রোগীরা মেঝেয়, অসন্তুষ্ট শুভেন্দু 

রবিবার রাতে শুরুতে বিধান ভবনের দোতলায় সার্জিক্যাল ওয়ার্ডে যান শুভেন্দু।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ১৫ অক্টোবর ২০১৯ ০০:২৪
Share:

রবিবার রাতে মেদিনীপুর মেডিক্যালে শুভেন্দু। নিজস্ব চিত্র

শয্যায় ঠাঁই নেই। রোগীরা সব মেঝেতেই সার দিয়ে শুয়ে। এই দৃশ্য দেখে অসন্তোষ চেপে রাখতে পারলেন না মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী।

Advertisement

কেশপুরের জখম দলীয় কর্মীদের দেখতে রবিবার রাতে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এসেছিলেন শুভেন্দু। শুভেন্দু যে আসছেন তা জানতেন না হাসপাতালের প্রায় কেউই। ফলে, হাসপাতাল অগোছালোই ছিল। অব্যবস্থা দেখে সোজা ফোনে পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক তথা হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান রশ্মি কমলের সঙ্গে কথা বলেন শুভেন্দু। জেলাশাসককে তাঁর পরামর্শ, শয্যা বাড়ানোর ব্যবস্থা করুন। সব শুনে মন্ত্রীকে আশ্বস্ত করেন জেলাশাসক।

রবিবার রাতে শুরুতে বিধান ভবনের দোতলায় সার্জিক্যাল ওয়ার্ডে যান শুভেন্দু। এখানে জখম তিন কর্মী ভর্তি ছিলেন। তিনজনের কারও শয্যা জোটেনি। তাঁরা মেঝেতেই ছিলেন। যা দেখে চরম অসন্তুষ্ট হন শুভেন্দু। শুভেন্দুর সঙ্গে ছিলেন জেলার পুলিশ সুপার দীনেশ কুমার। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানাচ্ছেন, ক্ষুব্ধ শুভেন্দু জানান তিনি জেলাশাসকের সঙ্গে কথা বলতে চান। কারণ, এই হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান জেলাশাসকই। তখন জেলা পুলিশ সুপার ফোনে ধরেন জেলাশাসককে। জেলা পুলিশ সুপারকে বলতে শোনা যায়, ‘‘ম্যাডাম, মিনিস্টার কথা বলবেন।’’ মুহূর্তে ফোন নিয়ে জেলাশাসককে শুভেন্দু বলেন, ‘‘আপনিই তো রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান। হাসপাতালটা একটু দেখুন। রোগীদের তো মেঝেতে থাকতে হচ্ছে।’’ জেলাশাসক মন্ত্রীকে বোঝানোর চেষ্টা করেন, শয্যার অভাব। তাই এই অবস্থা। তখন শুভেন্দু বলেন, ‘‘সমস্যার কথা আগেই জানাতে পারতেন। কিছু শয্যার ব্যবস্থা করে দেওয়া যেত।’’

Advertisement

পরে আরও একাধিক ওয়ার্ডে গিয়ে জখম দলীয় কর্মীদের সঙ্গে দেখা করেন শুভেন্দু। হাসপাতালের পরিবেশ দেখেও অসন্তুষ্ট হন তিনি। শুভেন্দু আসার খবর ততক্ষণে পৌঁছে গিয়েছে হাসপাতালের শীর্ষ কর্তাদের কাছে। খবর পেয়ে হাসপাতালে ছুটে আসেন ফেসিলিটি ম্যানেজার সঞ্জীব গোস্বামী। তিনি ওয়ার্ডে গিয়ে জখমদের চিকিৎসার ব্যাপারে খোঁজ নেন।

জেলাশাসক রশ্মি কমল বলেন, ‘‘আহতদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। অতিরিক্ত স্থান দেখে শয্যারও ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’’ আর মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সুপার তন্ময় পাঁজার বক্তব্য, ‘‘আমরা তো কোনও রোগীকেই ফেরাই না। চিকিৎসার ব্যবস্থা করি। এ ক্ষেত্রেও তাই হচ্ছে। আহতদের জন্য শয্যার ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছে।’’

বস্তুত, মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসা পরিষেবা নিয়ে নালিশের অন্ত নেই। ওই দিন শুভেন্দুর কাছেও ওই নালিশ আসে। কেশপুরের জখম এক তৃণমূল কর্মী জানান, তাঁর হাতে চোট রয়েছে। তা-ও তাঁকে ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়েছে। ছুটি নিয়ে হাসপাতাল ছাড়তে একপ্রকার বাধ্যই করা হয়েছে। যা শুনে ক্ষুব্ধ শুভেন্দুকে বলতে শোনা যায়, ‘‘মেদিনীপুরে এলে শুধু রেফার করে দেওয়া হয়। এটা চলতে পারে না।’’ অনেক রোগী যে মেঝেতে থাকেন তা মানছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হাসপাতালের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘শয্যার থেকে বেশি রোগী ভর্তি থাকে। তাই কাউকে কাউকে মেঝেতে থাকতে হয়।’’ তাঁর আশ্বাস, "শয্যা বাড়ানো নিয়ে এ বার রোগী কল্যাণ সমিতির বৈঠকে আলোচনা করা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন