প্রতীকী ছবি
ব্যাঙ্ক থেকে টাকা তুলে সাইকেলে বাড়ি ফেরার পথে এক ব্যবসায়ীকে ভোজালির কোপ টাকার ব্যাগ ছিনিয়ে মোটর সাইকেলে চম্পট দিল একদল দুষ্কৃতী। দিনের বেলায় এ ভাবে দুষ্কৃতী হামলায় স্বাভাবিক ভাবে এলাকার মানুষজন রাস্তাঘাটে নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে আশঙ্কায়। বৃহস্পতিবার মালিজঙ্গল পাড়ায় তমলুক শহরে থানার অদূরেই এ ধরনের ঘটনা জনমনের সেই আশঙ্কাকে আরও জোরদার করেছে।
দেবাশিস বেরা নামে বছর পঞ্চান্নর ওই ব্যবসায়ীকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় স্থানীয় লোকজনই উদ্ধার করে তমলুক জেলা হাসপাতালে ভর্তি করান। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, ধারালো অস্ত্রের আঘাতে তাঁর মাথার একাংশ কেটে গিয়েছে। তমলুক থানার পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।
জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ভি সলোমন নেসাকুমার বলেন, ‘‘ব্যাঙ্ক থেকে টাকা তুলে ফেরার সময় এক ব্যবসায়ীর টাকা ছিনতাই হয়েছে। দুষ্কৃতীদের খোঁজে জোর তল্লাশি শুরু হয়েছে।’’ পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শহরের ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণচড়া শঙ্করআড়া এলাকায় থাকেন দেবাশিসবাবু।
নিমতলা এলাকায় তাঁর গাড়ি মেরামতির সরঞ্জাম বিক্রির দোকান আছে। এ দিন সকালে দেবাশিসবাবু হরির বাজারের কাছে তমলুক-পাঁশকুড়া রাজ্য সড়কের পাশে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে টাকা তুলতে এসেছিলেন। টাকা তোলার পরে সাইকেলের হাতলে টাকার ব্যাগ ঝুলিয়ে তিনি একাই মালিজঙ্গল পাড়া হয়ে রামকৃষ্ণ মিশনগামী রাস্তা ধরে ফিরছিলেন। মালিজঙ্গলপাড়াতেই বাড়ি রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অজয় মুখোপাধ্যায়ের। দেবাশিসবাবু বলেন, ‘‘সাইকেল চালিয়ে ফিরছিলাম। ঘড়িতে তখন বেলা সাড়ে ১১টা। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির কাছে আচমকাই একটি মোটর সাইকেলে জনা তিনেক যুবক আমার সাইকেলের একেবারে পিছনে চলে আসে।
তারপর কিছু বুঝে ওঠার আগেই ওরা আমার আমার মাথায় ভোজালি দিয়ে কোপ মারে। আঘাতের চোটে আমি সাইকেল থেকে পড়ে যাই। ওরাও সঙ্গে সঙ্গে বাইক থামিয়ে আমার টাকার ব্যাগটা ছিনিয়ে নিয়ে ফের মোটর সাইকেলে চেপে প্রচণ্ড জোরে রামকৃষ্ণ মিশনগামী রাস্তা ধরে পালিয়ে যায়।’’ তাঁর দাবি, ব্যাগে প্রায় ৫ লক্ষ টাকা ছিল। রক্তাক্ত অবস্থায় দেবাশিসবাবুকে কাতরাতে দেখে আশপাশ থেকে লোকজন এসে তাঁকে গাড়িতে তমলুক জেলা হাসপাতালে নিয়ে যান। হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়, ধারাল অস্ত্রের কোপ ছাড়াও রাস্তায় পড়ে যাওয়ার জন্য দেবাশিসবাবুর মাথার পিছনে-সামনে চোট লেগেছে। আঘাত লেগেছে হাতেও।
শহরে জনবহুল রাস্তায় দিনের বেলায় এ ভাবে দুষ্কৃতীদের বেপরোয়া হামলার ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে বাসিন্দাদের মধ্যে। গৃহবধূ প্রতিমা অধিকারী ও বৃদ্ধা সন্ধ্যা মান্না বলেন, ‘‘দীর্ঘদিন ধরে এখানে বাস করছি। এই রাস্তা দিয়েই হ্যামিল্টন এবং সান্ত্বনাময়ী হাইস্কুল ছাড়াও অন্য স্কুলের ছেলেমেয়েরা যাতায়াত করে। এমনটা আগে কোনওদিন ঘটেনি। কিন্তু যে ভাবে দুষ্কৃতীরা দিনের বেলাতেই অস্ত্র নিয়ে হামলা চালাল তাতে এখন থেকে রাস্তাঘাটে বেরোলে ভয় হওয়াই স্বাভাবিক।’’এমনকী পুলিশের টহলদারির দাবিও তুলেছেন অনেকে।