ফের চিকিৎসার গাফিলতিতে প্রসূতি মৃত্যুর অভিযোগ ঘিরে শোরগোল পড়েছে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। মৃতের নাম কৃষ্ণা গিরি (২৫)। বাড়ি গড়বেতায়। রবিবার গভীর রাতে তাঁর মৃত্যু হয়। সোমবার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ জানান মৃতের পরিজনেরা। নড়ে বসেন কর্তৃপক্ষ। তদন্ত কমিটি গড়ার আশ্বাস দেওয়া হয়। মেদিনীপুর মেডিক্যালের অধ্যক্ষ পঞ্চানন কুণ্ডু বলেন, “ওই প্রসূতির অবস্থা সঙ্কটজনক ছিল। মৃত্যুর ঘটনা দুঃখজনক। অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
কৃষ্ণাদেবী তিন সপ্তাহেরও বেশি মেদিনীপুর মেডিক্যালের আইসিইউ- তে ভর্তি ছিলেন। হাসপাতাল সূত্রে খবর, প্রসব যন্ত্রণা নিয়ে গত ২৬ এপ্রিল এখানে ভর্তি হন কৃষ্ণাদেবী। ওই দিনই অস্ত্রোপচার করে কন্যাসন্তানের জন্ম দেন তিনি। তবে তার পরেই তাঁর শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি হয়। হাসপাতালের এক কর্তার বক্তব্য, “প্রসূতির শারীরিক অবস্থার উন্নতি হচ্ছিল না। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরাও দেখেছেন। সুস্থ করে তোলার সব রকম চেষ্টা হয়েছিল। তা সম্ভব হল না।”
রবিবার কৃষ্ণাদেবীর অবস্থার আরও অবনতি হয়েছিল। তারপর গভীর রাতে তাঁর মৃত্যু হয়। সে কথা শোনার পরেই অসন্তোষ দেখা দেয় পরিজনেদের মধ্যে। তাঁদের অভিযোগ, ওই প্রসূতির ঠিক মতো চিকিৎসাই হয়নি। মৃতের শ্বশুর সুবল গিরির কথায়, “চিকিৎসায় গাফিলতির জন্যই বৌমার মৃত্যু হয়েছে। ঠিকমতো চিকিৎসা হলে ও মারা যেত না।” সুবলবাবু আরও বলেন, “আমি হাসপাতালে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছি। বৌমা এতদিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। তাও কেন সুস্থ হল না সেটাই বুঝতে পারছি না। ঠিকঠাক চিকিৎসা হলে নিশ্চয়ই সুস্থ হত।”
পরিজনেদের দাবি, প্রসবের সময়ে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হয়েছিল। ভুল চিকিৎসা না হলে এই ঘটনা ঘটত না। মৃতে শ্বশুরের কথায়, “আমি চাই না অন্য কারও সঙ্গে একই ঘটনা ঘটুক। তাই হাসপাতালে অভিযোগ জানিয়েছি। আমি চাই, যাদের অবহেলায় বৌমার মৃত্যু হল, তাদের বিরুদ্ধে হাসপাতাল ব্যবস্থা নিক।”
সপ্তাহ কয়েক আগেও মেদিনীপুর মেডিক্যালে চিকিৎসার অবহেলায় রোগী মৃত্যুর অভিযোগ ওঠে। তখনও হাসপাতালে শোরগোল পড়েছিল। মেডিক্যালের অধ্যক্ষ পঞ্চাননবাবুর আশ্বাস, “গািফলতির অভিযোগ এলেই সব দিক খতিয়ে দেখা হয়। এ ক্ষেত্রেও তাই হবে। উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”