অভাবকে হারিয়ে চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন দেখেন স়ঞ্জয়

কাঠ চেরাই কলে শ্রমিকের কাজ করে সারাদিনে সাকুল্যে আয় মাত্র ২০০ টাকা। পারিবারিক জমিজমা না থাকায় অন্যের জমিতে ভাগ চাষ করে কোন রকমে খাওয়ার জোগান চলে। পারিবারিক অর্থনৈতিক অবস্থা বুঝে স্কুলের শিক্ষকরা তাঁকে পড়িয়েছেন বিনে পয়সায়। এহেন পরিবারের ছেলে সঞ্জয় বর্মন এবার উচ্চ-মাধ্যমিক পরীক্ষায় ৪৭৭ নম্বর পেয়ে পেয়ে পাশ করেছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

তমলুক শেষ আপডেট: ০১ জুন ২০১৫ ০১:০২
Share:

সঞ্জয় বর্মন। —নিজস্ব চিত্র।

কাঠ চেরাই কলে শ্রমিকের কাজ করে সারাদিনে সাকুল্যে আয় মাত্র ২০০ টাকা। পারিবারিক জমিজমা না থাকায় অন্যের জমিতে ভাগ চাষ করে কোন রকমে খাওয়ার জোগান চলে। পারিবারিক অর্থনৈতিক অবস্থা বুঝে স্কুলের শিক্ষকরা তাঁকে পড়িয়েছেন বিনে পয়সায়। এহেন পরিবারের ছেলে সঞ্জয় বর্মন এবার উচ্চ-মাধ্যমিক পরীক্ষায় ৪৭৭ নম্বর পেয়ে পেয়ে পাশ করেছে।

Advertisement

দক্ষিণ ময়না হাইস্কুলের ছাত্র সঞ্জয় নিজের প্রিয় বিষয় জীববিদ্যায় পেয়েছে ৯৯ নম্বর। এছাড়াও বাংলায় ৯৩, ইংরাজিতে ৯০, পদার্থবিদ্যায় ৯৮, রসায়নে ৯৭ ও ঐচ্ছিক অঙ্কে পেয়েছে ৯০ নম্বর। শুধু উচ্চ-মাধ্যমিকে নয় মাধ্যমিকেও ৯৫.২৮ শতাংশ নম্বর পেয়ে সঞ্জয় পাশ করেছিল ওই একই স্কুল থেকে। সঞ্জয় বলেন, ‘‘শিক্ষকরা যেভাবে আমাকে পড়াশোনায় সাহায্য করেছেন সেজন্য তাঁদের কাছে কৃতজ্ঞ। আমি চিকিৎসক হতে চাই।’’ ক্রিকেটার বিরাট কোহলির ভক্ত সঞ্জয় অবসরে পড়তে ভালবাসেন সত্যজিতের ফেলুদা আর শেক্সপিয়রের উপন্যাস। কিন্তু বড় হয়ে ডাক্তার হওয়ার লক্ষ্য পূরণে সঞ্জয়ের অন্যতম বাধা পারিবারিক অর্থনৈতিক অবস্থা। বাবা শম্ভুনাথ বর্মন গ্রামের একটি কাঠ চেরাই কলে শ্রমিকের কাজ করেন। মা পূর্ণিমাদেবী গৃহবধূ। দুই ভাইয়ের মধ্যে বড় সঞ্জয়। ছোট ভাই সৌরভ এ বার মাধ্যমিক পাশ করেছে। দুই ছেলের উচ্চ-শিক্ষার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন শম্ভুনাথ ও পূর্ণিমাদেবী।

বড় ছেলে সঞ্জয়ের উচ্চ-মাধ্যমিকে ফলাফলে খুশি হলেও পরবর্তী পড়ার খরচ জোগা়ড় নিয়ে চিন্তায় পড়েছেন তাঁর বাবা-মা। পূর্ণিমাদেবী বলেন, ‘’এতদিন স্কুলের শিক্ষকরা ওকে সাহায্য করে এসেছেন। আমাদের পরিবারের যা রোজগার তাতে সংসার চালানোই দায়। এই অবস্থায় সঞ্জয়ের পড়ার কি হবে তা ভেবে কুল পাচ্ছি না।’’ সঞ্জয়ের এই সাফল্য নিয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষক তারাপদ ভৌমিক বলেন, ‘‘পারিবারিক অর্থনৈতিক প্রতিকূলতা কাটিয়ে সঞ্জয়ের এই সাফল্য আমাদের স্কুলের সবাইকে উজ্জীবিত করেছে। আশা করি, ওর ওর স্বপ্নপূরণ করুক।’’

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন