বাধা ঠেলেই এগোতে চায় কমলাকান্তরা

এক জনের স্বপ্ন আইআইটি থেকে সিভিল ইঞ্জিনিয়ার হবেন। অন্য জনের ইচ্ছে পদার্থবিদ্যার শিক্ষক হওয়ার। তবে অভাবের সংসারে আদৌ স্বপ্ন বাস্তবায়িত হবে কি না, তা নিয়ে চিন্তায় তারা দু’জনেই। তাদের এক জন মৈনাক ভৌমিক সবং মালপাড় হাইস্কুল থেকে উচ্চ মাধ্যমিকে ৪৭৯ নম্বর পেয়েছে। অন্য জন কমলাকান্ত সিংহ সবং সারদাময়ী উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে ৪৭০ নম্বর পেয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

খড়্গপুর শেষ আপডেট: ০২ জুন ২০১৫ ০০:২৫
Share:

কমলাকান্ত সিংহ ও মৈনাক ভৌমিক। নিজস্ব চিত্র।

এক জনের স্বপ্ন আইআইটি থেকে সিভিল ইঞ্জিনিয়ার হবেন। অন্য জনের ইচ্ছে পদার্থবিদ্যার শিক্ষক হওয়ার। তবে অভাবের সংসারে আদৌ স্বপ্ন বাস্তবায়িত হবে কি না, তা নিয়ে চিন্তায় তারা দু’জনেই।
তাদের এক জন মৈনাক ভৌমিক সবং মালপাড় হাইস্কুল থেকে উচ্চ মাধ্যমিকে ৪৭৯ নম্বর পেয়েছে। অন্য জন কমলাকান্ত সিংহ সবং সারদাময়ী উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে ৪৭০ নম্বর পেয়েছে।
মালপাড়ের বাসিন্দা মৈনাকরা দু’ভাই। দাদা মৃগাঙ্কশেখর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ছাত্র। নিজেদের বিঘা দু’য়েক জমিতে চাষ করে কোনও মতে সংসার চালান বাবা মনোরঞ্জন ভৌমিক। দু’ছেলের পড়াশোনার খরচ সামলাতে মা মিনাক্ষীদেবী বছর কয়েক হল আশাকর্মীর কাজ করছেন। তাতেও সংসারের হাল ফেরেনি। ছোট ছেলের পড়াশোনা চালানো নিয়ে চিন্তায় মনোরঞ্জনবাবু। তাঁর কথায়, “আমার দু’ছেলে ছোট থেকেই পড়াশোনায় ভাল। ওদের ভবিষ্যতের কথা ভেবে যে ভাবে পেড়েছি রোজগারের চেষ্টা করেছি।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘ছোট ছেলে আইআইটি-র প্রবেশিকা দিয়েছে। ছেলে ওখানে সুযোগ পেলে জমি বিক্রি করে হলেও পড়াব।” মৈনাকের কথায়, “আমার সাফল্যের পিছনে মা-বাবা ও স্কুল শিক্ষকদের অবদান ভোলার নয়। আইআইটিতে সুযোগ পেলে খড়্গপুরে পড়ব। বাবা-মা আমার জন্য অনেক কষ্ট করছেন। ভবিষ্যতে সাবলম্বী হয়ে এদের পাশে দাঁড়ানোই মূল লক্ষ্য।”

Advertisement

সবংয়ের লারোর বাসিন্দা কমলাকান্ত সিংহের বাবা কালীপদ সিংহ নিজের এক বিঘা জমিতে চাষের পাশাপাশি শ্রমিকের কাজ করেন। আর মা সংসার সামলাতে হাতে মাদুর বোনেন। কমলাকান্তের এক দিদি ও দুই বোন। কালীপদবাবুর বড় মেয়ে রসায়নে স্নাতক নিয়ে কলেজে দ্বিতীয় বর্ষে পড়াশোনা করছেন। সংসারে অভাবের কারণে গত দু’বছর মামা বাড়িতে থেকে পড়াশোনা করেছে কমলাকান্ত। বড় হয়ে পদার্থবিদ্যার শিক্ষক হতে চায় সে। মামা সুভাষ মাইতি বলেন, “আমি রসায়নের গৃহশিক্ষক। সেই উপার্জন দিয়েই যতটা সম্ভব ভাগ্নের পাশে থাকার চেষ্টা করেছি।”

স্বপ্নের কাছে পৌঁছতে আপাতত ভাল কলেজে পদার্থবিদ্যা নিয়ে পড়তে চায় সে। তাঁর কথায়, “ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার ইচ্ছে থাকলেও খরচ অনেক। তাই পদার্থবিদ্যা নিয়ে পড়াশোনা করে শিক্ষক হওয়ার চেষ্টা করে যাব।’’ তিনি বলেন, ‘‘কলকাতার কলেজে পড়তে গেলে অনেক খরচ। বাবার পক্ষে তা সামলানো মুশকিল। তাই পড়াশোনার ফাঁকে কয়েকটা টিউশনি করব ভেবেছি।’’

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন