিয়া জেলার তাহেরপুরে। তরুণীকে বৃহস্পতিবার শনাক্ত করেছেন তাঁর আত্মীয়রা। লাবণীর দেহটি ময়নাতদন্তের জন্য প্রথমে কাঁথি মহকুমা হাসপাতালে পাঠায় পুলিশ। পরে সেটি তমলুক মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য স্থানান্তরিত করা হয়। পুলিশের হাতে সম্প্রতি এসেছে ওই ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট। তাতে জানানো হয়েছে, গলায় ফাঁস জড়িয়ে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে বলে তরুণীকে। তবে তরুণীর শরীরে অ্যালকোহল বা কোনও নেশার পদার্থ রয়েছে কি না, তা নিশ্চিত নয়।মন্দারমণি থানার পুলিশ ওই তরুণীকে খুনের অভিযোগে স্বতঃপ্রণোদিতভাবে একটি মামলা রুজু করেছে।

লাবণী পরিবার সূত্রের খবর, চাকদহ কলেজের ইতিহাস তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী লাবণী উত্তর ২৪ পরগনার সোদপুরে বিউটিশিয়ান কোর্স করছিলেন। যদিও ঠিক কোথায় সেই পার্লার রয়েছে, তা পরিবারের কারও জানা নেই বলে দাবি। মৃতার দাদা দিলীপ পাল বলছেন, ‘‘রবিবার ব্যারাকপুরে দিদির বাড়ি থেকে আমার বাড়িতে আসার কথা ছিল ওঁর। কিন্তু আসেনি। ভেবেছি হয়তো ওঁর বাড়িতে চলে গিয়েছে। কিন্তু বোনের মোবাইল ফোন সুইচ বন্ধ। পরে মেসোকে বলি, স্থানীয় থানায় একটা নিখোঁজের অভিযোগ দায়ের করতে।’’ কিন্তু বাড়ি থেকে অত দূরে লাবণীকে কে নিয়ে গেল? কেনই বা শ্বাস রোধ করে মারা হল? তা নিয়ে ধোঁয়াশা কাটছে না। দিলীপের অবশ্য অভিযোগ, এর পিছনে বড় কোনও চক্র থাকতে পারে। যারা বিভিন্ন জায়গা থেকে গরিব বাড়ির মেয়েদের কাজ এবং টাকার প্রলোভন দেখিয়ে বিপথে পরিচালনা করে।চাউলখোলা-মন্দারমণি-তাজপুর এলাকায় এমন বড় চক্র চলছে বলে দাবি দিলীপের। তাঁর কথায়, ‘‘লাবণীকে নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে এই চক্র কাজ করছে কি না, পুলিশ তদন্ত করলে জানা যাবে।’’

Advertisement

পুলিশ সূত্রের খবর, আপাতত মন্দারমণি এবং পার্শ্ববর্তী এলাকার কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তারা যৌন ব্যবসার সঙ্গে জড়িত বলে দাবি। এ বিষয়ে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পুলিশের ডেপুটি সুপার (ড্রাগ অ্যান্ড থেরাপিউটিক) রথীন্দ্রনাথ বিশ্বাস বলেন, ‘‘পরিবারের তরফে কেউ কিছুই বলেনি। ঘটনার তদন্ত চলছে।’’ এদিকে, শুক্রবারই অজ্ঞাতপরিচয় লোকজনের বিরুদ্ধে মেয়েকে খুনের অভিযোগ দায়ের করেছেন লাবণীর বাবা বলাই দাস। ময়নাতদন্তের পর শুক্রবার রাতে লাবণীর দেহ নদিয়ার তাহেরপুর পুরসভার এইচ ব্লকের বাড়িতে এসে পৌঁছয়। পেশায় দিনমজুর বলাই বলেন, ‘‘বৃহস্পতিবারই আমার আত্মীয়েরা মৃতদেহ আনতে গিয়েছিলেন। কিন্তু পুলিশ তাঁদের দেহ দেয়নি। বাধ্য হয়ে আমি নিজেই যাই। খুনের অভিযোগ দায়ের করেছি। কিন্তু কে বা কারা আমার মেয়েকে খুন করল, কিছুই বুঝতে পারছি না। ও শুধু বলত, পার্লারে কাজ শেখে। চাপা স্বভাবের ছিল। তবে ও কারও সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল না বলেই জানি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন