Road Renovation

কে করবে রাস্তা, পর্ষদ ও পরিষদের টানাপড়েন

স্থানীয়দের বক্তব্য, ২০১৬ সালে সড়ক যোজনায় এই রাস্তাটি হওয়ার কথা ছিল। পরে দেখা যায় সেই রাস্তা হয়নি। 

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

লালগড় শেষ আপডেট: ০৭ এপ্রিল ২০২৩ ০৭:১৭
Share:

রাস্তা তৈরির দাবিতে লালগড়ের জামদায় পথ অবরোধ। নিজস্ব চিত্র

নতুন রাস্তা তৈরি করার কথা ছিল পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদের। চলছিল তোড়জোড়। তারই মধ্যে ওই রাস্তার একটা ছোট অংশের শিলান্যাস করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পথশ্রী প্রকল্পে রাস্তার ওই অংশটুকু করার কথা জেলা পরিষদের। কে করবে রাস্তা। পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদ নাকি জেলাপরিষদ তা নিয়েই তৈরি হয়েছে জটিলতা। আর সেই জটিলতার জেরে থমকে গিয়েছে রাস্তার কাজ।

Advertisement

লালগড় ব্লকের বেলাটিকরি অঞ্চলে ঘাগরা থেকে কাঁকড়িখাল পর্যন্ত রাস্তার পথশ্রীতে শিলান্যাস করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বসেছে রাস্তার বোর্ড। হয়েছে ঘটা করে অনুষ্ঠান। কিন্তু তারপর থমকে গিয়েছে রাস্তার কাজ। কারণ, প্রশাসন সূত্রের খবর, পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদের ওই রাস্তাটি তৈরি করার কথা। পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদ জেলা পরিষদকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছে, মোট তিন কিলোমিটার রাস্তা তারা তৈরি করবে। তার মধ্যেই রয়েছে ঘাগরা থেকে কাঁকড়িখাল পর্যন্ত ১.৭ কিলোমিটার রাস্তা। গ্রামবাসীরা চাইছেন মুখ্যমন্ত্রী রাস্তার যে অংশের শিলান্যাস করেছেন তা অবিলম্বে শেষ করা হোক। এই দাবিতে বৃহস্পতিবার সকাল ১১ টা থেকে লালগড় থানার জামদা সিদো-কানহো মোড়ে স্থানীয় মানুষজন রাস্তায় বাঁশ বেঁধে অবরোধ শুরু করেন। অবরোধের জেরে লালগড়-বিনপুর রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। সন্ধ্যা পর্যন্ত চলছে অবরোধ।

স্থানীয়দের বক্তব্য, ২০১৬ সালে সড়ক যোজনায় এই রাস্তাটি হওয়ার কথা ছিল। পরে দেখা যায় সেই রাস্তা হয়নি। তাই এ বার মুখ্যমন্ত্রী যেহেতু রাস্তার শিলান্যাস করেছেন , তাই গ্রামবাসীরা সেই সুযোগ হাতছাড়া করতে চাইছেন না। পথশ্রীতে রাস্তার তৈরির জন্য প্রশাসনের কাছে লিখিত ভাবে জানিয়েছেন গ্রামবাসীরা। স্থানীয় বাসিন্দা প্রদীপ বাস্কে, ধর্মেন্দ্র হেমব্রম, কল্যান হেমব্রম বলেন, ‘‘পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদ যে রাস্তা করবে তার কোনও টেন্ডার হয়নি। সেই কাগজপত্র আমাদের দেওয়া হয়নি। মুখের প্রতিশ্রুতি আমরা ভুলব না। মুখ্যমন্ত্রী রাস্তার শিলান্যাস করেছেন। তাই আগে এই রাস্তা হোক, পরে পশ্চিমাঞ্চল থেকে রাস্তা হবে।’’

Advertisement

একই রাস্তা কেন দু’দফতর তৈরি হবে? জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ শুভ্রা মাহাতো বলেন, ‘‘পথশ্রীতে যে ১৫৭টি রাস্তা শিলান্যাস হয়েছে তার তালিকা রাজ্য পঞ্চায়েতে ও গ্রামোন্নয়ন দফতর থেকে এসেছিল। সেই তালিকা অনুযায়ী রাস্তার টেন্ডার হয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রী শিলান্যাস করেছিলেন। জেলা পরিষদ থেকে ওয়ার্কঅর্ডার এজেন্সিকে দেওয়া হয়েছিল কাজ শুরু করার জন্য।’’ শুভ্রা আরও জানান, পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদ থেকে ওই রাস্তাটি তৈরি করবে ও টেন্ডার করেছে। পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদ থেকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছে ওই রাস্তার কাজ যাতে শুরু না হয়। তাই থমকে রয়েছে। তবে গ্রামবাসীরা বলছেন, পথশ্রীতে রাস্তা তৈরি না হলে বৃহত্তর আন্দোলন হবে। জেলা পরিষদের সভাধিপতি মাধবী বিশ্বাস বলেন, ‘‘আমরা গ্রামবাসীদের বিষয়টি বুঝিয়েছি। কিন্তু ওঁরা বুঝতে চাইছেন না। পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদ থেকে হলে লম্বা রাস্তাটি তৈরি হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন