খুচরোয় ‘দমবন্ধ’ চানাচুর বিক্রেতার

কেন্দ্রীয় সরকারের নোট বাতিলের সিদ্ধান্তের পরে খুচরোর উপরে জোর দিয়েছিলেন নন্দীগ্রামের ব্যবসায়ী দুলাল পাণ্ডে। সেই খুচরোই এখন তাঁর মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে!

Advertisement

কেশব মান্না

নন্দীগ্রাম শেষ আপডেট: ২৪ জুন ২০১৮ ০১:১৮
Share:

দুলাল পাণ্ডে। নিজস্ব চিত্র

কেন্দ্রীয় সরকারের নোট বাতিলের সিদ্ধান্তের পরে খুচরোর উপরে জোর দিয়েছিলেন নন্দীগ্রামের ব্যবসায়ী দুলাল পাণ্ডে। সেই খুচরোই এখন তাঁর মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে!

Advertisement

নন্দীগ্রাম-১ ব্লকের দেবীপুরের বাসিন্দা দুলালবাবু ঝুরিভাজা, চানাচুর, বিস্কুট বিক্রি করেন। সকাল হলেই ভ্যানে জিনিস চাপিয়ে তা দেবীপুর, গড় চক্রবেড়িয়া, রেয়াপাড়া, চণ্ডীপুর, নরঘাট, বাজকুল, ভগবানপুর এলাকায় বিক্রি করেন। এক টাকার ছোট কয়েন বা দু’টাকা নিয়ে যখন বিভিন্ন এলাকায় বিভ্রান্তি রয়েছে, তখন দুলালবাবু হাসি মুখেই সেই কয়েনের বদলে জিনিস বিক্রি করেন বলে স্থানীয়েরা জানিয়েছেন।

অরুণাংশু প্রধান নামে এক শিক্ষক বলেন, ‘‘প্রশাসন বার বার জানালেও জেলায় বিভিন্ন এলাকায় ছোট এক টাকার কয়েন অনেকে নিতে চান না। কিন্তু দুলালবাবুর কাছ থেকে যখনই কিছু কিনি, উনি নির্দ্বিধায় তা নিয়ে নেন।’’ আর এক এলাকাবাসী বলেন, ‘‘এক বার এক দুঃস্থ ব্যক্তি সব খুচরো পয়সা দিয়ে ওষুধ কিনতে গিয়েছিলেন। কিন্তু দোকানদার এত খুচরো নিতে রাজি হননি। দুলাল ওই খুচরো নিয়ে ওই ব্যক্তিকে ওষুধ কিনতে সাহায্য করেন।’’

Advertisement

নিজের ওই অভ্যাস প্রসঙ্গে দুলালবাবু বলেন, ‘‘ভেবেছিলাম নোট আবার যে কোনও দিন অচল হতে পারে। তাই খুচরো জমানো শুরু করেছিলাম। কিন্তু এখন এত খুচরো হয়ে গিয়েছে যে, কী করব ভাবতে পারছি না!’’ দুলালবাবু জানিয়েছেন, তাঁর কাছে লক্ষাধিক টাকার খুচরো জমে গিয়েছে। আর তা নিয়ে তিনি এখনই সমস্যায়।

দুলালবাবু জানিয়েছেন, তাঁর কোনও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নেই। ফলে খুচরো থেকে নোট সংগ্রহ করতে তিনি অসুবিধায় পড়েছেন। দুলালবাবুর কথায়, ‘‘কয়েকজন বেশ কিছু টাকা নিয়ে গিয়েছিলেন নগদ পাইয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে। এখন তাদের ভরসাতেই রয়েছি।’’ অনেকে বেশি পরিমাণ খুচরোর বদলে কম টাকা ফেরত দেওয়ার প্রস্তাবও দিচ্ছে বলে অভিযোগ তাঁর। আবার অনেকে তাঁকে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলার পরামর্শ দিয়েছেন।

দুলালের বিষয় শুনে নন্দীগ্রামের একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের শাখার আধিকারিক এ ব্যাপারে বলেন, ‘‘ওঁর কাছে যে পরিমাণ খুচরো রয়েছে, তা নোটে বদল করার ক্ষমতা এই মুহূর্তে এই শাখার নেই।’’ গোটা ব্যাপারে জেলার ‘লিড ব্যাঙ্কিং ম্যানেজার’ (এলডিএম) অসীম পন্ডিত বলেন, ‘‘খুচরো নিয়ে সারা জেলায় সমস্যা রয়েছে। তবে সব ব্যাঙ্ক আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠক করেছি। গ্রাহকেরা যাতে সমস্যায় না পড়েন, সে নিয়ে নজর রাখতে বলেছি। দুলালবাবু স্থানীয় ব্যাঙ্কে গিয়ে যোগযোগ করুক। ধাপে ধাপে খুচরো দিয়ে নোট করে নিতে পারবেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন