লক্ষ্মীপুজোর কেনাকাটা। ঘাটালের কুঠি বাজারে। ছবি: কৌশিক সাঁতরা।
সম্পদের দেবী লক্ষ্মীর আরাধনায় অগ্নিমূল্য বাজার। চড়া বাজারদরে নাভিশ্বাস মধ্যবিত্ত বাঙালির।
কয়েকটি বাদে প্রায় সব ফলের দামই একশো পার। প্রতি কিলোগ্রামে আপেলের দাম ১২০ টাকা, আঙুর ১২০ টাকা, শাঁখালু, পেয়ারা, ন্যাসপাতি ১০০ টাকা। প্রতিটি মুসুম্বি লেবু বিকোচ্ছে ১৫ টাকা দরে। খেজুর ৮০ টাকা, শশা ৪০ টাকা প্রতি কিলোগ্রাম।
দামের দৌড়ে পাল্লা দিচ্ছে শাকসব্জিও। কিলোগ্রাম প্রতি পটল ৪০ টাকা, বেগুন ৭০ টাকা, টোম্যাটো ৪০ টাকা, ঝিঙে ৫০ টাকা, বরবটি ৫০ টাকা, কুমড়ো ৩০ টাকা, গাজর ও পেঁপে ৫০ টাকা, করলা ৪০ টাকা। লক্ষ্মীপুজোর খিচুড়িতে ফুলকপি থাকবে না তা আবার হয় না কি। কিন্তু সেই ফুলকপিরই প্রতিটির দাম ৬০-৮০ টাকা। চন্দ্রমুখী আলু ২৬ টাকা, বিনস্ ১২০ টাকা, ক্যাপসিকাম ১০০ টাকা, কাঁচালঙ্কা ১০০ টাকা প্রতি কিলোগ্রাম।
আজ, শনিবার কোজাগরী লক্ষ্মীপুজো। তার আগে শুক্রবার চড়া বাজারদরে চিন্তার ভাঁজ গৃহস্থের কপালে। উৎপল মাইতি, গোপাল সেন, মিহির দাস, কৃষ্ণেন্দু মাইতিদের অভিযোগ, “এত দাম দিয়ে বাজার করে পুজো করা বেশ কঠিন। দিন কয়েক আগে দুর্গাপূজো গেল। সেই সময়েও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম যথেষ্ট চড়া ছিল। এ বার লক্ষ্মীপুজোর বাজার করতে গিয়েও নাভিশ্বাস উঠে গেল।”
ফল-সব্জির দাম এত বেশি কেন? দুর্গাচক কলোনি বাজার সমিতির সম্পাদক শঙ্কর মাইতি বলেন, “পুজোর আগে বাজারদর একটু চড়া হয়। তার মানে সবসময় এমন বাজারদর থাকবে সেটা ভাবা ঠিক নয়। ইতিমধ্যেই বিক্রেতাদের ন্যায্য মূল্যে ফল-শাকসব্জি বিক্রি করতে হবে বলেছি।” সিপিটি বাজার কমিটির সহ-সম্পাদক সঞ্জীব বেরা বলেন, ‘‘বাজার কমিটির পক্ষ থেকে দাম নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করেছি। কিন্তু বিক্রেতা যেমন দামে শাকসব্জি পাবে তার উপর লাভ রেখেই তো ক্রেতাকে বিক্রি করবে। তবে দাম বৃদ্ধির জন্য যে ক্রেতারা সমস্যায় পড়ছেন এটা ঠিক। বিষয়টি নিয়ে আমরা বৈঠক করেছি।”
ফস-সব্জির দাম চড়া মেদিনীপুরেও। মেদিনীপুরের ফল ব্যবসায়ী ভাস্কর রায়, গোপাল দাসেরা বলছেন, “গেল বারের থেকে এ বার দাম একটু বেড়েছে। পুজোর সময় ফলের চাহিদা থাকে। তাই দাম একটু বাড়েই।” সব্জির বাজারেও যেন আগুন! ২০- ২২ টাকার নীচে এক কিলোগ্রাম আলু মেলা ভার। বেগুনের দর ২০ টাকার আশপাশে ঘোরাফেরা করছে। ঢেঁড়শ ২০- ৩০ টাকা।
শুক্রবারই লক্ষ্মীপুজোর বাজার করতে বেরিয়ে ছিলেন মেদিনীপুরের বাসিন্দা অলোক দাস, রীতা দত্তরা। অলোকবাবুর কথায়, “সব্জি থেকে ফল- ফুল, সমস্ত কিছুর দামই তো চড়া! বাড়িতে অনেক দিন ধরেই পুজো হয়ে আসছে। পকেটের টাকা শেষ হয়ে যাচ্ছে, অথচ ব্যাগ ভরছে না!” রীতাদেবী বলেন, “পুজো তো বছরে একবারই। তাই সব কিছুই নিতে হচ্ছে। পরিমাণে একটু কম নিচ্ছি।”
(সহ প্রতিবেদন: বরুণ দে)