খড়্গপুর টাউন হলের মাঠে সভায় সূর্যকান্ত মিশ্র। — নিজস্ব চিত্র।
বিজেপিকে নিয়ে আদৌ চিন্তিত নন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র। শুক্রবার খড়্গপুরের টাউন হল প্রাঙ্গণে এক নির্বাচনী প্রচার সভায় রাজ্যের বিরোধী দলনেতার কটাক্ষ, ‘‘খড়্গপুরে বিজেপি না কি লোকসভায় এক নম্বর হয়েছে। কিন্তু এক থেকে দুই তারপর তিন হতে কতক্ষণ?” তাঁর বক্তব্য, “পুরভোটে প্রার্থী নির্বাচন নিয়েই বিজেপির হাল দেখা গিয়েছে! বিজেপির জেলা সভাপতিরা বলছে খোদ দলের রাজ্য সভাপতি দুর্নীতি করেছে। আর ওঁকে বাঁচাতে মুখ্যমন্ত্রীর পুলিশ মাঝখানে দাঁড়িয়ে রয়েছে।” সভায় উপস্থিত ছিলেন সিপিআইয়ের রাজ্য সম্পাদক প্রবোধ পণ্ডা, সিপিআইয়ের জেলা সম্পাদক সন্তোষ রাণা, সহ-সম্পাদক বিপ্লব ভট্ট, সিপিএমের শহর জোনাল সম্পাদক অনিতবরণ মণ্ডল প্রমুখ।
এ দিন মুখ্যমন্ত্রীকে জেলে ঢোকানোর হুঁশিয়ারিও দেন সূর্যকান্তবাবু। তিনি বলেন, ‘‘আপনি (মুখ্যমন্ত্রী) কেন আমাদের ঘরে ঢোকানোর চেষ্টা করছেন? আমরা তো ঘরে ঢুকবই। তবে ভোট দিয়ে ঘরে ঢুকব। কারণ আমরা লড়াই করছি আপনাকে জেলে ঢোকাব বলে।” সিবিআইয়ের তৃণমূলের আয়-ব্যয়ের হিসেব চাওয়া প্রসঙ্গে তাঁর কটাক্ষ, “সিবিআই আপনাদের (তৃণমূল) নোটিস দিয়েছে দলের আয়-ব্যায়ের হিসেব দিতে। মুখ্যমন্ত্রী দিস্তা দিস্তা কাগজ পাঠাবেন বলেছিলেন। কিন্তু ২৪ ঘণ্টা যেতে না যেতেই কাগজ দিয়ে এসেছেন। তবে জানি না ওই কাগজে কী আছে!”
সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকের কটাক্ষ, “আপনি ক’দিন মুখ্যমন্ত্রী থাকবেন তা নিয়ে আমার চিন্তা হচ্ছে। তাই আপনি জয়ললিতার কাছে খোঁজ নিন, জেলে কী কী সুবিধা উনি পাচ্ছেন। অবশ্য আপনার মন্ত্রীর থেকেও আপনি খোঁজ নিতে পারেন।” এর পরেই বিজেপির সঙ্গে তৃণমূলের গোপন আঁতাতের অভিযোগ তুলে সূর্যকান্তবাবু বলেন, “এখন বিজেপি আপনার বন্ধু। পর্দার পিছনে বন্ধুত্ব আর ময়দানে লড়াই হচ্ছে।” তাঁর কথায়, “খড়্গপুর পুরসভা নির্বাচনে ফলাফল যা-ই হোক না কেন। সারা বাংলা জুড়ে লড়াই হবে।”
সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে কেন্দ্রীয় বাহিনী প্রসঙ্গে সূর্যকান্তবাবু বলেন, “কেন্দ্রীয় বাহিনী এলেও বা কি? লোকসভায় তো কেন্দ্রীয় বাহিনী এসেছিল। আদতে এখন বাহিনীকে তো চালায় রাজ্য প্রশাসন। নির্বাচন কমিশন, প্রশাসনের কাছে আমরা আগেও অভিযোগ জানিয়েছি, ভবিষ্যতেও জানাব। কিন্তু আমরা বিশ্বাস করি মানুষই ইতিহাস তৈরি করে।” খড়্গপুর পুরসভায় ক্ষমতায় থাকলেও কংগ্রেসকে অস্তিত্বহীন দল বলে কটাক্ষ করেন তিনি।
আসন্ন পুরভোটেও ভোট লুঠের আশঙ্কা প্রকাশ করে কর্মীদের উদ্দেশে সূর্যকান্তবাবু বলেন, ‘‘আমি জানি না, আপনাদের এখানে কেউ ভয় দেখাচ্ছে কি না। ভয় দেখালে বুঝবেন ওঁরা ভয় পেয়েছেন। এখন ওঁরা বলছে ভোটের দিন ২০-২০ ম্যাচ হবে। আমরা বলেছি আপনি ২০-২০ করুন বা ওয়ান-ডেই করুন করুন আমরা প্রস্তুত আছি।’’ ভোটের দিন দলের কর্মীদের বিভিন্ন এলাকায় জোটবদ্ধ হয়ে থাকার পরামর্শ দেন সূর্যকান্তবাবু।