Elephant Attack

মুখ্যমন্ত্রীর সফরের আগে হাতির হানায় মৃত্যু, বিক্ষোভও

রবিবার রাতে সাইকেল চালিয়ে বাড়ি ফেরার পথে হাতির হামলার মুখে পড়েন বছর বিয়াল্লিশের গুরুচরণ মাহাতো। গুরুচরণের বাড়ি ঝাড়গ্রাম থানার গোলবান্ধি গ্রামে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

 ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৮:৩৪
Share:

বাঁদরভুলা বিট অফিসারকে ঘেরাও করে বিক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র।

কয়েক বছর আগে ঝাড়গ্রাম জেলায় প্রশাসনিক বৈঠকে হাতির উপদ্রব নিয়ে বনকর্তাদের বেজায় ধমক দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফের ঝাড়গ্রাম সফরে আসছেন মুখ্যমন্ত্রী। তার ঠিক আগে হাতির হানায় মৃত্যুর ঘটনা ঘটল ঝাড়গ্রাম জেলায়।

Advertisement

সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রীর জেলা সফরের সময়ে বন্যপ্রাণীর হানায় গ্রামাঞ্চলে প্রাণহানির ঘটনা আটকাতে সম্প্রতি নবান্ন থেকে বিশেষ ভাবে সতর্কও করা হয়েছে বন দফতরকে। তারপরেও প্রাণহানি আটকানো গেল না। উল্লেখ্য, চলতি আর্থিক বছরে ঝাড়গ্রাম জেলায় এই নিয়ে ৩০ জনের মৃত্যু হল। সম্প্রতি পশ্চিম মেদিনীপুর জেলাতেও হাতির হানায় দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। হাতির হানায় মৃতের পরিবারের লোকজন গত কয়েক বছরে ধরে চাকরিও পাচ্ছেন না। সব মিলিয়ে জঙ্গলমহলের দুই জেলাতেই হাতি নিয়ে ক্ষোভ বাড়ছে। অস্বস্তি বাড়ছে বন দফতরের।

রবিবার রাতে সাইকেল চালিয়ে বাড়ি ফেরার পথে হাতির হামলার মুখে পড়েন বছর বিয়াল্লিশের গুরুচরণ মাহাতো। গুরুচরণের বাড়ি ঝাড়গ্রাম থানার গোলবান্ধি গ্রামে। তিনি রাজমিস্ত্রির জোগাড়ের কাজ করতেন। বন দফতর সূত্রে খবর, রবিবার ঝাড়গ্রাম ডিভিশনের মানিকপাড়া রেঞ্জের বালিভাসা এলাকায় ৬টি হাতি ছিল। রবিবার রাতে রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ সাইকেল চালিয়ে বাড়ি ফেরার পথে গোলবান্ধি গ্রাম ঢোকার মুখে রাস্তায় হাতির সামনে পড়ে যান গুরুচরণ। হঠাৎ হাতির কাছে চলে আসায় সাইকেল ফেলে দৌড়াতে শুরু করেন তিনি। তাঁকে তাড়া করে হাতি। শুঁড়ে তুলে আছাড় মারে। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় ওই ব্যক্তির। খবর পেয়ে বন দফতরের লোকজন ঘটনাস্থলে এলে গ্রামবাসীরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। সোমবার ঝাড়গ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পুলিশ মর্গে মৃতদেহের ময়নাতদন্ত হয়।

Advertisement

মৃতের ছেলে রণিত মাহাতো বলেন, ‘‘বাবা প্রতিদিন একাই বাড়ি আসত। এলাকায় হাতি রয়েছে বাবা জানত না। তাই এত বড় দুর্ঘটনা ঘটে গেল।’’ চলতি আর্থিক বছরে ঝাড়গ্রাম জেলায় এই নিয়ে ৩০ জনের মৃত্যু হল।

অন্যদিকে, রবিবার রাতে ঝাড়গ্রাম রেঞ্জের শিরষি গ্রাম চাষ জমিতে পাঁচটি হাতি ঢোকে। আনাজ খেত তছনছ করে দেয় তারা। সোমবার সকাল ৮টা নাগাদ বাঁদরভুলার বিট অফিসার চিত্তরঞ্জন মাইতি ঘটনাস্থলে এলে তাঁকে ঘেরাও করে বিক্ষোভ হয়। স্থানীয় চাষি গদাধর মাহাতো, সুকুমার মাহাতোর ক্ষোভ, ‘‘আনাজ খেত সব তছনছ করে দিয়েছে হাতির দল। পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণও দিচ্ছে না বন দফতর। চাষিরা কীভাবে বাঁচবে?’’ ঘেরাওয়ের মুখে পড়ে তাড়াতাড়ি ক্ষতিপূরণ তাড়াতাড়ি দেওয়ার আশ্বাস দেন বিট অফিসার। ঘণ্টা তিনেক পর ঘেরাও মুক্ত হন তিনি।

বন দফতর সূত্রে খবর, সোমবার ঝাড়গ্রাম ডিভিশনে ৩৮টি, মেদিনীপুর ডিভিশনে ২৯টি, খড়্গপুর ডিভিশনে ৪১টি হাতি রয়েছে। ঝাড়গ্রামের ডিএফও পঙ্কজ সূর্যবংশী বলেন, ‘‘রবিবার রাত দশটা নাগাদ হাতির হানায় একজনের মৃত্যু হয়েছে। ক্ষতিপূরণ দেওয়া হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন