পাশে কুকুর ছানা নিয়েই চলছে পড়াশোনা

স্থানীয় সূত্রের খবর, ডি-মহল গ্রাম এলাকায় রয়েছে ১১৬ নম্বর এবং ৩৩৭ নম্বর অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র। কেন্দ্র দু’টির দূরত্ব প্রায় দেড় কিলোমিটার। ১১৬ নম্বর কেন্দ্রে কর্মী হিসাবে রয়েছেন সন্ধ্যারানি ঘাঁটা মিদ্যা নামে এক মহিলা। তবে ৩৩৭ নম্বর কেন্দ্রে নেই কোনও কর্মী বা সহায়িকা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কোলাঘাট শেষ আপডেট: ১৭ জানুয়ারি ২০১৯ ০৫:২৯
Share:

অঙ্গনওয়াড়িতে কুকুরছানার সঙ্গে খুদে পড়ুয়ারা। নিজস্ব চিত্র

আইনি জটে জেলায় দীর্ঘদিন নিয়োগ হয়নি অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী এবং সহায়িকার। অভিযোগ, এর ফলে চরম বিপাকে রয়েছে কোলাঘাট ব্লকের দেড়িয়াচক গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার ডি-মহল গ্রামের দুই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র। স্থানীয় সূত্রের খবর, ২০০৬ সাল থেকে এলাকার দু’টি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র পরিচালনা করেন একজন মাত্র কর্মী। পাশাপাশি, একটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের পরিকাঠামো নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রের খবর, ডি-মহল গ্রাম এলাকায় রয়েছে ১১৬ নম্বর এবং ৩৩৭ নম্বর অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র। কেন্দ্র দু’টির দূরত্ব প্রায় দেড় কিলোমিটার। ১১৬ নম্বর কেন্দ্রে কর্মী হিসাবে রয়েছেন সন্ধ্যারানি ঘাঁটা মিদ্যা নামে এক মহিলা। তবে ৩৩৭ নম্বর কেন্দ্রে নেই কোনও কর্মী বা সহায়িকা। তাই প্রতিদিন খুব সকালে হেঁটে ৩৩৭ নম্বর কেন্দ্রে যান সন্ধ্যারানি। সেখানে পড়িয়ে হেঁটেই ফিরে আসেন নিজের কেন্দ্রে। তার পরে সেখানে তিনি পড়ান এবং রান্নার কাজ করেন। কারণ, ১১৬ নম্বর কেন্দ্রের সহায়িকা গত নভেম্বরে অবসর নিয়েছেন।

৩৩৭ নম্বর কেন্দ্রে কোনও সহায়িকা না থাকায়, সেখানে রান্নার জন্য স্থানীয় এক মহিলাকে অল্প টাকার বিনিময়ে রান্নার কাজে নিয়োগ করা হয়েছে। করেছেন। সন্ধ্যাদেবী জানাচ্ছেন, ‘‘কোনও কর্মী না থাকায় আমাকেই ৩৩৭ নম্বর কেন্দ্রে গিয়ে পড়াতে হচ্ছে। আর মাসে ৫০০ টাকার বিনিময়ে সেখানে রান্নার জন্য এক মহিলাকে সাময়িক রাখা হয়েছে। তা না হলে কেন্দ্রটি বন্ধ হয়ে যাবে।’’ উল্লেখ্য, ১১৬ নম্বর কেন্দ্রে শিশু-সহ মোট উপভোক্তার সংখ্যা ৭১ এবং ৩৩৭ নম্বর কেন্দ্রে ওই সংখ্যাটা ৩৮।

Advertisement

কর্মীর সমস্যার পাশাপাশি, ১১৬ নম্বর কেন্দ্রটির পরিকাঠামো নিয়েও অভিযোগ উঠেছে। কেন্দ্রটির টিনের ছাউন ভেঙে গিয়েছে অনেকদিন আগে। তাতে দেওয়া হয়েছে ত্রিপল। তবে বর্ষাকালে সেই ত্রিপলের ফাঁক দিয়ে বৃষ্টির জল পড়ে। কেন্দ্রের মেঝে বাধানো না হওয়ায় তাতে বাসা বেঁধেছে, ইঁদুর। অভিয়োগ, তারা শিশুদের জন্য মজুত করা খাবারও সাবাড় করে দেয়।

এই সব সমস্যার সঙ্গে নতুন যোগ হয়েছে কুকুরের উৎপাত। কাঠের বেড়ার ফাঁক দিয়ে ভিতরে ঢুকে কেন্দ্রে আস্তান গেড়েছে কুকুর। বাচ্চাও দিয়েছে সে। অভিযোগ, এর ফলে সেই কুকুরের সঙ্গেই পড়াশোনা করতে হচ্ছে শিশুদের। এলাকার বাসিন্দা কৃষ্ণা সাহু বলেন, ‘‘এখানে কুকুরের জ্বালায় বাচ্চারা পড়তে পারে না। কেন্দ্রটি সংস্কার করা খুব প্রয়োজন। কেন্দ্রের কর্মী সন্ধ্যাদেবীর কথায়, ‘‘একার পক্ষে দু’টি কেন্দ্র সামলাতে খুবই অসুবিধা হচ্ছে। কর্মী নিয়োগের পাশাপাশি দুটি কেন্দ্রই দ্রুত সংস্কারের প্রয়োজন।’’

এ ব্যাপারে পাঁশকুড়া-২ নম্বর শিশু উন্নয়ন প্ৰকল্প আধিকারিক প্রীতিলতা মণ্ডল বলেন, ‘‘আদালতে মামলার জেরে দীর্ঘদিন কর্মী এবং সহায়িকা নিয়োগ না হওয়ায় এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এই মুহূর্তে কেন্দ্রগুলি মেরামতের জন্য কোনও বরাদ্দ হচ্ছে না বরং নতুন ভবন নির্মাণের জন্য অর্থ বরাদ্দ করছে সরকার। তবে ওই এলাকায় কোনও দান করা জমি না পাওয়া যাওয়ায় নতুন ভবনও তৈরি করা যাচ্ছে না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন