ঠোকাঠুকি: বাজারের সরু রাস্তায় বাইক নিয়ে চলাচল করতে গিয়ে হামেশাই ধাক্কা খেতে হয়। —নিজস্ব চিত্র।
পার্কিংয়ের ব্যবস্থা নেই বাজারে। কখনও বাইক-সাইকেল রাখার জায়গা নিয়ে কথা কাটাকাটি আবার কখনও দু’টি গাড়ির ঠোকাঠুকি লেগে যাওয়ায় বেধে যাচ্ছে বচসা। খড়্গপুরের খরিদা বাজার, গোলবাজার, কৌশল্যা, ইন্দা বাজার, তালবাগিচা বাজার— সর্বত্র ছবিটা কমবেশি একই।
পার্কিংয়ের জায়গা না থাকায়, শহরের প্রতিটি বাজারে সাইকেল-বাইক নিয়ে কেনাকাটা করতে যান ক্রেতারা। ব্যস্ত সময়ে কয়েকশো লোক বাইক-সাইকেল নিয়ে বাজারে ঢোকায় যাতায়াতের পথ থাকে না। গাড়ির ধাক্কা লেগে অনেকে কম-বেশি আহতও হচ্ছেন। তারপরেও অবশ্য হুঁশ নেই পুরসভার।
গোলবাজার, খরিদাবাজারের পাশাপাশি ইন্দা, কৌশল্যা, তালবাগিচা, নিমপুরা বাজারেও বহু ক্রেতা কেনাকাটা করেন। সন্ধ্যায় গেট বাজারেও ভিড় হয় ভালই। শহরের অন্যতম বড় বাজার গোলবাজারে পার্কিংয়ের ব্যবস্থা নেই। এই বাজারটি শহরের রেল এলাকায় হওয়ায় দায় এড়িয়ে যায় পুরসভা।
সমস্যা সবচেয়ে বেশি শহরের খরিদা বাজারে। পুরসভা এলাকার ওই বাজারের বাইরে পার্কিংয়ের ব্যবস্থা নেই। বাজারে ঢোকার আগে খরিদা রোডে অনেকে বাইক-সাইকেল দাঁড় করিয়ে রাখায় যানজট হয়। মালঞ্চর বাসিন্দা এক ব্যক্তির অভিযোগ, “একসময় তো বর্তমান পুরপ্রধানও খরিদা বাজারে বাজার করতেন। তিনি তো সমস্যার কথা জানেন। কিন্তু কোনও হেলদোল নেই। উনি পুরপ্রধান হয়েছেন কিন্তু আমাদের ভোগান্তি রয়েই গিয়েছে।” খরিদা বাজারের চাল ব্যবসায়ী মহেশ কেশরওয়ানি বলেন, “ক্রেতারা পার্কিং করতে না পারায় বাজারে বাইক-সাইকেল নিয়ে ঢুকছে। আর ভুগতে হচ্ছে আমাদের। কারণ অনেকেই দোকানের সামনে বাইক রেখে চলে যাচ্ছে। বাজারের বাইরে নির্দিষ্ট পার্কিয়ের ব্যবস্থা করা উচিত।”
ইন্দা বাজারের প্রবেশপথে টাকার বিনিময়ে বাইক পার্কিংয়ের ব্যবস্থা রয়েছে। টাকা দিয়ে অনেকেই সেখানে বাইক রাখেন না বলে অভিযোগ। পরিবর্তে বাইক-সাইকেল নিয়েই বাজারে ঢোকেন। ইন্দার বাসিন্দা রনজিৎ জানার অভিযোগ, “ইন্দা বাজারে রাস্তার উপরেই টাকা নিয়ে বার্ক পার্কিং করে রাখা হয়। কিন্তু সরকারিভাবে তো পার্কিংয়ের ব্যবস্থা করা প্রয়োজন।”
কৌশল্যা বাজারে অবস্থা আরও খারাপ। ক্রেতারা যত্রতত্র বাইক-সাইকেল রাখায় সঙ্কীর্ণ হয়ে যাচ্ছে রাস্তা। বাজারের এক আলু বিক্রেতার অভিযোগ, “এই বাজার নিয়ে পুরসভার কোনও ভাবনাচিন্তাই নেই। পার্কিংয়ের বন্দোবস্ত না থাকলে ক্রেতারা কী করবেন! তাই ক্রেতারা সাইকেল নিয়ে বাজারে এলে আমরাও কিছু বলতে পারি না।” একই অবস্থা তালবাগিচা বাজারেও।
বাজারগুলিতে কেন পার্কিংয়ের ব্যবস্থা করছে না পুরসভা? খড়্গপুরের পুরপ্রধান প্রদীপ সরকার বলেন, “আগামীদিনে নিশ্চয় বাজারগুলির পার্কিং নিয়ে ভাবতে হবে। আমরা চিন্তাভাবনা করলেও জমির অভাবে পিছিয়ে যেতে হচ্ছে।”