সংস্কার: নিজস্ব চিত্র।: নিজস্ব চিত্র।
অনুমোদন মিলেছিল ৩০ বছর আগে। তবু আজও প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে উন্নীত হতে পারেনি ময়না ব্লকের জায়গিরচক উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র। নেই কোনও চিকিৎসক। নার্স আর স্বাস্থ্যকর্মীরাই শিশুদের প্রতিষেধক খাওয়ান, পরামর্শ দেন প্রসূতি মায়েদের, চালান প্রাথমিক চিকিৎসাও। কিন্তু রাত বিরেতে তেমন অসুখ করলে ছুটতে হয় ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে।
ময়না ব্লকের গোকুলনগর পঞ্চায়েতে চণ্ডীয়া নদীর পূর্ব তীরে জায়গিরচক গ্রাম। নদীর ঠিক অপর প্রান্তে পশ্চিম মেদিনীপুরের পিংলা ব্লক। ময়না-মেদিনীপুর রাজ্য সড়কে ময়নার শেষপ্রান্ত বলাইপন্ডা বাজার থেকে প্রায় চার কিলোমিটার উত্তরে এই এলাকা থেকে ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্র প্রায় ১৪ কিলোমিটার দূরে। এলাকার বাসিন্দাদের চিকিৎসার সুবিধার জন্যই উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র গড়ার ব্যবস্থা নিয়েছিল স্বাস্থ্য দফতর, বছর ৪০ আগে। সে জন্য গ্রামের কয়েকটি পরিবার মিলে মোট ৬৬ ডেসিমল জমি দান করেছিলেন। সেখানেই গড়ে তোলা ছোট্ট একটি ঘরে ১৯৭৬ সালে শুরু হয়েছিল জায়গিরচক উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র। ১০ বছরের মধ্যেই সরকারি অনুমোদন মিলেছিল সেটিকে প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র করে তোলার। কিন্তু হয়নি।
এলাকায় গিয়ে দেখা যায় জরাজীর্ণ উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ঘরটিতে সংস্কার কাজ চলছে। আর পাশে দুর্গোৎসব কমিটির অফিস ঘরে উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র চলছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, গোকুলনগর, পাশের পরমানন্দপুর পঞ্চায়েতের মোট ২৬ টি গ্রাম ছাড়াও পাশের পিংলা ব্লকের প্রায় ২০-২২ টি গ্রামের বাসিন্দারা এখানে চিকিৎসার জন্য আসেন। এলাকার বাসিন্দারা গণস্বাক্ষর করে বিধায়কের কাছে আবেদন জানিয়েছিলেন। তাতেই লাভ হয়নি। ফলে হতাশ স্থানীয়রা।
এলাকার বাসিন্দা সুবল সিংহ, বনমালী সিংহ, গয়াপদ দাস, মানস মাইতি বলেন, ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যেতে অনেকটা সময় লেগে যায়। বর্ষাকালে খুব অসবিধায় পড়তে হয়। ওই গ্রামেরই বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত হাইস্কুল শিক্ষক দুর্গাপদ বল নিজেও জমি দান করেছিলেন উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রের জন্য। তিনি বলেন, ‘‘এতগুলো বছর কেটে গেল। কিন্তু আজও চিকিৎসক এল না। আমি নিজেও প্রশাসনের কাছে আবেদন করেছি।’’ যদিও ময়নার তৃণমূল বিধায়ক, চিকিৎসক সংগ্রাম দোলাই বলেন, ‘‘ওখানে প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র গড়তে জেলা ও রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের সঙ্গে কথা বলেছি। চিকিৎসক নিয়োগের চেষ্টাও চলছে।’’