হাতির সঙ্গে নিজস্বী, হতে পারে হাজতবাস

নিজস্বীর নেশায় বিপদে পড়ার বহু নজির রয়েছে দেশে-বিদেশে। কখনও চলন্ত ট্রেনের সামনে ঘটছে দুর্ঘটনা. আর জঙ্গলমহলের জেলা ঝাড়গ্রামে হাতির সঙ্গে নিজস্বী তুলতে গিয়ে বিপদ ডেকে আনছেন কেউ কেউ। ২০১৫-র অক্টোবরে ঝাড়গ্রামের মানিকপাড়ার জঙ্গলে হাতির ছবি তুলতে গিয়ে মারা যান মেদিনীপুর শহরের তরুণ কাউন্সিলর কৌস্তুভ বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপরেও অত্যুৎসাহীদের ঠেকানো যায়নি।

Advertisement

কিংশুক গুপ্ত

ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ০৪ জুন ২০১৭ ০০:৫২
Share:

হাতির সঙ্গে নিজস্বী তুললেই হাজতবাস, সঙ্গে জরিমানাও। বিপদ এড়াতে এমন কড়া পদক্ষেপের পথে হাঁটছে ঝাড়গ্রাম বন বিভাগ।

Advertisement

নিজস্বীর নেশায় বিপদে পড়ার বহু নজির রয়েছে দেশে-বিদেশে। কখনও চলন্ত ট্রেনের সামনে ঘটছে দুর্ঘটনা. আর জঙ্গলমহলের জেলা ঝাড়গ্রামে হাতির সঙ্গে নিজস্বী তুলতে গিয়ে বিপদ ডেকে আনছেন কেউ কেউ। ২০১৫-র অক্টোবরে ঝাড়গ্রামের মানিকপাড়ার জঙ্গলে হাতির ছবি তুলতে গিয়ে মারা যান মেদিনীপুর শহরের তরুণ কাউন্সিলর কৌস্তুভ বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপরেও অত্যুৎসাহীদের ঠেকানো যায়নি।

নিজস্বী তুলতে গিয়ে বন্যপ্রাণীকে উত্যক্ত করলে কড়া শাস্তির আইন প্রণয়ন হয়েছে ২০১৫-য়। পরিস্থিতি দেখে এ বার সেই আইন প্রয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ঝাড়গ্রাম বন বিভাগ।
ঠিক হয়েছে, বন্যপ্রাণ আইন অনুযায়ী এ ক্ষেত্রে রেঞ্জ অফিসার, এডিএফও, ডিএফও এবং ঊর্ধ্বতন বন আধিকারিকরা মামলা রুজু করবেন এবং অভিযুক্তকে গ্রেফতারের বিশেষ ক্ষমতাও প্রয়োগ করতে পারবে বন দফতর। আদালতে অভিযোগ প্রমাণ হলে ৩ থেকে ৭ বছর জেল ও ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে। ঝাড়গ্রামের ভারপ্রাপ্ত ডিএফও রবীন্দ্রনাথ সাহা বলেন, “হাতির সঙ্গে নিজস্বী তোলা অত্যন্ত বিপজ্জনক। যিনি তুলছেন, তাঁর মৃত্যুর আশঙ্কা তো রয়েইছে। পাশাপাশি, তিনি বন্যপ্রাণ সংরক্ষণ আইন ভেঙে হাতিকে উত্যক্ত করছেন। তাই আমরা কড়া পদক্ষেপের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”

Advertisement

হাতিদের উত্যক্ত না করার বার্তা নিয়ে বন দফতরের ‘ঐরাবত’ গাড়িতে সচেতনতা প্রচার শুরু হয়েছে। কিন্তু তাতেও নিজস্বীর নেশায় লাগাম পরানো যাচ্ছে না। এক বনকর্মী জানালেন, বারণ করতে গেলে উল্টে প্রতিরোধের মুখে পড়তে হচ্ছে। এই মুহূর্তে ঝাড়গ্রামের গড় শালবনির জঙ্গলে রয়েছে গোটা পাঁচেক হাতি। ঝাড়গ্রাম শহর থেকে কিলোমিটার দশেক দূরে এই এলাকায় হাতি দেখতে রোজ লোকজন ভিড় করছে। ঢিল ছুড়ে হাতিদের উত্যক্তও করছে কেউ কেউ। আর চলছে বিপজ্জনক ভাবে হাতির কাছে গিয়ে নিজস্বী তোলা। মুহূর্তে সেই ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করা হচ্ছে, সঙ্গে সঙ্গে অজস্র ‘লাইক’। স্থানীয় জিতুশোল গ্রামের বাসিন্দা অজয় মাহাতো বললেন, “প্রতিদিনই হাতি দেখতে দূরদূরান্ত থেকে লোক আসছে। হাতির সঙ্গে কেউ কেউ মোবাইল ফোনে ছবিও তুলছে।”

জানা গিয়েছে, সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় হাতির সঙ্গে কয়েকজন যুবকের নিজস্বী দেখে টনক নড়ে বন দফতরের। তবে আইন প্রয়োগে কড়াকড়ি শুরু হলে বিপজ্জনক এই নেশা কমবে বলেই বন দফতরের আশা। বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যে কয়েকজনকে চিহ্নিত করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে শীঘ্রই আইনি পদক্ষেপ করা হবে। হাতির সঙ্গে নিজস্বী তুললে সম্ভাব্য শাস্তির কথা মাইকে প্রচারও শুরু হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন