গুজব বন্ধে প্রচারে পুলিশ

ছেলেধরা সন্দেহে মারে জখম পাঁচ

স্রেফ সন্দেহের বশে বার বার এমন ঘটনায় উদ্বিগ্ন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পুলিশ। গুজব ছড়ানো বন্ধ করতে গড়বেতা থানার পুলিশ এ দিন থেকেই মাইকে প্রচার শুরু করেছে। জেলা পুলিশের এক পদস্থ কর্তা বলেন, “কাউকে সন্দেহ হলে স্থানীয় থানায় খবর দিন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

গড়বেতা শেষ আপডেট: ০১ জুন ২০১৭ ০১:১৩
Share:

প্রচার: ঘটনার পর গড়বেতায় মাইক প্রচারে নেমেছে পুলিশ। নিজস্ব চিত্র

ফের ছেলেধরা সন্দেহে গুজব ছড়াল গড়বেতায়। মঙ্গলবার ও বুধবার চন্দ্রকোনা রোডের বলরামপুর ও গুহাইদহ এবং গড়বেতারই কাদড়ায় ছেলেধরা সন্দেহে মারধরে জখম হন পাঁচ যুবক। এঁদের মধ্যে দু’জন মানসিক ভারসাম্যহীনও রয়েছেন। খবর পেয়ে পুলিশ গেলে তাদের ঘিরে বিক্ষোভ দেখান গ্রামবাসীরা। পরে পুলিশ তাঁদের উদ্ধার করে। চারজনকে দ্বারিগেড়িয়া গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। প্রসঙ্গত, কিছু দিন আগে ঝাড়গ্রামে এবং গড়বেতার লেদাগামার ও গোয়ালতোড়ের লোখাবাঁধ এলাকাতেও ছেলেধরা সন্দেহে গুজব ছড়িয়েছিল।

Advertisement

স্রেফ সন্দেহের বশে বার বার এমন ঘটনায় উদ্বিগ্ন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পুলিশ। গুজব ছড়ানো বন্ধ করতে গড়বেতা থানার পুলিশ এ দিন থেকেই মাইকে প্রচার শুরু করেছে। জেলা পুলিশের এক পদস্থ কর্তা বলেন, “কাউকে সন্দেহ হলে স্থানীয় থানায় খবর দিন। কাউকে আটকে রেখে মারধর করবেন না। পুলিশ সতর্ক রয়েছে।” তিনি আরও জানান, এ বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে পঞ্চায়েতকে সঙ্গে নিয়ে শিবির করা হবে। বাড়ানো হবে পুলিশি টহল। জেলা সভাধিপতি উত্তরা সিংহ বলেন, “গুজব থেকে বার বার এ ধরনের ঘটনা ঘটছে। শিবির করে এ বিষয়ে মানুষকে সচতেন করা হবে।” পাশাপাশি পঞ্চায়েতগুলিকেও অবিলম্বে গ্রামে গ্রামে গুজব ছাড়ানো বন্ধে প্রচার শুরু করতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, মঙ্গলবার চন্দ্রকোনা রোডের বলরামপুরে একটি বেসরকারি মোবাইল সংস্থার দুই আধিকারিক সংস্থার টাওয়ার পরিদর্শনে একটি গ্রামে যান। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন স্থানীয় এক অটোচালক। গ্রামে গিয়ে ওই কর্তারা একটি ছেলেকে টাওয়ারটি কোথায় তা জানতে চান। দু’জন অপরিচিতকে এলাকায় দেখে ছেলেধরা সন্দেহে তাঁদের মারধর শুরু করে গ্রামের লোকজন। বাদ যাননি স্থানীয় অটোচালকও। ওই রাতেই গুহাইদহ গ্রামে এক মানসিক ভারসাম্যহীন যুবককে মারধর করা হয়। স্থানীয় সূত্রে খবর, গ্রামে ছেলেধরা ঢুকেছে বলে গুজব ছড়াতেই কয়েকশো মহিলা ও পুরুষ জড়ো হয়ে যান। মানসিক ভারসাম্যহীন ওই যুবককে রাস্তায় ফেলে বেধড়ক মারধর করা হয়। খবর পেয়ে চন্দ্রকোনা রোড ফাঁড়ি ও গড়বেতা থানার পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়। পরে চারজনকেই উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়।

Advertisement

চলতি মাসেই ঝাড়গ্রামের নয়াগ্রাম, বেলপাহাড়ি ও লালগড়ে ছেলেধরা সন্দেহে গুজব ছড়িয়েছিল। তার বিরুদ্ধে প্রশাসনের তরফে প্রচারও শুরু হয়েছে। কিন্তু তার পরেও ফের একই ঘটনায় নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন। জেলা পুলিশের এক কর্তার মতে, বাইরে থেকে কেউ ওই সব এলাকায় গেলে প্রথমে ভাষার সমস্যা হয়। তা থেকেই এ ধরনের ঘটনা ঘটছে। তবে এ বার য়ে কোনও গুজবে রাশ টানতে উদ্যোগী হয়েছে জেলা পুলিশ। বুধবার থেকে তা নিয়ে প্রচারেও নেমে পড়েছে তারা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন