দু’টি দুর্ঘটনায় মৃত তিন, অবরুদ্ধ রাস্তা

দু’টি পৃথক দুর্ঘটনায় মৃত্যু হল এক মহিলা-সহ তিনজনের। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে দশটা নাগাদ ঘাটাল-চন্দ্রকোনা রাস্তায় ময়রাপুকুর সংলগ্ন তিন নম্বর চাতালে বালি বোঝাই লরি উল্টে দু’জনের মৃত্যু হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ঘাটাল     শেষ আপডেট: ১৯ নভেম্বর ২০১৬ ০১:১৪
Share:

ঘাটালে দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত দোকানঘর। ঘাটাল-চন্দ্রকোনা রাস্তায় যানজট (ইনসেটে) — কৌশিক সাঁতরা।

দু’টি পৃথক দুর্ঘটনায় মৃত্যু হল এক মহিলা-সহ তিনজনের। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে দশটা নাগাদ ঘাটাল-চন্দ্রকোনা রাস্তায় ময়রাপুকুর সংলগ্ন তিন নম্বর চাতালে বালি বোঝাই লরি উল্টে দু’জনের মৃত্যু হয়। শুক্রবার ভোরে মেদিনীপুর-রানিগঞ্জ ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কে চন্দ্রকোনা রোডের চৌমাথা মোড়ে দু’টি ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে মৃত্যু হয় এক খালাসির।

Advertisement

ঘাটালের তিন নম্বর চাতালের দুর্ঘটনায় মৃতদের নাম অর্চনা দোলই (২৮) ও রিন্টু শেখ (২২)। অর্চনাদেবীর বাড়ি ঘাটাল থানার অজবনগরে। পেশায় ঠিকা কর্মী রিন্টুর বাড়ি মুর্শিদাবাদ জেলার রানিতলা থানার ধজামাটি গ্রামে। গাড়ি উল্টে যাওয়ায় অবরুদ্ধ হয়ে যায় ঘাটাল-চন্দ্রকোনা রাস্তা। রাস্তায় সার দিয়ে দাঁড়িয়ে পড়ে অনেক বাস-গাড়ি। প্রায় ১২ ঘণ্টা পরে শুক্রবার সকাল ১০টা নাগাদ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।

সম্প্রতি ঘাটাল-চন্দ্রকোনা রাস্তা সম্প্রসারণের কাজ শুরু হয়েছে। রাস্তার ২৭টি পুরনো কালভার্ট ভেঙে নতুন করে তৈরি করার কাজ চলছে। তিন নম্বর চাতালের কাছে কালভার্টের কাজ শুরু হওয়ায় অস্থায়ী ভাবে একটি মাটির রাস্তা তৈরি করেছে পূর্ত দফতর। বৃহস্পতিবার থেকেই ওই মাটির রাস্তা দিয়ে গাড়ি চলাচল শুরু হয়েছে। অভিযোগ, অস্থায়ী মাটির রাস্তাটির মান খারাপ। তাই ওই রাস্তায় গাড়ি চলাচল শুরুর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ঘাটালগামী বালি বোঝাই লরিটি উল্টে যায়।

Advertisement

রাতেই জেসিবি মেশিন দিয়ে গাড়িটি রাস্তা থেকে সরিয়ে দেয় পুলিশ। তারপরেও পরপর আরও চারটি গাড়ির চাকা বসে যায় রাস্তায়। আর তার জেরেই অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে ওই সড়কটি। যদিও পূর্ত দফতরের সহকারী বাস্তুকার অমিত চৌধুরীর কথায়, ‘‘মোরাম-বোল্ডার দিয়েই রাস্তাটি তৈরি হয়েছে। লরিটি উল্টে যে অংশটি নষ্ট হয়ে গিয়েছে শুক্রবার দুপুরেই সেখানে সংস্কার করে দেওয়া হয়েছে।’’ তাঁর দাবি, ‘‘সরকারি নিয়ম মেনে পরীক্ষা করেই অস্থায়ী বাইপাস রাস্তা চালু করা হয়েছে।”

অজবনগরের বাসিন্দা অর্চনাদেবী তিন নম্বর চাতালে রাস্তার ধারেই ত্রিপল দিয়ে ঘেরা একটি ঘরে স্বামী, ছেলেমেয়ের সঙ্গে থাকেন। বীরেন্দ্রনাথবাবু বলেন, “লরিটি প্রথমে রাস্তায় বসে যায়। পরে ধীরে ধীরে উল্টে যায়। পরিস্থিতি খারাপ বুঝে চিৎকার শুরু করি। আমার স্ত্রী ও ওই ঠিকা কর্মী বেরতো পারেননি। বালির মধ্যে তাঁরা চাপা পড়ে যায়।”

পূর্ত দফতরের সহকারি বাস্তুকার অমিতবাবু বলেন, “দুর্ঘটনা এড়াতে ঠিকা সংস্থাটিকে কড়া নজর রাখার জন্য নির্দেশ দিয়েছি।” ঘাটালের মহকুমাশাসক পিনাকীরঞ্জন প্রধানও বলেন, “অতিরিক্ত পণ্য নিয়ে গাড়ি দেখলেই মামলা করা হচ্ছে। এ বার নজরদারি আরও বাড়ানো হবে।”

অন্য দিকে, চন্দ্রকোনা রোডের চৌমাথা মোড়ে দু’টি লরির সংঘর্ষে মইদুল শেখ (২৮) নামে এক খালাসির মৃত্যু হয়। তাঁর বাড়ি গড়বেতা থানার আঁধারনয়নে। পুলিশ সূত্রের খবর, এ দিন গোয়ালতোড় থেকে ঘাটালগামী বালি বোঝাই একটি লরিকে ধাক্কা মারে গড়বেতা থেকে মেদিনীপুরগামী অন্য একটি লরি। নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বালি বোঝাই লরিটি রাস্তার ধারে দোকানে গিয়ে ধাক্কা মারে। দোকানগুলির কেউ হতাহত হননি। যদিও লরির ধাক্কায় স্থানীয় একটি ওষুধ দোকান, মুদি, মনোহারি দোকান ও পান গুমটির ক্ষতি হয়েছে। যদিও বালি বোঝাই লরির খালাসির মৃত্যু হয়। পুলিশ লরি দু’টি আটক করেছে। লরি দু’টিরই চালক ও একজন খালাসি পলাতক।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন