মাওবাদী ঠেকাতে আসরে আরপিএফ

দক্ষিণ-পূর্ব রেলের মাওবাদী প্রভাবিত এলাকায় প্রতিটি গ্রাম সম্পর্কে খুঁটিনাটি তথ্য সংগ্রহ করবে আরপিএফ। পাশাপাশি, কেন্দ্র ও রাজ্য পুলিশের মতোই রেল সুরক্ষা বাহিনীর কর্মীরাও এ বার মাওবাদী প্রভাবিত গ্রামে গিয়ে গড়ে তুলবেন নিবিড় জনসংযোগ।

Advertisement

কিংশুক গুপ্ত

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ০৩ মার্চ ২০১৭ ০০:০০
Share:

প্রতীকী ছবি।

দক্ষিণ-পূর্ব রেলের মাওবাদী প্রভাবিত এলাকায় প্রতিটি গ্রাম সম্পর্কে খুঁটিনাটি তথ্য সংগ্রহ করবে আরপিএফ। পাশাপাশি, কেন্দ্র ও রাজ্য পুলিশের মতোই রেল সুরক্ষা বাহিনীর কর্মীরাও এ বার মাওবাদী প্রভাবিত গ্রামে গিয়ে গড়ে তুলবেন নিবিড় জনসংযোগ। দেখা যাবে তাঁদের মানবিক মুখ। দক্ষিণ-পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সঞ্জয় ঘোষ বলেন, “আরপিএফ কর্মীরা ওই এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে নিবিড় জনসংযোগ গড়ে তুলবেন। এ জন্য আরপিএফ কর্মীদের মানবিক হওয়ার বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।”

Advertisement

২০১১ সালে রাজ্যে পালাবদলের পরে নিহত হন মাওবাদী শীর্ষ নেতা কিষেনজি। তারপর থেকে একে একে মাওবাদী নেতা-নেত্রীরা আত্মসমর্পণ করে জীবনের মূলস্রোতে ফিরে এসেছেন। ওই সময় থেকেই এ রাজ্যে মাওবাদী সন্ত্রাস-নাশকতায় দাঁড়ি পড়ে গিয়েছে। রাজ্য পুলিশের পক্ষ থেকেও বারবার দাবি করা হয়েছে, পশ্চিমবঙ্গে মাওবাদীরা নেই। তবে ঝাড়খণ্ড সীমানায় তারা মাঝে মধ্যে উঁকিঝুঁকি মারার চেষ্টা করে। তবে পড়শি এ রাজ্যেও মাওবাদী দমন-অভিযানে সাফল্য মিলছে। সম্প্রতি ঝাড়খণ্ডে কিষেনজির ঘনিষ্ঠ এক মাওবাদী নেতাকে খতম করেছে সেখানকার পুলিশ। তা সত্ত্বেও ঝুঁকি নিতে রাজি নন দক্ষিণ-পূর্ব রেল কর্তৃপক্ষ। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদেরও ব্যাখ্যা, সাংগঠনিক ভাবে এখন মাওবাদীরা দুর্বল হয়ে গেলেও সুযোগ পেলেই তারা অস্তিত্ত্ব জানান দিতে মরিয়া চেষ্টা করতে পারে। সে ক্ষেত্রে সহজ নিশানা (সফ্ট টার্গেট) হল রেল।

পশ্চিমবঙ্গ, ঝাড়খণ্ড ও ওড়িশা জুড়ে বিস্তৃত দক্ষিণ পূর্ব রেলপথের প্রায় পাঁচশো কিলোমিটার এলাকায় রয়েছে মাওবাদী প্রভাবিত এলাকা। তার মধ্যে এ রাজ্যের সর্ডিহা, বাঁশতলা, গিধনি, গোদাপিয়াশাল, শালবনির মতো এলাকায় কয়েক বছর আগেও সক্রিয় ছিল মাওবাদীরা। এখানকার রেললাইন ও স্টেশনে নানা ভাবে নাশকতার চেষ্টাও হয়েছে। তাই রেলের নিরাপত্তার স্বার্থে নিজস্ব জনসংযোগ গড়ে তোলা জরুরি। এর ফলে, প্রতিটি আরপিএফ পোস্ট থেকে তাদের এলাকার রেল লাইনের পার্শ্ববর্তী গ্রামগুলির প্রতিটি পরিবারের খুঁটিনাটি তথ্য, যেমন— বাসিন্দারা কে, কী করেন, মোট জনসংখ্যা কত, গ্রামে বহিরাগত কারা আসেন প্রভৃতি খুঁটিনাটি তথ্য সংগ্রহ করা হবে। সেই তথ্যে ভরা ‘ভিলেজ-প্রোফাইল’ মজুত থাকবে রেল প্রশাসনের হাতে।

Advertisement

রেল সূত্রের খবর, মাওবাদী প্রভাবিত এলাকার প্রতিটি ট্রেনে যাত্রী নিরাপত্তার জন্য আরপিএফের ১২ জনের বাহিনী থাকে। তাঁরাও তথ্য সংগ্রহেরও কাজ করবেন। শালবনি, গোদাপিয়াশাল, পিয়ারডোবা, সর্ডিহা, ঝাড়গ্রাম, গিধনির মতো মাওবাদী প্রভাবিত এলাকার দশটি গুরুত্বপূর্ণ রেল স্টেশনে নজরদারি বাড়ানোর জন্য ১৬২টি সিসি ক্যামেরা বসানোর কাজ চলেছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন