দূরপাল্লার ট্রেনে একসঙ্গে অনেক কচিকাঁচাকে দেখে সন্দেহ হয় রেল পুলিশের। খড়্গপুর স্টেশনে ফলকনামা এক্সপ্রেস থেকে ৩৯ জন বালককে নামায় পুলিশ। খোঁজ করে পুলিশ জানতে পারে, সাত জন মাদ্রাসার শিক্ষক শিক্ষিকা ওই বালকদের মহারাষ্ট্রের নান্দের ও অন্ধ্রপ্রদেশের হায়দরাবাদের দু’টি মাদ্রাসায় পড়াশোনার জন্য নিয়ে যাচ্ছিলেন। পুলিশ সূত্রে খবর, শিক্ষকেরা ওই বালকদের অভিভাবকদের কোনও অনুমতিপত্র দেখাতে পারেননি। তাই ওই বালকদের চাইল্ড লাইনের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। বৈধ পরিচয়পত্র দেখানোয় শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ।
রেল পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার ৩৯ জন বালককে নিয়ে বিহারের আড়ারিয়া কোর্ট স্টেশন থেকে যোগবাণী-কলকাতা এক্সপ্রেসে কলকাতার উদ্দেশ্যে রওনা দেন সাত জন শিক্ষক-শিক্ষিকা। রবিবার ভোরে হাওড়ার পৌঁছন তাঁরা। হায়দরাবাদে যাওয়ার জন্য ফের এ দিনই হাওড়া থেকে ফলকনামা এক্সপ্রেসে ওঠেন। ৩৯ জন বালকের সকলেই বিহারের বাসিন্দা। তাদের ৩৭ জনের বাড়ি আড়ারিয়ায়। দু’জনের বাড়ি পূর্ণিয়ায়।
রেল পুলিশ সূত্রে খবর, ফলকনামা এক্সপ্রেস খড়্গপুর পৌঁছতে ট্রেনে এতজন কচিকাঁচা দেখে সন্দেহ হয় রেল পুলিশের। ট্রেন দাঁড় করিয়ে চলে জিজ্ঞাসাবাদ। সাত জন শিক্ষককেও আটক করা হয়। শিক্ষক জাহাঙ্গির আহমদের দাবি, “আমরা সাত-আট বছর ধরে এ ভাবেই গ্রামের বালকদের পড়াশোনা শেখাতে হায়দরাবাদে নিয়ে যাই। কোনও দিন এমন ঘটনা ঘটেনি। এ বার প্রথম আমাদের পুলিশ আটকাল। কারণ বুঝতে পারছি না।” পুলিশ সূত্রে খবর, তাঁদের সকলেরই বৈধ টিকিট রয়েছে। সাত জন শিক্ষক-শিক্ষিকা তাঁদের বৈধ পরিচয়পত্রও দেখিয়েছেন। তাই জিজ্ঞাবাদের পর শিক্ষকদের ছেড়ে দেওয়া হয়।
রেল পুলিশের দাবি, এ ভাবে নাবালকদের ট্রেনে নিয়ে যেতে গেলে অভিভাবকদের অনুমতিপত্র প্রয়োজন হয়। ওই শিক্ষকদের কাছে অভিভাবকদের স্বাক্ষর করা কোনও কাগজপত্র ছিল না। তাঁদের বাড়ির লোকেদের খবর দেওয়া হয়েছে। খড়্গপুর রেল পুলিশের আইসি শুভাশিস বণিক বলেন, “আটক শিক্ষকদের কাছে মাদ্রাসার কাজের প্রমাণ পত্র পেয়েছি। তাই ওনাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তাঁরা বালকদের অভিভাবকদের কোনও অনুমতিপত্র দেখাতে পারেননি। তাই ওই বালকদের চাইল্ড লাইনের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।”