ফাইল চিত্র।
গড়বেতাকে মহকুমার স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি নিয়ে মেদিনীপুরের ডিভিশনাল কমিশনার পি রমেশ কুমারের দ্বারস্থ হল গড়বেতা মহকুমা উদ্যোগ কমিটি। মঙ্গলবার কমিটির এক প্রতিনিধি দল মেদিনীপুরে ডিভিশনাল কমিশনারের অফিসে যায়। ছিলেন কমিটির সম্পাদক শ্যামলকুমার মহাপাত্র। সঙ্গে ছিলেন গড়বেতার বিধায়ক আশিস চক্রবর্তীও। ডিভিশনাল কমিশনারের কাছে নিজেদের দাবি জানায় কমিটি।
বিধায়ক আশিসবাবু বলেন, “গড়বেতা যে এক সময়ে মহকুমা ছিল, গড়বেতাকে যে মহকুমা করলে উন্নয়নের গতি আরও ত্বরান্বিত হবে, তা আমরা ওঁনাকে জানিয়েছি। কিছু তথ্য তুলে ধরেছি। উনি সব দিক খতিয়ে দেখে পদক্ষেপ করার আশ্বাস দিয়েছেন। আমরা খুশি।”
গড়বেতাকে মহকুমার স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি এই নতুন নয়। আগেও এই দাবি উঠেছে। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের কাছে এই দাবি জানানো হয়েছিল। পরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছেও এই দাবি জানানো হয়। অতীতের কথা তুলে ধরেই গড়বেতার মানুষ নতুন করে মহকুমার দাবি তোলেন। তৈরি হয় গড়বেতা মহকুমা উদ্যোগ কমিটি। কমিটির বক্তব্য, এক সময়ে গড়বেতা ‘মহকুমা’ ছিল। ১৫৯৫ সালের ‘বেঙ্গল ডিস্ট্রিক্ট গেজেটিয়ার্স’-এ এর উল্লেখ রয়েছে। এখানে উল্লেখ রয়েছে, খুব কম সময়ের মধ্যে গড়বেতা মহকুমার সদর দফতর ছিল। ২০০০ সালে ‘পশ্চিমবঙ্গ উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ’ যে সংসদ পরিচিত প্রকাশ করে তাতেও উল্লেখ রয়েছে গড়বেতা এক সময়ে মহকুমা ছিল। এতে লেখা রয়েছে, ‘১৮৭২ সালের পূর্বে ঘাটাল হুগলি জেলার জাহানাবাদ (আরামবাগ) মহকুমার সঙ্গে যুক্ত ছিল। ১৮৭২ সালে মেদিনীপুরের অধীন গড়বেতা মহকুমার অন্তর্গত হল। এবং ১৮৭৬ সালে ঘাটাল মহকুমা হিসেবে পরিচিত হল।’
এই কমিটির আরও বক্তব্য, গড়বেতা তিনটি ব্লকে বিভক্ত। যার এলাকা প্রায় ৮৯০ বর্গমিটার। জনসংখ্যা প্রায় সাড়ে ৫ লক্ষ। প্রায় সাড়ে ৯০০ মৌজা রয়েছে। কমিটির দাবি, চন্দ্রকোনা-২ এবং কেশপুর ব্লকের কিছুটা এর সঙ্গে যুক্ত করে একটি মহকুমা করা অতি যুক্তিসঙ্গত। মহকুমা হলে এলাকার উন্নতি হবে। হাসপাতাল মহকুমা হাসপাতালে উন্নীত হবে। বিভিন্ন অফিস হবে। স্থানীয়দের আর সামান্য কাজের জন্য দীর্ঘ সময় ব্যয় করে মেদিনীপুরে দৌড়তে হবে না। মঙ্গলবার সকালে মেদিনীপুরে আসে গড়বেতা মহকুমা উদ্যোগ কমিটির প্রতিনিধি দল।
গত বছরই মেদিনীপুর ডিভিশন তৈরি হয়েছে। এর আগে মেদিনীপুর বর্ধমান ডিভিশনের মধ্যে ছিল। ডিভিশন গড়ে ওঠার পরপরই মেদিনীপুরে ডিভিশনাল কমিশনারের অফিস গড়ে উঠেছে। গড়বেতার বিধায়ক আশিসবাবুকে সঙ্গে নিয়ে ডিভিশনাল কমিশনারের সঙ্গে দেখা করে প্রতিনিধি দলটি। কমিটির বক্তব্য, গড়বেতার মহকুমার স্বীকৃতি পাওয়া নিয়ে তারা আশাবাদী।