মন্ত্রিসভা ঘোষণার পরে ফাঁকা বিজেপির জেলা অফিস। নিজস্ব চিত্র
টিভির পর্দায় তখন সবে দেখানো শুরু হয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান। প্রবল উৎসাহ নিয়ে তাতে চোখ রেখেছিলেন ঝাড়গ্রামের বিজেপি কর্মী-সমর্থকেরা। আশা ছিল, মোদীর মন্ত্রিসভায় ঠাঁই হবে তাঁদের স্থানীয় প্রতিনিধি কুনার হেমব্রমের। কিন্তু, সেই আশাভঙ্গ হতে বেশি সময় লাগেনি। মোদী সরকারের দ্বিতীয় মন্ত্রিসভায় জায়গা পাননি কুনার।
কুনার মন্ত্রী না হওয়ায় হতাশ বিজেপি কর্মীরা। অথচ নির্বাচনী প্রচারে ঝাড়গ্রামে এসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নির্মলা সীতারামন উন্নয়নের নানা প্রতিশ্রুতি দিয়ে গিয়েছিলেন। বরাবর ঝাড়গ্রাম লোকসভা আসনটি সিপিএমের দখলে ছিল। ২০১৪ সালে পালাবদল হয়। সাংসদ হন তৃণমূলের উমা সরেন। এবার তাঁর বদলে প্রার্থী হয়েছিলেন বিরবাহা। তাঁকে হারিয়ে জয়ী হওয়া আদিবাসী সমাজের প্রতিনিধি কুনারকে মন্ত্রী করা হলে আগামী বিধানসভা ভোটের আগে জেলায় তৃণমূলের উপর স্নায়ুর চাপ বাড়ানো যেত বলে মনে করছেন বিজেপি কর্মীরা-সমর্থকেরা।
ঝাড়গ্রাম শহরের এক বিজেপি কর্মী বলেন, ‘‘আমাদের ওয়ার্ডে অনেক টাকার আতসবাজি কেনা হয়েছিল। কয়েকটা ফাটানোর পর ভেবেছিলাম যখন শপথ গ্রহণের জন্য কুনারবাবুর নাম ঘোষণা করা হবে, তখন বাকিগুলি ফাটাবো। সেই সুযোগ আর পেলাম কই!’’ বিজেপি’র ঝাড়গ্রাম জেলা সভাপতি সুখময় শতপথী অবশ্য এসব কথার গুরুত্ব দিতে চাননি। তিনি বলেন, ‘‘মন্ত্রী না হয়েও এলাকার উন্নয়ন করা যায়। কুনার সংসদে নতুন। অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে কুনার ভাল জায়গায় যাবেন বলে আশা করছি।’’
কুনারের মন্ত্রী না হওয়ায় নতুন উদ্যমে আদিবাসী তাস খেলেছে তৃণমূল। তাদের দাবি, জঙ্গলমহলের আদিবাসী-মূলবাসীদের জন্য একমাত্র মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই ভাবেন। বিজেপি ভোটের রাজনীতি করে। তৃণমূলের ঝাড়গ্রাম জেলা আহ্বায়ক উজ্জ্বল দত্ত বলেন, ‘‘ভোটে যাই হোক, জঙ্গলমহলের মানুষ মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আছেন।’’
যাকে ঘিরে এত আলোচনা, সেই কুনার শুক্রবার ফিরছেন দিল্লি থেকে। ট্রেনে থেকে তিনি এ দিন বলেন, ‘‘দলীয় কর্মীদের একটা আবেগ রয়েছে ঠিকই। কিন্তু মন্ত্রী না হয়েও তো কাজ করা যায়। তাতেই নজর দেব।’’