গতি বাড়বে, লাইন পরীক্ষায় ট্রেনের কামরায় বালির বস্তা

হাওড়া-টাটানগর শাখায় মে‌ল ও এক্সপ্রেস ট্রেনের সর্বোচ্চ গতি বাড়াতে চান দক্ষিণ-পূর্ব রেল কর্তৃপক্ষ। এখন ট্রেন ঘন্টায় সর্বোচ্চ ১১০ কিলোমিটার বেগে চলে। তা বাড়িয়ে ১৩০ কিমি করার পরিকল্পনা নিয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদদাতা

ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ২১ জানুয়ারি ২০১৯ ০১:১১
Share:

এই রেলপথের সহ্যশক্তি পরীক্ষা করা হবে। ফাইল চিত্র

ট্রেনের গতি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। কিন্তু তার আগে রেলপথ পরীক্ষা করতে হবে। দেখতে হবে, কতটা গতি সইতে পারে ট্রেনলাইন। আর সেই পরীক্ষা হবে ট্রেনের মধ্যে বালির বস্তা রেখে!

Advertisement

হাওড়া-টাটানগর শাখায় মে‌ল ও এক্সপ্রেস ট্রেনের সর্বোচ্চ গতি বাড়াতে চান দক্ষিণ-পূর্ব রেল কর্তৃপক্ষ। এখন ট্রেন ঘন্টায় সর্বোচ্চ ১১০ কিলোমিটার বেগে চলে। তা বাড়িয়ে ১৩০ কিমি করার পরিকল্পনা নিয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ। এই শাখার রেলপথ সেই গতিবেগ সহ্য করতে পারবে কিনা সেই সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষার পরেই মিলবে ছাড়পত্র।

আজ, সোমবার থেকে রেলের ট্র্যাক পরীক্ষার জন্য বিশেষ ট্রেনের ‘ট্রায়াল রান’ শুরু করবে। আগামী দু’সপ্তাহ ধরে এই শাখার বিভিন্ন স্টেশনের মধ্যে এই বিশেষ ট্রেন চালিয়ে লাইনে সহ্যশক্তি পরীক্ষা করে দেখা হবে। আর সেই বিশেষ ট্রেনেই মানুষের পরিবর্তে থাকবে নির্দিষ্ট ওজনের বালির বস্তা। পরীক্ষামূলক ট্রেনে বালির বস্তা কেন? রেলের এক কর্তার জবাব, ‘‘সর্বোচ্চ গতিবেগে পরীক্ষামূলক ট্রেন চালানোর সময় অঘটন এড়াতেই এমন সিদ্ধান্ত।’’ আর ট্রেনের গতিবেগ বাড়ানোর পরিকল্পনা সম্পর্কে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সঞ্জয় ঘোষ বলেন, ‘‘ভারতীয় রেলের ‘মিশন রফতার’ প্রকল্পের আওতায় যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্য ও যাত্রীদের সময়ে গন্তব্যে পৌঁছে দিতেই এই উদ্যোগ।’’ তিনি জানান, পরীক্ষামূলক ট্রেন চালানোর পরে ‘কমিশনার অফ রেলওয়ে সেফটি’-র প্রয়োজনীয় অনুমতি মিললে আগামী আর্থিক বছরে টাটা-হাওড়া শাখায় মেল ও এক্সপ্রেস ট্রেনের সর্বোচ্চ গতিবেগ বাড়বে।

Advertisement

দক্ষিণ-পূর্ব রেল সূত্রে খবর, প্রতি ঘন্টায় সর্বোচ্চ ১৩০ কিলোমিটার গতিবেগ ও সেই অনুসারে বহন ক্ষমতা সহ্য করার জন্য রেলের ট্র্যাক উন্নত করা হয়েছে। এরপর রেলের তরফে রেলওয়ে ডিজাইন অ্যান্ড সেফটি অর্গানাইজেশন (আরডিএসও)-কে জানানো হয়। আরডিএসও শংসাপত্র দিলে তবেই ১৩০ কিমি প্রতি ঘন্টায় ট্রে‌ন চালানোর ছাড়পত্র পাওয়া যাবে। আরডিএসও শংসাপত্র দেওয়ার আগে ট্র্যাকটি পরীক্ষা করবে। সে জন্যই পরীক্ষামূলক ভাবে সোমবার থেকে বালির বস্তা বোঝাই বিশেষ ট্রেন ওই গতিবেগে চালিয়ে দেখা হবে। বিভিন্ন পর্বে ওই পরীক্ষামূলক ট্রেন চালানো হবে ৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। বিভিন্ন স্টেশনের মাঝে ধাপে ধাপে বিশেষ ট্রেনটি চালিয়ে দেখা হবে। যেহেতু সবোর্চ্চ গতিবেগে ট্রেন চালানোর সঙ্গে যাত্রীবাহী ট্রেনের স্বার্থ জড়িয়ে রয়েছে, সে জন্য খালি ট্রেনে বালির বস্তা ভরে পরীক্ষামূলক ভাবে খুঁটিয়ে ট্র্যাক পরীক্ষা করা হবে। এই বিশেষ ট্রেন চলার সময় ট্র্যাক রেকর্ডিং কারও থাকবে।

পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে আরডিএসওর শংসাপত্রটি যাবে পরিবহণ মন্ত্রকের কমিশনার অফ রেলওয়ে সেফটি-র কাছে। সব কিছু ঠিকঠাক চললে আগামী ১ এপ্রিল সবোর্চ্চ ১৩০ কিমি প্রতি ঘন্টায় গতিবেগ কার্যকর হবে। এর ফলে সেকশন ক্যাপাসিটি বাড়বে। অর্থাৎ, তখন লোকাল ও মালগাড়িকে যেখানে এখানে থামানোর প্রয়োজন হবে না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন