Odisha Bus Accident

ফিরল দেহ, শেষকৃত্যে নেতা-বিধায়ক

বরিদা গ্রামের বাড়িতে অচিন্ত্য মাইতির শেষকৃত্যের আগে সেখানে ছিলেন তৃণমূলের পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য রাজকুমার দুয়ারি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

এগরা শেষ আপডেট: ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ০৯:২১
Share:

মৃতদেহে শ্রদ্ধা বিধায়ক তরুণ কুমার মাইতির। নিজস্ব চিত্র।

দেহ ফিরল ওড়িশায় বাস দুর্ঘটনায় মৃত জেলার চার বাসিন্দার। মঙ্গলবার রাতে এগরা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল দেহ আসার পরে জেলা প্রশাসন এবং পুলিশের সাহায্যে দেহগুলি পৌঁছে দেওয়া হয় মৃত ব্যক্তিদের বাড়িতে। লোকসভা ভোটের আবহে তাঁদের শেষকৃত্যে হাজির থেকেছেন রাজনৈতিক প্রতিনিধিরা।

Advertisement

সোমবার রাতে ওড়িশার জাজপুরের বরাবাটিতে সেতু থেকে উল্টে গিয়েছিল পুুরী-হলদিয়া রুটের একটি বাস। দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় পূর্ব মেদিনীপুরের এগরার দুবদা গ্রামের অচিন্ত্য মাইতি, ভূপতিনগরের উড়উড়ি গ্রামের উত্তম মাইতি, চণ্ডীপুরের ঘোলদা গ্রামের মনোজ ঘোষ এবং নন্দীগ্রামের খোদামবাড়ির বর্ণালী দাসের। সোমবার রাতেই এগরা পুলিশের একটি দল দুর্ঘটনাস্থলে যায়। জেলার বাসিন্দাদের মৃতদেহ শনাক্তকরণ থেকে ও আহদের পূর্ব মেদিনীপুরের হাসপাতালে স্থানান্তরিতের কাজ শুরু হয়। মঙ্গলবার বিকেলে ১২জন আহতকে অ্যাম্বুল্যান্সে এগরা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়।

মঙ্গলবার রাত ১১টা নাগাদ ওড়িশা থেকে ময়নাতদন্তের পর এগরা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে মৃত চার জনের দেহ আসে। সেখানে যান এগরার মহকুমাশাসক মনজিৎ কুমার যাদব, স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক তরুণ কুমার মাইতি এবং তৃণমূলের পুরপ্রতিনিধিরা। দেহগুলিতে মালা দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো পরে এলাকার বিডিও এবং এগরা থানার পুলিশের তরফে সেগুলি নিজনিজ গ্রামে পাঠানোর বন্দোবস্ত করা হয়। মহকুমাশাসক বলেন, ‘‘মঙ্গলবার রাতে পুলিশ ও প্রশাসনের তরফে গাড়িতে করে দেহগুলি গ্রামে পাঠানো হয়েছে। প্রশাসনের উপস্থিতিতে রাতেই দেহের শেষকৃত্য হয়েছে।’’

Advertisement

বরিদা গ্রামের বাড়িতে অচিন্ত্য মাইতির শেষকৃত্যের আগে সেখানে ছিলেন তৃণমূলের পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য রাজকুমার দুয়ারি। পরে দুবদা গ্রাম পঞ্চায়েতে প্রতিনিধি ও পুলিশ প্রশাসনের উপস্থিতিতে গভীর রাতে অচিন্ত্যের শেষকৃত্য হয়। ভূপতিনগরের উড়উড়ি গ্রামের বাসিন্দা উত্তম মাইতির দেহ বাড়িতে পৌঁছে দেন ভূপতিনগর থানার ওসি গোপাল পাঠক। সেখানে হাজির ছিলেন জেলা ও ব্লক প্রশাসনের প্রতিনিধি এবং স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান। মৃতের আত্মীয় রামপদ দাস বলেন, ‘‘মঙ্গলবার রাতে পুলিশ ও প্রশাসন গাড়ি করে মৃতদেহ বাড়িতে পৌছে দেয়। শেষকৃত্য উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান থেকে প্রশাসন।’’

চণ্ডীপুর থানার পুলিশ, বিডিও শাশ্বত লাহিড়ী, জেলা প্রশাসনের প্রতিনিধিরা যান ঘোলদায় মনোজ ঘোষের বাড়িতে। তৃণমূল পরিচালিত ঈশ্বরপুর পঞ্চায়েতের প্রতিনিধি, চণ্ডীপুরের ব্লক তৃণমূলের সভাপতি সুনীল প্রধান মৃতদেহে মালা দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। তৃণমূলের তরফে মৃতের পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দেওয়া হয়। দুর্ঘটনায় মনোজের স্ত্রী অর্চনাও আহত হয়েছেন। স্বামীর শেষকৃত্য থাকতে চাইলেও শারীরিক অসুস্থতার কারণে তিনি থাকতে পারেনি। তাঁকে প্রথমে চণ্ডীপুর ব্লক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি করানো হয়। পরবর্তীতে তমলুক জেলা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। নন্দীগ্রামের খোদামবাড়িতে বর্ণালী দাসের অন্ত্যেষ্টি হয়েছে বুধবার সকালে। তাঁর ছেলে বেঙ্গালুরুতে এ দিন বাড়ি পৌঁছন। সকালে তাঁদের বাড়িতে আসেন নন্দীগ্রামের ব্লক প্রশাসনের দুই প্রতিনিধি।

দুর্ঘটনায় মৃত উত্তম মাইতির স্ত্রী নীলিমাও অর্চনার মতো তমলুক জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁর ভাঙা বা’হাতে অস্ত্রোপচার হয়েছে। উত্তমের মেয়ের এখনও কটক মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসা চলছে। মঙ্গলবার এগরা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে যে ১২ আহতকে ভর্তি করা হয়েছিল, তাঁদের মধ্যে ন’জনকে পরে ওই দিনই ছুটি দেওয়া হয়। বাকি তিনজনকে বুধবার চিকিৎসার পরে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এগরা সুপার স্পেসালিটি হাসপাতালের সুপার সমীর আচার্য্য বলেন, ‘‘মঙ্গলবার রাতে ন’জনকে ছুটি দেওয়া হয়েছে। বাকি তিনজনকে বুধবার সকালে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। প্রত্যেকে আপাতত সুস্থ রয়েছেন।’’ আহতদের চিকিৎসার অ্যাম্বুল্যান্সে করে বাড়ি পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন এগরার মহকুমাশাসক।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন