গাছেই বাঁচবে পুলওয়ামার শহিদদের বীরগাথা, ইচ্ছা শিক্ষকের

বৃহস্পতিবার কাশ্মীরের পুলওয়ামার অবন্তীপোরায় কনভয়ে আত্মঘাতী গাড়ি বোমা বিস্ফোরণে শহিদ হয়েছেন ৪২ জন সিআরপিফ জওয়ান।

Advertisement

দিগন্ত মান্না

পাঁশকুড়া শেষ আপডেট: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৩:২০
Share:

ছাত্রছাত্রীদের হাতে গাছের চারা তুলে দিচ্ছেন শিক্ষক। শুক্রবার। নিজস্ব চিত্র

৪১টি আম গাছের চারা। প্রত্যেকটিরই নাম রাখা হয়েছে ‘বিশেষ মানুষে’র নামে। এই ‘বিশেষ মানুষ’গুলি কোনও সাহিত্যিক, খেলোয়াড়, রাজনীতিবিদের মতো তথাকথিত জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব নন। সেগুলি আসলে কাশ্মীরের পুলওয়ামায় জঙ্গি হামলায় শহিদ সিআরপিএফ জওয়ানের নাম।

Advertisement

বৃহস্পতিবার কাশ্মীরের পুলওয়ামার অবন্তীপোরায় কনভয়ে আত্মঘাতী গাড়ি বোমা বিস্ফোরণে শহিদ হয়েছেন ৪২ জন সিআরপিফ জওয়ান। ঘটনা সামনে আসার পর দেশ-বিদেশ-সোশ্যাল মিডিয়ায় নিন্দার ঝড় উঠেছে। বিভিন্ন জায়গায় ওই শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে নানা ধরনের কর্মসূচি নিচ্ছে বিভিন্ন ব্যক্তি এবং সংগঠন। পাঁশকুড়ার কেশাপাট গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার মালিদা গ্রামের শিক্ষক প্রদীপ চক্রবর্তী শহিদদের শ্রদ্ধা জানাতে বেছে নিয়েছেন অভিনব এক পদ্ধতি। তাঁর ৪২ জন ছাত্রছাত্রীরা হাতে শুক্রবার প্রদীপ তুলে দেন ৪২টি আম গাছের চারা। প্রতিটি চারায় লেখা রয়েছে এক এক জন শহিদ জওয়ানের নাম।

প্রদীপ স্নাতকোত্তর পাস করে বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। পাশাপাশি টিউশনিও পড়ান। এলাকায় বিভিন্ন সমাজসেবা মূলক কাজের সঙ্গে যুক্ত তিনি। বৃহস্পতিবার ভারতীয় জওয়ানদের মৃত্যু সংবাদ শোনার পর বৃক্ষরোপণের মধ্য দিয়ে জওয়ানদের ‘বাঁচিয়ে রাখার’ কথা ভাবেন তিনি। এ দিন ৪২টি আম চারা কিনে আনেন প্রদীপ। প্রত্যেকটি চারার নীচে কাগজ দিয়ে শহিদ সেনার নাম লিখে দেন তিনি। তারপর সেগুলি তাঁর টিউশনের ৪২ জন উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর হাতে তুলে দেন। গাছগুলির সঠিক পরিচর্যার ব্যাপারেও ছাত্রছাত্রীদের পরামর্শ দেন তিনি। চারাগুলি লাগানোর পর সেগুলি পাশে জওয়ানদের নাম লেখার ‘নির্দেশ’ দেন তিনি।

Advertisement

হাসিমুখে স্যারের ‘নির্দেশ’ পালনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন পড়ুয়ারা। উচ্চমাধ্যমিক পরিক্ষার্থী মালা জানা বলে, ‘‘স্যার আজ আমাদের যে চারাগুলি দিলেন, সেগুলি এক একজন জওয়ানের পরিচয়ে বড় হবে। গাছগুলির পাশে আমরা জওয়ানদের নাম খোদাই করে দেব।’’ আর প্রদীপের কথায়, ‘‘যাঁরা দেশকে রক্ষা করতে গিয়ে প্রাণ দিলেন, তাঁরা তো অমর। এই গাছগুলি ভবিষ্যতে তাঁদের স্মৃতি বয়ে নিয়ে চলবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন