ফাইল ছবি
পেট্রোপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের বিরোধিতায় দেশব্যাপী ধর্মঘটের ডাক দিয়েছিল বাম-কংগ্রেস। সেই ধর্মঘটে বিজেপির রাজ্য সভাপতির নির্বাচনী কেন্দ্রে প্রভাব পড়ল।
সোমবার সপ্তাহের শুরুতে রেলশহর খড়্গপুরে ভারত বন্ধে সাড়া পড়েছে। অধিকাংশ দোকানপাট বন্ধ ছিল। শহরের রাস্তাঘাটও ছিল অন্যদিনের তুলনায় ফাঁকা। চলেনি অধিকাংশ বাস-ট্রাক। অটো-টোটোর সংখ্যা ছিল কম। এমনকী, বেশ কয়েকটি রাষ্ট্রায়ত্ত, বেসরকারি ব্যাঙ্কও এ দিন বন্ধ ছিল। তবে ট্রেন চলেছে। সবমিলিয়ে গত কয়েক বছরের আর পাঁচটা বন্ধের তুলনায় এ বার প্রভাব পড়েছিল।
নিমপুরা ও বিদ্যাসাগর শিল্পতালুকে কারখানা খোলা থাকলেও শ্রমিক উপস্থিতিতে প্রভাব পড়েছে। সরকারি অফিস ছিল খোলা। অধিকাংশ স্কুল খোলা থাকলেও পড়ুয়ার উপস্থিতি ছিল কম। খড়্গপুর-মেদিনীপুর বাস যোগাযোগ ব্যবস্থা সচল রাখতে সরকারি বাস চালানো হয়েছে। তবে বাসস্ট্যান্ডে যাত্রী দেখা যায়নি। বাসস্ট্যান্ডে ফাঁকা অটো নিয়ে দাঁড়িয়ে নিমপুরা রুটের অটো চালক শেখ ইসরাফিল বলেন, “সকাল থেকে নিমপুরা রুটে যাত্রী পাইনি। তাই বেলা বাড়তে ইন্দা রুটে অটো চালাচ্ছি। কিন্তু এই রুটেও যাত্রী পাচ্ছিনা।”
খড়্গপুর ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের অধীনে থাকা ১৭০টি ট্রাক চলেনি। সংগঠনের সম্পাদক উজ্জ্বল দাস বলেন, “পেট্রোপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি হওয়ায় আমাদের ব্যবসায় তো প্রভাব পড়েছেই। তাই আমরা বনধে নৈতিক সমর্থন করেছি।”
যে রেলশহর খোদ বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের নির্বাচনী ক্ষেত্র সেখানে বন্ধের এই প্রভাব ঘিরে শুরু হয়েছে জল্পনা। সিপিএমের খড়্গপুর পশ্চিম এরিয়া কমিটির সম্পাদক মধুসূদন রায় বলেন, “বন্ধ সফল হয়েছে। আমরা কোথাও জোর করে দোকান বন্ধ করিনি। আসলে বিজেপি সরকারের প্রতি যে মোহভঙ্গ হয়েছে তা এই শহরের মানুষ বুঝিয়ে দিয়েছে।” আর কংগ্রেসের শহর সভাপতি অমল দাস বলেন, “এই শহরের মানুষ অনেক আশা নিয়ে বিজেপিকে বিধানসভায় জিতিয়েছিল। এখন তাঁরা বুঝেছে ভুল হয়েছিল। তাই বন্ধে মানুষ সাড়া দিয়েছে। আমরা তাই সফল।” তবে বিজেপি’র রাজ্য সাধারণ সম্পাদক তুষার মুখোপাধ্যায় বলেন, “মানুষ বুঝিয়ে দিয়েছে তাঁরা বিজেপির সঙ্গে রয়েছে। খড়্গপুরে ইন্দা, পুরাতনবাজারে দোকানপাট ও সরকারি অফিস খোলা ছিল। কয়েকটি জায়গায় অশান্তির আশঙ্কায় ব্যবসায়ীরা দোকান খোলেনি।” যদিও বন্ধকে গুরুত্ব না দিয়ে তৃণমূলের শহর সভাপতি রবিশঙ্কর পাণ্ডে বলেন, “মানুষের আস্থা অনেক আগেই হারিয়েছে বিজেপি। কিন্তু বন্ধে যে আংশিক প্রভাব পড়েছে তার পিছনে বিজেপি বা বন্ধ সমর্থনকারীদের ভূমিকা নেই।”