খলনায়ক কুয়াশাই

জাতীয় সড়কে পর পর দুর্ঘটনা, জখম ৬০

রামনগর থানার পুলিশ জানিয়েছে, ঝাড়গ্রাম থেকে আসা পর্যটকদের বাসের কয়েকজন তাদের জানিয়েছেন, ওই বাসের চালক মদ্যপ ছিলেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রামনগর ও কাঁথি শেষ আপডেট: ২৯ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৩:০২
Share:

দুর্ঘটনার পর হাবরা থেকে দিঘাগামী বাসের অবস্থা। —নিজস্ব চিত্র

জাতীয় সড়কে ফের দুর্ঘটনা। পর্যটনের মরসুমে দিঘা-নন্দকুমার ১১৬ বি জাতীয় সড়কে একই দিনে তিনটি দুর্ঘটনায় আহত হলেন অন্তত ৬০ জন। আহতদের মধ্যে রয়েছেন পর্যটক থেকে শুরু করে পুলিশকর্মীও।

Advertisement

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, প্রথম ঘটনাটি ঘটে শুক্রবার ভোর ৫টা ১০ মিনিট নাগাদ। ওই ঘটনায় দিঘা থেকে ধর্মতলাগামী একটি বাসের সঙ্গে পর্যটকদের একটি বাসের সংঘর্ষ ঘটে। পর্যটকদের বাসটি ঝাড়গ্রাম থেকে আসছিল। দু’টি বাসের ৩৫ জন যাত্রী আহত হন। ঘটনাস্থলের কাছেই রয়েছে রামনগর দমকল কেন্দ্র। দুর্ঘটনার পর দমকল কর্মীরা এসে উদ্ধার কাজে হাত লাগান। দমকলের গাড়ি করেই আহতদের দিঘা স্টেট জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখান থেকে পাঁচ যাত্রীকে কাঁথি মহকুমা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করেন চিকিৎসকেরা। ঝাড়গ্রামের খালশিউলির বাসিন্দা প্রিয়া মণ্ডল বলেন, ‘‘আমাদের বাসে প্রায় ৫৫ জন ছিলেন। ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। হঠাৎ প্রচণ্ড শব্দ ও বাসের ঝাঁকুনিতে ছিটকে পড়ি। আমার মাথায় এবং মুখে আঘাত লেগেছে।’’

রামনগর থানার পুলিশ জানিয়েছে, ঝাড়গ্রাম থেকে আসা পর্যটকদের বাসের কয়েকজন তাদের জানিয়েছেন, ওই বাসের চালক মদ্যপ ছিলেন। উদ্ধার করতে আসা দমকলকর্মী এ কে দে বলেন, “ঘটনার সময় এলাকায় ঘন কুয়াশা ছিল। তাছাড়া দুর্ঘটনাস্থলে একটি ছোট বাঁক রয়েছে। ওই দুই কারণেও দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।’’ দুর্ঘটনার জেরে যানজট হয়। ঘণ্টা তিনেকের চেষ্টায় পুলিশ যানজট নিয়ন্ত্রণে আনে।

Advertisement

দ্বিতীয় দুর্ঘটনাটি ঘটে পদ্মপুকুরিয়া গ্রামের কাছে কাঁথি বাইপাসে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, উত্তর ২৪ পরগনার হাবরা থেকে পর্যটকদের একটি বাস দিঘা যাচ্ছিল। তাতে ২০ জন আরোহী ছিলেন। ভোর সাড়ে ৫টা নাগাদ বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশের একটি বটগাছে ধাক্কা মারে। ঘটনায় ২০ জনই আহত হন। খবর পেয়ে কাঁথি থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে বাসিন্দাদের সহযোগিতায় পর্যটকদের উদ্ধার করে কাঁথি মহকুমা হাসপাতালে পাঠায়। জখমদের মধ্যে ছ’জনের আঘাত গুরুতর বলে জানা গিয়েছে। তাঁদের মধ্যে কয়েকজনকে কাঁথি হাসপাতাল থেকে কলকাতায় পাঠানো হয়। প্রাথমিকভাবে পুলিশের অনুমান, ঘন কুয়াশায় ওই দুর্ঘটনা ঘটেছে। পাশাপাশি বাসচালকের ঘুমিয়ে পড়ার বিষয়টিও তাঁরা উড়িয়ে দিচ্ছেন না।

আবার এ দিন বিকেলে মারিশদার তেলিপুকুরের কাছে ১১৬ বি জাতীয় সড়কেই পুলিশের একটি প্রিজন ভ্যানের সঙ্গে দিঘা-কলকাতা রুটের একটি বাসের ধাক্কা লাগে। ঘটনায় পুলিশ ভ্যানের চালক-সহ পাঁচ পুলিশকর্মী আহত হয়েছেন। তাঁরা কাঁথি মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। পুলিশ জানিয়েছে, আহতেরা হলেন প্রিজন ভ্যানের চালক অশোক সাঁতরা, অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব ইনস্পেক্টর সুপ্রিয় বাউল, কনস্টেবল উৎপল দুবে, সন্তু শীট, মনসারাম মণ্ডল এবং তাপস সর্দার। কর্মসূত্রে তমলুক থেকে প্রিজন ভ্যানে দিঘা যাচ্ছিলেন ওই পুলিশকর্মীরা। দুর্ঘটনাগ্রস্ত বাসেরও যাত্রীরা অল্পবিস্তর জখম হন। ঘটনার পর থেকেই বাসের চালক পলাতক। স্থানীয়দের অভিযোগ, বাসটি দ্রুতগতিতে ছিল। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, সেই কারণেই ধাক্কা লাগে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন