ভোটের ফলের জের, জল্পনা

আচমকা রক্ষী প্রত্যাহার তৃণমূল শহর সভাপতির

পুরভোটের ফল ঘোষণার পরেই তৃণমূলের খড়্গপুর শহর সভাপতি দেবাশিস চৌধুরীর নিরাপত্তারক্ষী প্রত্যাহার করা নেওয়ায় জল্পনা ছড়িয়েছে। তাতে ঘৃতাহুতি দিয়েছেন দেবাশিসবাবু নিজেই। তাঁর দাবি, নিরাপত্তারক্ষী প্রত্যাহারের ব্যাপারে কিছু জানা নেই। দেবাশিসবাবু বলছেন, “আমার রক্ষী প্রত্যাহার করা হয়েছে বলে লোকের মুখে শুনছি। এ ব্যাপারে আমাকে কিছু জানানো হয়নি!” তবে কি এটা দলের ‘খারাপ’ ফলের জের?

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ০৫ মে ২০১৫ ০০:০৮
Share:

পুরভোটের ফল ঘোষণার পরেই তৃণমূলের খড়্গপুর শহর সভাপতি দেবাশিস চৌধুরীর নিরাপত্তারক্ষী প্রত্যাহার করা নেওয়ায় জল্পনা ছড়িয়েছে। তাতে ঘৃতাহুতি দিয়েছেন দেবাশিসবাবু নিজেই। তাঁর দাবি, নিরাপত্তারক্ষী প্রত্যাহারের ব্যাপারে কিছু জানা নেই। দেবাশিসবাবু বলছেন, “আমার রক্ষী প্রত্যাহার করা হয়েছে বলে লোকের মুখে শুনছি। এ ব্যাপারে আমাকে কিছু জানানো হয়নি!” তবে কি এটা দলের ‘খারাপ’ ফলের জের?

Advertisement

পুরভোটের ফলপ্রকাশের ক’দিন পর থেকেই তাঁর রক্ষীরা আর আসছেন না। শহর সভাপতির মন্তব্য, “ক’দিন হল ওঁরা আসছেন না ঠিকই তবে ওঁদের সঙ্গে আমার যোগাযোগ রয়েছে।” দেবাশিস চৌধুরীর নিরাপত্তারক্ষী প্রত্যাহার করা নিয়ে অবশ্য ঢাকঢাক-গুড়গুড় করছে না পুলিশ। পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষ বলেন, “নিরাপত্তারক্ষী প্রত্যাহার করা হয়েছে।” কারণ অবশ্য জানাননি জেলা পুলিশ সুপার। তাঁর বক্তব্য, নিরাপত্তার বিষয়টি পুরোপুরি পুলিশের অভ্যন্তরীণ বিষয়। কার রক্ষী থাকবে, কার থাকবে না, সে বিষয়ে জেলা গোয়েন্দা বিভাগের ভূমিকা থাকে।

তৃণমূলের শহর সভাপতির নিরাপত্তারক্ষী প্রত্যাহার করা নিয়ে অবশ্য কটাক্ষ করতে ছাড়ছে না বিরোধী শিবির। প্রদেশ কংগ্রেস কমিটির সদস্য তথা রেলশহরের বিদায়ী পুরপ্রধান রবিশঙ্কর পাণ্ডে বলছেন, “শুনেছি, পুরভোটের ফলপ্রকাশের পরই না কি নিরাপত্তারক্ষী প্রত্যাহার করা হয়েছে। নিশ্চয়ই কোনও ব্যাপার রয়েছে। আমাদের অবশ্য রক্ষীর দরকার হয় না! আমরা মানুষের সঙ্গে থাকি!”

Advertisement

পুলিশের এক সূত্রে খবর, খড়্গপুরের ৪ জন রাজনৈতিক নেতা নিরাপত্তারক্ষী পেতেন। প্রবীণ বিধায়ক কংগ্রেসের জ্ঞানসিংহ সোহন পাল, জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ তৃণমূলের নির্মল ঘোষ, তৃণমূলের শহর সভাপতি দেবাশিস চৌধুরী এবং কংগ্রেসের মহিলা নেত্রী হেমা চৌবে। দেবাশিসবাবুর দু’জন রক্ষী ছিলেন সেই ২০০১ সাল থেকে। হেমাদেবীরও এক সময় দু’জন রক্ষী ছিলেন। পরে এক জনকে প্রত্যাহার করা হয়। ক’দিন আগে অন্য জনকেও প্রত্যাহার করা হয়েছে। অবশ্য বাকি দু’জনের এক জন করে রক্ষী এখনও বহাল রয়েছে। দেবাশিসবাবুর রক্ষী প্রত্যাহার করা নিয়ে ঘনিষ্ঠ মহলে উষ্মাপ্রকাশ করছেন হেমাদেবীও। তাঁর মন্তব্য, “আমি না-হয় এখন বিরোধী দলে রয়েছি। মুনমুনদা তো শাসক দলের শহর সভাপতি। তাঁর রক্ষী কেন প্রত্যাহার করা হল, বুঝতে পারছি না।’’

খড়্গপুরে পুরভোটে ম্যাজিক ফিগারের অনেক আগেই থামতে হয়েছে তৃণমূলকে। এমনকী, বাম- আমলের থেকেও ফল খারাপ হয়েছে। গত পুরভোটে যেখানে ১৫টি আসনে জয় এসেছিল, এ বার সেখানে ১১টি। ১১টি আসনে জয় পেয়েছে কংগ্রেস। বিজেপি ৭টিতে ও বামেরা ৬টি আসনে জয়ী হয়েছে। ফলে, রেলশহরের পুরবোর্ড নিয়ে ভাবতে হচ্ছে সব দলকেই।

পুরভোটে ‘খারাপ’ ফলের পর দলের সবস্তরে একটা বার্তা দিতে সভাপতির উপর কোপ এই প্রথম নয়। ২০১৩ সালে মেদিনীপুরে পুরভোটের পরও সরে যেতে হয় সুকুমার পড়্যাকে।

দেবাশিসবাবুর রক্ষী প্রত্যাহারের বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে দাবি দলের জেলা সভাপতি দীনেন রায়ের। তবে তাঁর কথায় রয়েছে অন্য গন্ধ, “পুরনো কর্মীদের দূরে ফেলে দেওয়া যাবে না। কিছু অসামাজিক ক্ষমতাসীন দলের ছত্রছায়ায় থাকতে চায়। সতর্ক থাকতে হবে। দুর্ভাগ্য, খড়্গপুরে সব ক্ষেত্রে সেই সতর্কতা ছিল না।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন