সেই যদি পশ্চিম মেদিনীপুরের আমলারাই ঝাড়গ্রাম চালাবেন তাহলে নতুন জেলা করে লাভটা কী হল— এমনই প্রশ্নই তুলছে বিরোধীদের।
জেলা সফরে গত সোমবার ঝাড়গ্রামে আসেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একাধিক কর্মসূচি সেরে বুধবার তিনি জেলা ছাড়েন। গত এপ্রিলে ঝাড়গ্রাম জেলা হয়েছিল। নতুন জেলা গঠনের পরে এটাই ছিল মুখ্যমন্ত্রীর প্রথম জেলা সফর। কিন্তু ঝাড়গ্রামের উন্নয়নের কাজে মুখ্যমন্ত্রী সন্তুষ্ট নন। পরিস্থিতি সামলাতে প্রশাসনিক বৈঠকের পরে অনগ্রসর শ্রেণিকল্যাণ মন্ত্রী চূড়ামণি মাহাতোকে তৃণমূলের ঝাড়গ্রাম জেলা সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। ভারপ্রাপ্ত জেলা সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয় পশ্চিম মেদিনীপুরের তৃণমূলের সভাপতি অজিত মাইতিকে। এখানেই থামেননি মুখ্যমন্ত্রী। সমান্তরাল ভাবে ঝাড়গ্রামের জেলাশাসক আর অর্জুনের মাথায় বসানো হয় পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক জগদীশপ্রসাদ মিনাকে। পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষকেও ঝাড়গ্রামের পরিস্থিতির উপর নজর রাখার কথা বলা হয়েছে।
এই রদবদলের পরে বৃহস্পতিবার ঝাড়গ্রামের উন্নয়নে বড়সড় প্রশাসনিক বৈঠকও হয়েছে। সেখানে দুই জেলার জেলাশাসক, সভাধিপতিরা হাজির ছিলেন। এই পরিস্থিতিকে সামনে রেখেই সরব হয়েছে বিরোধীরা। বিজেপির রাজ্য সম্পাদক তুষার মুখোপাধ্যায়ের বক্তব্য, “নতুন জেলা কেন হয়েছিল? উন্নয়নে গতি আনতে। কিন্তু ঝাড়গ্রামের উন্নয়নে এতটুকুও গতি আসেনি। আসলে নতুন জেলা হলে কেন্দ্র থেকে অনেক অর্থ আসে। তাই পরিকাঠামো ছাড়াই ঝাড়গ্রামকে নতুন জেলা করা হয়েছে।” একই যুক্তি দিচ্ছেন বাম নেতারাও। তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতি অবশ্য বলেন, “কেউ কেউ কুত্সা করছে। তবে লাভ হবে না। মানুষ তৃণমূলের সঙ্গেই আছেন।’’ গত কয়েক মাস ধরে ঝাড়গ্রামের আদিবাসীদের একাংশের মধ্যে ক্ষোভের চোরাস্রোত বইছে। আদিবাসীদের ক্ষোভকে কাজে লাগিয়ে জঙ্গলমহলকে অশান্ত করার চেষ্টা হচ্ছে বলেও প্রশাসনের আশঙ্কা। ঝাড়গ্রাম সফরে এসে মুখ্যমন্ত্রীকেও বলতে শোনা গিয়েছে, ‘জঙ্গলমহল খুব সেনসিটিভ। আমি কোনও অভিযোগ শুনতে চাই না।’