সাহায্য: হাতির হানায় মৃতের পরিজনকে সহায়তা। নিজস্ব চিত্র
হাতির হানায় মৃতের পরিজনের হাতে সাহায্য তুলে দিতে গিয়েছিলেন বন দফতরের মেদিনীপুর ডিভিশনের ডিএফও রবীন্দ্রনাথ সাহা। শালবনির জঙ্গল লাগোয়া লক্ষ্মণপুর গ্রামে গিয়ে হাতির দাপটে স্থানীয়দের অসহায়তার কথা শুনলেন তিনি। গ্রামবাসীর দাবি মেনে লক্ষ্মণপুরে ‘এলিফ্যান্ট ডিটেকশন ওয়ার্নিং সিস্টেম’ বসানোর আশ্বাস দেন ডিএফও।
গত ৩ জুন সকালে শালবনির ভীমপুর অঞ্চলে জঙ্গল লাগোয়া লক্ষ্মণপুর গ্রামে বাড়ির সামনে হাতির হানায় মৃত্যু হয় পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পরিষদের সদস্য সনৎ মাহাতোর মা কুলুবানা মাহাতোর। তার আগে গত ফেব্রুয়ারি ও মার্চ মাসে এই গ্রামেই হাতির হানায় প্রাণ হারান শম্ভু মাহাতো ও লুকড়ি মাহাতো নামে আরও দু’জন। বৃহস্পতিবার সকালে কুলুবালা মাহাতোর বাড়ি যান ডিএফও রবীন্দ্রনাথবাবু। ক্ষতিপূরণ বাবদ সনৎবাবুর হাতে এক লক্ষ সাতাশি হাজার পাঁচশো টাকা তুলে দেন তিনি।
ডিএফওকে সামনে পেয়ে স্থানীয়রা তাঁদের সমস্যার কথা তুলে ধরেন। স্থানীয়দের দাবি, খাবারের খোঁজে হাতি প্রায়ই গ্রামে ঢুকে আসছে। জঙ্গলে যাওয়া দূর অস্ত, হাতির ভয়ে তাঁরা বাড়ি থেকে বেরোতে পারছেন না। এলাকার বাসিন্দাদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার দাবিও জানানো হয়।
সনৎবাবু বলেন, ‘‘বন দফতরের ক্ষতিপূরণের টাকা দ্রুত পেয়ে ভাল লাগছে। কিন্তু গ্রামবাসীরা হাতির ভয়ে বাড়ি থেকে বেরোতে পারছেন না। জঙ্গলে পাতা তুলতে যেতে পারছেন না। স্থানীয়দের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে হবে।’’ তাঁর কথায়, ‘‘আমরা গ্রামে যাতে নিরাপদে থাকতে পারি, সে জন্য ব্যবস্থা নিতে সরকারের কাছে আবেদন জানাব।’’
গ্রামবাসীর দাবি মেনে লক্ষ্মণপুর গ্রাম লাগোয়া জঙ্গলে সতর্কীকরণ ব্যবস্থা ও পাঁচটি সোলার লাইট বসানোর আশ্বাস দিয়েছে বন দফতর। বন দফতর সূত্রে খবর, ‘এলিফ্যান্ট ডিটেকশন ওয়ার্নিং সিস্টেম’-এ গ্রামের পাশে জঙ্গলে চার ফুট উচ্চতায় একটি বিশেষ ধরনের কেবল তার লাগানো থাকবে। সেই তারে টান পড়লেই অ্যালার্ম বাজতে শুরু করবে। জঙ্গল থেকে হাতি লোকালয়ে ঢোকার চেষ্টা করলে আগাম এই অ্যালার্ম বেজে উঠবে। ফলে গ্রামবাসী সতর্ক হওয়ার সুযোগ পাবে।
ডিএফও রবীন্দ্রনাথবাবু বলেন, ‘‘এক সপ্তাহের মধ্যে গ্রামে সোলার লাইট ও ওয়ার্নিং সিস্টেম বসানোর কাজ শুরু হবে।’’