প্রতীকী ছবি।
রাজ্যের মন্ত্রী। বাসিন্দা পূ্র্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়ার। কিন্তু তৃণমূল নেতা সৌমেন মহাপাত্র গত কয়েক বছর ধরে ছিলেন জেলার রাজনীতি থেকে শতহস্ত দূরে।
বুধবার তৃণমূলের জেলা সভাপতি হওয়ার ফলে পূ্র্ব মেদিনীপুরের রাজনীতিতে সৌমেনের ঘটল প্রত্যাবর্তন। আর ফিরেই জেলায় দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভার প্রস্তুতি বৈঠকে যোগ দিয়েছেন তিনি। রাজনৈতিক মহলের ব্যাখ্যা, তৃণমূলের জেলা সভাপতি পদ থেকে শিশির অধিকারীকে সারানোর ‘ক্ষতি’ যত দ্রুত সম্ভব পূরণ করার চেষ্টা করছেন পরিবেশ এবং জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের এই মন্ত্রী।
১৯৯৮ সালে তৃণমূলের জন্ম লগ্ন থেকেই দল করছেন অধ্যাপক সৌমেন। তখন তিনি ছিলেন তৃণমূলের অবিভক্ত মেদিনীপুর জেলার সভাপতি। ২০০০ সালে তিনি রাজ্য তৃণমূলের যুগ্ম সম্পাদক হয়েছিলেন। ২০০১ সালে অধুনালুপ্ত নন্দনপুর বিধানসভা থেকে কেন্দ্র থেকে জিতে প্রথমবারের বিধায়ক। পরে ২০১১ এবং ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে জিতে দুবারের জন্য মন্ত্রী।
দলীয় সূত্রের খবর, গত কয়েক বছরে নিজের জেলায় রাজনৈতিক পথ সুগম ছিল না সৌমেনের। দাবি, কাঁথির অধিকারের পরিবারের সঙ্গে তাঁর দূরত্ব তৈরি হয়। পরিস্থিতি এমন হয় যে, ২০১৬ সালে সৌমেনকে তমলুক বিধানসভা কেন্দ্র ছেড়ে পাশের জেলা পশ্চিম মেদিনীপুরের পিংলায় গিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হয়। সেই সময় থেকেই পূ্র্ব মেদিনীপুরের রাজনীতিত থেকে কার্যত দূরে সরেছিলেন সৌমেন।
এ দিকে, বুধবার প্রায় দু’দশক পরে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা তৃণমূলের সভাপতির পদে বদল হয়েছে। অধিকারীর পরিবারে ক্ষমতা খর্ব করে নতুন সভাপতি করা হয়েছে সৌমেনকে। অন্যদিকে, ডিসেম্বরে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন অধিকারী পরিবারের অন্যতম সদস্য শুভেন্দু। তাঁদের দেখে তৃণমূল ছেড়ে যখন নেতাদের বিজেপিতে যোগ দেওয়ার একটা ‘হিড়িক’ পড়েছে, সেই সময় দলকে অক্সিজেন দিতে এ দিন থেকেই ময়দানে নেমেন পড়েছেন সৌমেন।
আত্মবিশ্বাসী সৌমেন এ দিন বলেন, ‘‘রাজনীতিতে দলবদল যথারীতি চলতে থাকে। একে গুরুত্ব না দিয়েই আমাদের কাজ করে যেতে হবে। নেতার পরিবর্তন হলেও তৃণমূল সমর্থকদের পরিবর্তন হয়নি। রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনা করে দু-এক দিনের মধ্যে জেলায় দলের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হবে।’’
এ দিন সৌমেনকে শুভেচ্ছা জানাতে পাঁশকুড়ায় তাঁর বাড়িতে ছিল দলীয় কর্মী- সমর্থকদের ভিড়। পাঁশকুড়া শহরের ১০ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা হলেও এতদিন শহরে দলের নীতি নির্ণায়কের ভূমিকায় সে ভাবে পাওয়া যায়নি সৌমেনকে। এবার কি তাহলে তিনি পাঁশকুড়া নিয়ে আলাদা করে ভাববেন?
সৌমেনের জবাব, ‘‘নিশ্চয়। আগে তো ঘরটাকে গোছাতে হবে।’’