কোলাঘাট মেলায় ট্রাফিক পার্ক এই ধরনের পার্কই গড়ে তোলা হবে জাতীয় সড়কের ধারে। —ফাইল চিত্র।
সড়ক দুর্ঘটনা রুখতে গাড়ি চালক-সহ সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে রাজ্যের সবর্ত্র ‘সেফ ড্রাইভ, সেফ লাইফ’-এর ছাতার তলায় শিবিরের বিরাম নেই। এমনকী স্কুল-কলেজে গিয়ে পড়ুয়াদেরও সচেতন করার কাজও টলছে সমানে। সম্প্রতি জেলার তমলুক রাজ ময়দান ও কোলাঘাটের কেটিপিপি মেলায় স্টল দিয়ে দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত গাড়ি-মোটরসাইকেল রেখে দুর্ঘটনার কারণ জানিয়ে মানুষকে সচেতন করতে উদ্যোগী হয়েছে ট্রাফিক পুলিশ। তারপরেও যে ভাবে দুর্ঘটনা ঘটে চলেছে তাতে মানুষের মধ্যে এই নিয়ে সচেতনতা বাড়াতে এবার জেলার উপর দিয়ে যাওয়া জাতীয় সড়কগুলির বিভিন্ন স্থানে স্থায়ী ট্রাফিক পার্ক তৈরি করতে উদ্যোগী হল পুলিশ।
এইসব ট্রাফিক পার্কে বিভিন্ন দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত গাড়ি রেখে দুর্ঘটনার বিবরণ-সহ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য চালকদের সচেতন করা হবে। বাজার এলাকাগুলিতে এইসব স্থায়ী ট্রাফিক পার্ক তৈরি করা হবে। পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় জাতীয় সড়ক সংলগ্ন ও দুর্ঘটনাপ্রবণ থানা এলাকায় এই রকম মোট সাতটি ট্রাফিক পার্ক গড়ার পরিকল্পনা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
জেলা ট্রাফিক পুলিশ সূত্রে খবর, জেলায় হলদিয়া-মেচেদা ৪১ নম্বর, হাওড়া-মুম্বই ৬ নম্বর জাতীয় সড়ক ও দিঘা-কলকাতা সড়কপথে নন্দকুমার থেকে দিঘাগামী ১১৬ বি জাতীয় সড়ক রয়েছে। এর মধ্যে হলদিয়া শিল্পাঞ্চলগামী ৪১ নম্বর জাতীয় সড়ক এবং ৬ নম্বর জাতীয় সড়কে পণ্যবাহী ট্রাক চলাচল করে সবচেয়ে বেশি। জেলায় দিঘা পর্যটন কেন্দ্রে কলকাতা থেকে যাতায়াতের জন্য এই তিনটি জাতীয় সড়কই ব্যবহার করেন পর্যটকেরা। এর মধ্যে কোলাঘাট ও পাঁশকুড়া এলাকায় ৬ নম্বর জাতীয় সড়ক, হলদিয়া– মেচেদা ৪১ নম্বর জাতীয় সড়কে তমলুক, ভবানীপুর এবং নন্দকুমার-দিঘাগামী জাতীয় সড়কের চণ্ডীপুর, মারিশদা ও রামনগর এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনার হার বেশি।
জেলা ট্রাফিক পুলিশের মতে, বেপোরোয়া গতি ও সেই সঙ্গে মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালানোর জেরেই বেশি দুর্ঘটনা ঘটছে। এ ছাড়াও হেলমেট ছাড়া মোটর সাইকেল চালানোর জেরে দুর্ঘটনায় মৃত্যুও হচ্ছে অনেক বাইক আরোহীর। ইতিমধ্যেই সড়ক দুর্ঘটনা রুখতে জাতীয় সড়কের বিভিন্ন এলাকায় ‘স্পিড লেজার গান’-এর নজরদারি ছাড়াও চালক মদ্যপ অবস্থায় রয়েছে কি না তার পরীক্ষা করতে ‘ব্রিদিং অ্যানালাইজার’ যন্ত্র ব্যবহার শুরু হয়েছে। এ সবের পাশাপাশি জাতীয় সড়কে চলাচলকারী গাড়ির চালক-সহ পথচারীদের সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ে সচেতন করতেই স্থায়ী ট্রাফিক পার্ক তৈরির উদ্যোগ বলে জেলা ট্রাফিক পুলিশ সূত্রে জানানো
জেলা ট্রাফিক পুলিশের আধিকারিক আমিনুল ইসলাম খান বলেন, ‘‘জাতীয় সড়ক ধরে যাতায়াতের পথে গাড়ি চালকদের নজরে পড়বে এমন জায়গায় ট্রাফিক পার্কগুলি তৈরি করা হচ্ছে। জেলার সাতটি থানা এলাকায় সড়ক সংলগ্ন বাজারের কাছে একটি শেড তৈরি করে ওই ট্রাফিক পার্ক তৈরি করা হবে। আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই এই সব পার্ক চালুর প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।’’