প্রতীকী ছবি।
কয়েক মাস আগেই মারা গিয়েছে দশ বছরের সন্তান। এখন নিজেই মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন হাসপাতালে। আর সেই লড়াইয়ের অর্থ আসবে কোথা থেকে, তা নিয়ে দিশেহারা তাঁর পরিবার।
রবিবার সকালে পাঁশকুড়ার দোকাণ্ডায় আত্মীয়দের পৌঁছে দিয়ে মোটরবাইকে করে বাড়ি ফিরছিলেন মঙ্গলদাঁড়ি গ্রামের বাসিন্দা উত্তম সামন্ত। ৬ নম্বর জাতীয় সড়কে ভেড়িবাঁধে রাস্তা পার হওয়ার সময় তাঁকে বাইক ধাক্কা মারেন উলুবেড়িয়ার বাসিন্দা অমিত সিংহ। ঘটনাস্থলেই মারা যান অমিত। গুরুতর আহত হন উত্তমবাবু। তিনি এখন কলকাতায় চিকিৎসাধীন। পরিবারের একমাত্র রোজগেরে সদস্যের এমন অবস্থায় চিন্তিত তাঁর পরিবার।
পেশায় বাস কন্ডাক্টর উত্তমের পরিবার সূত্রের খবর, তাঁর বাড়িতে রয়েছেন বিধবা মা এবং অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী। আট মাস আগে উত্তমবাবুর বছর দশেকের শিশু পুত্র থ্যালাসেমিয়ায় মারা যায়। ছেলের জন্য রক্ত কিনতে কিনতে কার্যত সর্বস্বান্ত হয়ে পড়েছিলেন। শেষের দিকে তিনি টাকার অভাবে আর রক্ত কিনতেও পারেননি বলে জানা গিয়েছে। এমন আর্থিক অনটনের পরিবারে উত্তমের চিকিৎসার অর্থ আসবে কী করে, সে নিয়ে দুশ্চিন্তায় সামন্ত পরিবার।
প্রাথমিকভাবে এগিয়ে এসেছেন উত্তমের আত্মীয়েরা। কিন্তু পরে প্রতিদিন ভেন্টিলেশনের বিপুল খরচ জোগাড় হবে কী ভাবে, জানেন না তাঁর অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী। উত্তমের প্রতিবেশী তাপস সামন্ত বলেন, ‘‘অত্যন্ত পরিশ্রমী মানুষ। বাসের কাজের পাশাপাশি চাষও করতেন। কিন্তু ও আহত হয়ে পড়ার পর কী ভাবে সংসার চলবে, সেটাই চিন্তার বিষয়।’’
এ দিকে, দুর্ঘটনার পর থেকে মাটির দাওয়ায় বসে হামেশাই ডুকরে কেঁদে উঠছেন উত্তমবাবুর মা সন্ধ্যা সামন্ত। বৃদ্ধা মায়ের এখন একটাই আর্তি, ‘‘ঈশ্বর, ছেলেটা যেন ভালয় ভালয় ঘরে ফিরে আসে।’’