ডেঙ্গি রোধে পদক্ষেপ ঝাড়গ্রামে

সচেতন নন অনেকে, মত পুর সমীক্ষায়

পুরসভার কর্মী কম। তাই সমীক্ষার কাজ করছেন স্বাস্থ্যকর্মী, অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী ও স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা। গত ১ মে থেকে মশা-বাহিত রোগ প্রতিরোধে শহরের ১৮টি ওয়ার্ডে বাড়ি-বাড়ি সমীক্ষার কাজ শুরু হয়েছে। চলবে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত।

Advertisement

কিংশুক গুপ্ত

ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ১৪ জুলাই ২০১৭ ০০:০০
Share:

স্থায়ী সাফাই কর্মী বলতে আটজন। আর জনসংখ্যা প্রায় ৯০ হাজার। নাগরিকদের পুরপরিষেবা দেওযার ক্ষেত্রে এমন বৈষম্যে অরণ্যশহর ঝাড়গ্রামে মশার বিরুদ্ধে যুদ্ধে কার্যত হিমসিম অবস্থা পুর কর্তৃপক্ষের।

Advertisement

শহরে ওয়ার্ডের সংখ্যা ১৮টি। উপযুক্ত নিকাশি ব্যবস্থা গড়ে তোলা যায়নি শহরে। পানীয় জল প্রকল্পের জন্য মাটি খুঁড়ে পাইপ লাইন বসানোর কাজ সম্প্রতি শুরু হয়েছে। তাই নতুন নিকাশি নালা তৈরির কাজ আপাতত বন্ধ। পরিণামে বৃষ্টি হলেই বেশিরভাগ ওয়ার্ড জলমগ্ন হয়ে পড়ছে। নাগাড়ে বৃষ্টি হলে সমস্যাটা বাড়ে। শহরের আস্তাকুঁড়গুলো নিয়মিত পরিষ্কার করা হয় না বলে অভিযোগ। ফলে জঞ্জালের মধ্যে প্লাস্টিকের কৌটো, ডাবের খোলায় বৃষ্টির জল জমছে। সেই স্বচ্ছ জমা জলে মশার লার্ভা জন্মানোর আশঙ্কা উড়িয়ে দিচ্ছে না খোদ পুরসভা। গত কয়েক মাসে পুরসভার সমীক্ষক দল তিনশোরও বেশি জায়গায় মশার লার্ভা পেয়েছেন।

পুরসভার কর্মী কম। তাই সমীক্ষার কাজ করছেন স্বাস্থ্যকর্মী, অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী ও স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা। গত ১ মে থেকে মশা-বাহিত রোগ প্রতিরোধে শহরের ১৮টি ওয়ার্ডে বাড়ি-বাড়ি সমীক্ষার কাজ শুরু হয়েছে। চলবে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত।

Advertisement

পুরসভা সূত্রে দাবি, মে মাসে প্রথম দফার সমীক্ষায় ১৮টি ওয়ার্ডে ১৯ হাজার ৭৪৭টি চৌবাচ্চা, জলভর্তি পাত্র-সহ বিভিন্ন জলপূর্ণ আধার পরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে ২০৭টি জায়গায় মশার লার্ভা মিলেছিল। এরপর নিয়মিত স্বচ্ছ জমা জল পরিষ্কার এবং মশানাশক স্প্রে করার ফলে পরিস্থিতির অনেকটাই উন্নতি হয়েছে। জুন মাসে দু’টি পর্যায়ে ৩১ হাজার ৬২২টি জমা জলের জায়গা ও পাত্র পরীক্ষা করে ৪৫টি জায়গায় মশার লার্ভা মেলে। কিন্তু জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে মাত্র পাঁচ দিনে (৭-১১ জুলাই) ১৮টি ওয়ার্ডে ১৪ হাজার ৬৪টি পরিষ্কার জমা জলের জায়গা পরীক্ষা করে ৬৯টি জলাধার ও পাত্রে মশার লার্ভা পাওয়া গিয়েছে। সব ক্ষেত্রে মশা নাশক স্প্রে করা হয়েছে। পুর তথ্য অনুযায়ী, গত বছর বর্ষায় ঝাড়গ্রাম শহরে জ্বরে আক্রান্ত হন ৬২ জন। ডেঙ্গি ধরা পড়েছিল দু’জনের। এবার জুলাইয়ের দ্বিতীয় সপ্তাহেই শহরে জ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা ৪১। যদিও পুরসভা ও স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের দাবি, এখনও কারও ডেঙ্গি ধরা পড়েনি।

পুরসভা সূত্রের দাবি, এখনও পুরবাসীর একাংশকে সচেতন করা যাচ্ছে না। সমীক্ষা করতে গিয়ে সমীক্ষক দলের সদস্যরা দেখেছেন, অনেকেই মশারি ব্যবহার করেন না।

পুরকর্মীরা নোংরা পরিষ্কার করে মশানাশক স্প্রে করে যাওয়ার পরে ফের কিছু মানুষ চারপাশের পরিবেশ অপরিচ্ছন্ন করে তুলছেন। জল জমিয়ে রাখছেন। বিশেষত, বস্তি এলাকার মানুষ মশাবাহিত রোগ সম্পর্কে মোটেও সচেতন নন।

পুরসভার ভাইস চেয়ারপার্সন শিউলি সিংহ বলেন, “মশা-নিধন কর্মসূচি চলছে। জনসাধারণকে সচেতন করা হচ্ছে। জল জমিয়ে না রাখার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে। নিয়মিত জঞ্জাল পরিষ্কারের দিকে আমরা বিশেষ নজর দিচ্ছি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন