Panchayat Election 2023

ছড়ায় কটাক্ষ, ভরছে দেওয়াল

রাস্তার মোড়ে, পাড়ার অলিগলির দেওয়ালে ছড়ায় ছড়ায় শাসক দলকে 'বিদ্ধ' করছে বিজেপি এবং বামেরা। সেই দেওয়াল লিখনে এখনই জমজমাট আসন্ন পঞ্চায়েতের লড়াই।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রামনগর শেষ আপডেট: ১৬ মে ২০২৩ ০৭:২০
Share:

কাঁথিতে বিজেপির দেওয়াল লিখন। ডান দিকে, বামেদের দেওয়াল লিখন। নিজস্ব চিত্র।

পঞ্চায়েত ভোটের দিনক্ষণ এখনও ঘোষিত হয়নি। প্রার্থীদের নামের চূড়ান্ত তালিকাও প্রকাশ করেনি কোনও দল। তবে ভোট প্রচারে রঙিন নন্দীগ্রাম থেকে রামনগর। প্রচারে বেড়েছে ফ্লেক্স, ফেস্টুন আর ব্যানারের রমরমা। প্রচার চলেছে সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটেও। আর সর্বোপরি রয়েছে চিরাচরিত দেওয়াল লিখন। রাস্তার মোড়ে, পাড়ার অলিগলির দেওয়ালে ছড়ায় ছড়ায় শাসক দলকে 'বিদ্ধ' করছে বিজেপি এবং বামেরা। সেই দেওয়াল লিখনে এখনই জমজমাট আসন্ন পঞ্চায়েতের লড়াই।

Advertisement

পূর্ব মেদিনীপুরে ২২৩টি গ্রাম পঞ্চায়েত, ২৫ টি পঞ্চায়েত সমিতি রয়েছে। এবার অবশ্য ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের সব ক্ষেত্রেই সামান্য আসন সংখ্যা বেড়ে গিয়েছে। গত বিধানসভা ভোটের সময় থেকেই পূর্ব মেদিনীপুরে ঘাসফুল শিবিরের সংগঠন ধাক্কা খেয়েছিল গেরুয়া শিবিরের কাছে। এছাড়া, গোষ্ঠী দ্বন্দ্ব এবং নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগ তো রয়েছেই। দুর্নীতির সঙ্গে যেভাবে পূর্ব মেদিনীপুরে শাসকদলের নেতা র নাম জড়িয়েছে তাতে রীতিমতো অস্বস্তিতে ঘাসফুল শিবির। সেই সব প্রসঙ্গকেই সামনে এনে দেওয়াল লিখনে শাসকদলকে কটাক্ষ করেছে বিরোধীরা।

রামনগরের নরন্ডিয়া বুথে দেওয়াল লিখনে স্বজন-পোষণ বন্ধ আর দুর্নীতিমুক্ত পঞ্চায়েত গড়ে তোলার বার্তা তুলে ধরেছে বামেরা। তৈরি করা হয়েছে কটাক্ষ-ছড়া। দেওয়ালে লেখা হয়েছে, ‘গ্রামে গ্রামে পড়ছে সাড়া, চোরেরা এবার পড়বে ধরা। চলো এবার বামে ফিরি, দুর্নীতি মুক্ত পঞ্চায়েত গড়ি’। ছড়া বানিয়েছে বিজেপিও। তারাও লিখেছে, ‘কয়লা চোর, বালি চোর, চাকরি চোর তৃণমূল’।

Advertisement

দীর্ঘ সাড়ে তিন দশক ধরে পূর্ব মেদিনীপুরে বামেদের আধিপত্য ছিল। নন্দীগ্রামে জমি আন্দোলনের হাত ধরে ২০০৮ সালে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদ প্রথমবার হাতছাড়া হয় বামেদের। ২০১১ সাল থেকে গোটা জেলায় বিরোধী শূন্য হিসাবে রয়েছে তৃণমূল। গত বছর বিধানসভা ভোটে জেলার ১৬টি আসনের মধ্যে সাতটিতে জয়ী হয়েছেন বিজেপি প্রার্থীরা। এক্ষেত্রে বামেদের ভোট বিজেপিতে গিয়েছে বলে মনে করেন রাজনৈতিক মহল। তাই রাজ্যের শাসক দলের বিরুদ্ধে পঞ্চায়েত ভোটে নিজেদের সমর্থন পুনরুদ্ধারের জন্য জেলা জুড়ে এখন থেকেই কোমর বেঁধে নেমেছে বামেরা। এ প্রসঙ্গে সিপিএমের পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য আশিস প্রমাণিক বলছেন, "ছড়া- কবিতা বাংলার সংস্কৃতি। সাধারণ মানুষ যাতে বাস্তব পরিস্থিতি কবিতার ছন্দে বুঝে ভোট দেন তার জন্যই এমন উদ্যোগ।’’ শাসকদলের বিরোধিতায় বামেদের সঙ্গে টক্কর দিচ্ছে গেরুয়া শিবিরও। বিজেপির কাঁথি সাংগঠনিক জেলার সহ-সভাপতি অসীম মিশ্র বলেন, ‘চুরি আর দুর্নীতির বিরুদ্ধে এ রাজ্যে বিজেপি সবচেয়ে বেশি প্রতিবাদ মুখর। বামেদেরকে তলে তলে অক্সিজেন যোগাচ্ছে তৃণমূল। মানুষ এমনিতেই জানেন সবকিছু। তবু সাহিত্যপ্রেমী বাঙালি ভোটারদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতেই দেওয়াল লিখনে ওদের জুড়ি মেলা ভার।

জেলায় ভোট-রঙ্গে যখন মজছে গেরুয়া এবং বাম শিবির, তখন কী বলছেন রাজ্যের শাসকদলের জেলা নেতৃত্ব? পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদের সভাপতি উত্তম বারিক বলছেন, ‘‘ভোটের দিন ঘোষণা হলেই আমাদের দেওয়াল লিখন শুরু হবে। আগেভাগে ছড়া-কবিতার লিখে ও বিরোধীরা শুধুমাত্র দেওয়ালেই সীমাবদ্ধ থাকবেন। মানুষের হৃদয়ে একটাই নাম— মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।"

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন