তমলুক বিধানসভার প্রার্থী নির্বেদ রায়ের প্রচারে দিবাকর জানা (চিহ্নিত)। কাঁকটিয়া বাজারে পার্থপ্রতিম দাসের তোলা ছবি।
সেই ট্র্যাডিশন সমানে চলছে।
ভোটের আগে দলে ফেরানো হয়েছে ভাঙড়ের বহিষ্কৃত নেতা আরাবুল ইসলামকে। তিনি এখন দলের একনিষ্ঠ কর্মী। সেই ধারার নতুন সংযোজন শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকের প্রাক্তন তৃণমূল সভাপতি তথা জেলা পরিষদ সদস্য দিবাকর জানা।
মঙ্গলবার তমলুকের নিমতৌড়িতে জেলার সব বিধানসভার প্রার্থীদের নিয়ে দলীয় কর্মিভায় দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সীর উপস্থিতিতে শুভেন্দু অধিকারী বলেন দিবাকরবাবুকে দলে ফিরিয়ে নেওয়ার কথা জানান। তৃণমূলের ওই সভাতে দিবাকরবাবু হাজিরও ছিলেন। পরে সভামঞ্চে উঠে দলের রাজ্য সুব্রত বক্সীর পায়ে প্রণাম করেন দিবাকরবাবু। দলে ফেরার পরদিনই অর্থাৎ বুধবার শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকের কাঁকটিয়া বাজারে তমলুক বিধানসভার প্রার্থী নির্বেদ রায়ের সমর্থনে মিছিলের আয়োজন করেন দিবাকরবাবু।
দলবিরোধী কাজের অভিযোগে দিবাকরবাবুকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। তমলুকের বিদায়ী বিধায়ক তথা রাজ্যের জলসম্পদ মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্রের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে নিজের অনুগামীদের নিয়ে তমলুক শহরে প্রকাশ্যে মিছিল করেছিলেন দিবাকরবাবু। ওই ঘটনায় দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে আসার পাশাপাশি মন্ত্রী সৌমেনবাবুর সঙ্গে দিবাকরবাবুর বিরোধ চরমে ওঠে। রাজ্য নেতৃত্বের কাছে দিবাকরবাবুর বিরুদ্ধে নালিশ করেছিলেন সৌমেনবাবু। যার জেরেই গত বছর ৪ জুন দিবাকরবাবুকে দল থেকে বহিষ্কার করেন দলের রাজ্য নেতৃত্ব। কিন্তু দল থেকে বহিষ্কারের পাশাপাশি দলের ব্লক সভাপতির পদ থেকে অপসারণ করা হলেও দিবাকরবাবু দলের জেলা পরিষদ সদস্য ছিলেনই। দিবাকরবাবুর স্ত্রী তনুশ্রীদেবী শহিদ মাতঙ্গিনী পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি। শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকে তৃণমূল সভাপতি করা হয় মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্রকে ।
দলীয় ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দিবাকরবাবুকে বহিষ্কারের পরেও প্রকাশ্যে তৃণমূলের কর্মসূচিতে দেখা না গেলেও সৌমেনবাবুর বিরোধী গোষ্ঠীর তৃণমূলের একাধিক কর্মসূচিতে তাঁর ভূমিকা ছিল। এমনকি মেচেদায় এক দলীয় সভায় তাঁকে মঞ্চেও দেখা গিয়েছে। এ বার বিধানসভা নির্বাচনে সৌমেনবাবুকে তমলুক থেকে সরিয়ে পিংলা বিধানসভা কেন্দ্রে প্রার্থী করা হয়েছে। এরপরেই দিবাকরবাবুকে তৃণমূলে ফিরিয়ে নেওয়া হয়।
তবে সৌমেনবাবু সরতেই কি দলে ফেরানো হল দিবাকরকে? দিবাকরবাবুর কথায়, ‘‘দলের নেতৃত্ব আমাকে মৌখিকভাবে দল থেকে বহিষ্কারের কথা জানিয়েছিল। আমি তৃণমূলের সমর্থক হিসেবেই ছিলাম। দলের নেতৃত্ব ফের আমাক দলের হয়ে কাজ করতে বলেছে। তাই আমি দলের হয়ে কাজ শুরু করছি।’’ এ বিষয়ে সৌমেনবাবুকে ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।