নাবালিকা বিয়ে রুখতে আর্জি পুরোহিতদের

নন্দীগ্রাম প্রশাসন সূত্রের খবর, প্রচার অভিযান, শিবির তৈরি করেও এলাকায় তেমন সচেতনতা বাড়েনি। দিনে দিনে বেড়েই চলেছে নাবালিকা বিয়ের সংখ্যা। এতে উদ্বিগ্ন স্থানীয় প্রশাসন।

Advertisement

আরিফ ইকবাল খান

হলদিয়া শেষ আপডেট: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০২:২১
Share:

যাঁর হাত দিয়ে সম্পন্ন হয় বিয়ে, তা থামাতে পারেন তিনিই! নাবালিকা বিয়ে রুখতে তাই এবার পুরোহিতদের দ্বারস্থ হচ্ছে নন্দীগ্রাম ব্লক প্রশাসন।

Advertisement

নন্দীগ্রাম প্রশাসন সূত্রের খবর, প্রচার অভিযান, শিবির তৈরি করেও এলাকায় তেমন সচেতনতা বাড়েনি। দিনে দিনে বেড়েই চলেছে নাবালিকা বিয়ের সংখ্যা। এতে উদ্বিগ্ন স্থানীয় প্রশাসন। এই সমস্যার সঙ্গে লড়তে সম্প্রতি বৈঠক করেন নন্দীগ্রাম-২ নম্বর ব্লকের ৬টি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রতিনিধি, চাইল্ড লাইন, চাইল্ড ব্লক ডেভলাপমেন্ট অফিসার-সহ স্থানীয় একটি আবাসিকের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিকেরা। বৈঠকের আলোচনায় উঠে আসে, নন্দীগ্রামের প্রাচীন রেয়াপাড়া শিব মন্দিরে প্রতি সোমবার একাধিক বিবাহ হয়। আর ওই বিয়েগুলির অধিকাংশ ক্ষেত্রেই পাত্রী নাবালিকা। তাই বৈঠকে ঠিক হয়েছে, এবার পুরোহিতদের সঙ্গে এ নিয়ে আলোচনা করা হবে। তাঁদের বোঝানো হবে, যাতে তাঁরা নাবালিকার বিয়ের কাজ সম্পন্ন না করেন। মন্দিরে বিয়ে হলেও পুরোহিতদের কাছে পাত্র-পাত্রীর বয়সের নথি জমা দিতে হবে। পাত্র-পাত্রী সাবালকে হলেই পুরোহিতেরা বিয়ে দিতে পারবেন।

নন্দীগ্রাম-২ ব্লকের বিডিও মহম্মদ ইকবাল বলেন, ‘‘মন্দিরের পুরোহিতদের নিয়ে বৈঠক করে বয়সের বিষয়ে সচেতন করা হবে। পাশাপাশি এলাকার ছ’টি বালিকা বিদ্যালয়েও প্রচার চলবে।’’ ইকবালবাবুর কথায়, ‘‘স্থানীয় অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদেরও কাজে লাগানো হবে। ইতিমধ্যেই আমরা চার নাবালিকার বিয়ে রুখে দিয়েছি।’’

Advertisement

পুরোহিতদের বোঝানো প্রসঙ্গে রেয়াপাড়া শিব মন্দির কমিটির কার্যকরী সভাপতি মহাবীর বাগ বলেন, ‘‘প্রশাসন এ ধরনের পদক্ষেপ করলে আমরা অবশ্যই তাতে সমর্থন করব। প্রশাসন নির্দেশ দিলেই আধার কার্ড বা বয়সের অন্য কোনও নথি চাড়া আমার মন্দিরে বিয়ে দেব না।’’ একই মত মন্দিরের প্রধান পুরোহিত দীনেশ চক্রবর্তীরও।

প্রশাসন সূত্রে খবর, স্কুলছুট নাবালিকাকে বিয়ে দেওয়ার প্রবণতা রয়েছে এলাকায়। স্থানীয় একটি আবাসিকের এক আধিকারিক সুব্রত কুমার মান্না বলেন, ‘‘আমরা দেখেছি স্কুলছুট মেয়েরাই বেশিরভাগ ক্ষেত্রে নাবালিকা বিবাহের শিকার হচ্ছে।’’ তাই এলাকার বিভিন্ন স্কুলে গিয়ে স্কুলছুট নাবালিকাদের হিসাব রাখতে উদ্যোগী হয়েছে প্রশাসন। ‘ভিলেজ লেবেল চাইল্ড প্রটেকশন টিম’কে এ নিয়ে প্রতি শনিবার রিপোর্ট দিতেও বলা হয়েছে। নন্দীগ্রাম-২ ব্লকের পঞ্চায়েত সমিতির সভানেত্রী মলিনা দাস বলেন, ‘‘স্কুলছুটের তালিকা করতে বৈঠক করেছি। তালিকা পেলেই আমরা কাউন্সিলিংয়ের কাজ শুরু করব।’’ আর বিডিও ইকবালবাবুর বক্তব্য, পঞ্চায়েতগুলি থেকে তথ্য পেলেই পুরোহিতদের সঙ্গে বৈঠক করবেন তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন