দলবদল করা কাউন্সিলরদের পদত্যাগ করে ভোটে লড়ার ‘চ্যালেঞ্জ’ করল কংগ্রেস। রবিবার খড়্গপুরের গোলবাজারে সাংবাদিক বৈঠক করে এমন বার্তাই দিলেন কংগ্রেস নেতৃত্ব।
সম্প্রতি কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন প্রাক্তন পুরপ্রধান রবিশঙ্কর পাণ্ডে-সহ রেলশহরের পাঁচ কাউন্সিলর। তবে এই দলবদলে কংগ্রেস যে দুর্বল হয়নি সেই বার্তা দিতেই বাকি ছয় কাউন্সিলরকে নিয়ে এ দিন বৈঠকে বসে দল। ছিলেন শহর সভাপতি অমল দাস, জেলা নেতা শম্ভু চট্টোপাধ্যায়, কাউন্সিলর বিষ্ণুবাহাদুর কামি, চিত্তরঞ্জন মণ্ডল, রীতা শর্মা। অমলবাবু বলেন, “ওই কাউন্সিলরদের বহিষ্কারের বিষয়টি প্রদেশ নেতৃত্বকে জানাব। তবে ওঁদের উচিত পদত্যাগ করা। সাহস থাকলে পুনরায় ভোটে লড়াই করুন।” সেই চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করে রবিশঙ্করবাবুর বক্তব্য, “কংগ্রেস আগে পাঁচটি ওয়ার্ড থেকে প্রার্থী খুঁজুক। প্রার্থী দিতে পারলে আমরা পদত্যাগ করে ভোটে লড়তে প্রস্তুত।”
রবিশঙ্করবাবু-সহ ওই পাঁচ জন একুশে জুলাইয়ের সমাবেশে তৃণমূলে যোগ দেন। সে দিন রবিশঙ্করবাবু দাবি করেন, পরে শহরের বাকি কংগ্রেস কাউন্সিলরাও তৃণমূলে যাবেন। এ দিন বৈঠকে উপস্থিত ছয় কাউন্সিলর অবশ্য জানান, তাঁরা কংগ্রেস ছাড়ছেন না। ২২ নম্বর ওয়ার্ডের কংগ্রেস কাউন্সিলর বিষ্ণুবাহাদুর কামির কথায়, “রবিশঙ্কর পাণ্ডে শিক্ষা দিয়েছিলেন দলের সঙ্গে ‘গদ্দারি’ করা যাবে না। অথচ ওঁরাই গদ্দারি করে চলে গেলেন। কিন্তু আমরা থেকে গেলাম।” কংগ্রেসের শহর সভাপতি অমলবাবুও বলেন, “প্রচার করা হচ্ছে আমাদের বাকি কাউন্সিলররা চলে যাবেন। আজ প্রমাণ হয়ে গেল ছ’জন কাউন্সিলর আমাদের সঙ্গেই আছেন।”
এ দিনের বৈঠকে দলবদল করা কাউন্সিলর ভেঙ্কট রামনা রাওয়ের স্ত্রী রুনু মিশ্রের উপস্থিতি ছিল উল্লেখযোগ্য। রুনুদেবী বলেন, “কংগ্রেসের হাত ধরে আমার স্বামী জিতেছিলেন। আমি তখন থেকেই কংগ্রেসের হয়ে কাজ করেছি। উনি দলবদল করতে পারেন। কিন্তু আমি কংগ্রেসের হয়েই ওয়ার্ডে কাজ করব। ওঁকেও ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করব।”
এই দলবদল নিয়ে সরব বিজেপি। তাদের দাবি, ২০১৫ সালে পাঁচ কাউন্সিলর তৃণমূলে চলে যাওয়ায় ওয়ার্ডে গিয়ে বিজেপিকে ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানিয়েছিল কংগ্রেস। বিজেপির রাজ্য সাধারণ সম্পাদক তুষার মুখোপাধ্যায়ের মত, এ বার কংগ্রেসের উচিত ওই পাঁচ ওয়ার্ডে গিয়ে ক্ষমা চাওয়া। অমলবাবুও বলেন, “আমরা মানুষের কাছে যাব।”
রবিশঙ্করবাবু তৃণমূলে যাওয়ায় শাসক দলে গোষ্ঠী কোন্দল বাড়বে বলেও অনেকের ধারণা। অমলবাবু বলেন, “রবিশঙ্কর পাণ্ডে তৃণমূলে যোগ দেওয়ায় ওঁদের তিন থেকে চারজন নেতা হল।” একই সঙ্গে তৃণমূল ভাঙার ইঙ্গিত দিয়ে কংগ্রসের শহর সভাপতির বক্তব্য, “এই শহরে তৃণমূল ভাঙতে চলেছে। কংগ্রেস আরও শক্তিশালী হবে।” যদিও রবিশঙ্করবাবুর দাবি, “এই শহরে এ বার তৃণমূলের সকলে যাতে একসঙ্গে কাজ করে সেই চেষ্টা আমি করব।”