মন্দিরতলা শ্মশানে চলছে কাজ। — নিজস্ব চিত্র।
চারিদিকে ছড়িয়ে রয়েছে সৎকার হয়ে যাওয়া দেহের বিছানা। আগাছায় পরিপূর্ণ গোটা চত্বর। জীর্ণ শৌচাগারে নেই জলের ব্যবস্থাও। খড়্গপুর শহরের দীর্ঘদিনের পুরনো মন্দিরতলা শ্মশানঘাটের অবস্থা এমনই। সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ কমাতে সম্প্রতি শুরু হয়েছে শ্মশানঘাটের পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজ।
খড়্গপুরে ছোট-বড় মিলিয়ে ৭টি শ্মশান রয়েছে। এর মধ্যে মন্দিরতলা, আয়মা, মালঞ্চ ও সোনামুখী শ্মশান পুরসভার অধীনে রয়েছে। খরিদায় প্রায় দু’একর জমির উপর গড়ে ওঠা মন্দিরতলা শ্মশানে দিনে গড়ে পাঁচ-ছ’টি দেহ দাহ করা হয়। যদিও এই শ্মশানে পুর পরিষেবার লেশমাত্রও মেলে না বলে অভিযোগ।
শ্মশানের পিছন দিকে কোনও সীমানা প্রাচীর নেই। অভিযোগ, রাতের অন্ধকারে শ্মশান চত্বরে অসামাজিক কাজকর্ম চলে। শেড না থাকায় রোদে-জলে খোলা আকাশের নীচেই দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। আগাছা পরিষ্কার না করায় সাপের উপদ্রবও রয়েছে বলে অভিযোগ। অভিযোগ, শ্মশান সংলগ্ন পুকুরের জল ব্যবহারের অযোগ্য। এখানেই খড়্গপুরের প্রাক্তন সাংসদ নারায়ণ চৌবে, প্রাক্তন পুরপ্রধান ক্ষীতিশ চাকী, ফুটবলার সীতেশ দাস, কাউন্সিলর কমল কুণ্ডুর দেহ দাহ করা হয়। যদিও তাঁদের স্মরণে কোনও স্মৃতিসৌধ নেই এখানে। স্থানীয় বাসিন্দা সঞ্জু ভকতের অভিযোগ, “শ্মশানে বসার জায়গা নেই। বৃষ্টিতেই অপেক্ষা করতে হয়।”
সম্প্রতি শ্মশানে শৌচাগার, জল, বসার জায়গা তৈরি-সহ পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজ চলছে। শ্মশানের নতুন ছাউনিও তৈরি করা হচ্ছে। করা হবে পুরনো দু’টি ছাউনির সংরক্ষণও। আগামী ৭ অগস্ট নারায়ণ চৌবের মৃত্যুদিন। তাঁর স্মরণে তৈরি করা হচ্ছে বেদী। শ্মশানে নতুন
প্রবেশদ্বারও হবে।
পুরপ্রধান প্রদীপ সরকার বলেন, “মন্দিরতলা শ্মশানকে মডেল করে উন্নয়নের কাজ চলছে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আগেই এখানে আলোর বন্দোবস্ত করা হয়েছে। এ বার শ্মশানের চিত্র পুরো বদলাতে কাজ চলছে। নারায়ণ চৌবের মৃত্যুদিনে নতুন শ্মশানের উদ্বোধন করা হবে।”