Moyna BJP Worker's Death

‘ঠান্ডা করে ছাড়ব, দেখতে থাকুন’! ময়নায় স্থানীয় নেতাদের আশ্বাস দিয়ে অবরোধ তোলালেন শুভেন্দু

দুপুর ১টার সময় ময়নার স্থানীয় বিজেপির তরফে ওই পথ অবরোধ তুলে নেওয়া হয়। তবে বুধবার ময়নায় ১২ ঘণ্টা বন্‌ধের ডাকও দিয়েছেন নন্দীগ্রামের বিজেপি বিধায়ক।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ময়না শেষ আপডেট: ০২ মে ২০২৩ ১৩:৫৮
Share:

ময়নায় বিজেপি বুথ সভাপতিকে ‘খুনের’ প্রতিবাদে রাজ্য সড়ক অবরোধ করে অবস্থান বিক্ষোভে শামিল হয়েছিলেন পদ্মশিবিরের স্থানীয় নেতারা। ছবি: ফেসবুক।

ময়নায় বিজেপি বুথ সভাপতিকে ‘খুনের’ প্রতিবাদে রাজ্য সড়ক অবরোধ করে অবস্থান বিক্ষোভে শামিল হয়েছিলেন পদ্মশিবিরের স্থানীয় নেতারা। যার জেরে তৈরি হয়েছিল তীব্র যানজট। রাস্তায় প্রায় পাঁচ ঘণ্টা আটকে থাকায় নাজেহাল অবস্থা হয়েছিল যাত্রীদের। নিহতের পরিবারের সঙ্গে কথা বলতে ঘটনাস্থলে পৌঁছে দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে সেই অবরোধ তুলে নেওয়ার ব্যবস্থা করলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। দুপুর ১টার সময় ময়নার স্থানীয় বিজেপির তরফে ওই পথ অবরোধ তুলে নেওয়া হয়। তবে বুধবার ময়নায় ১২ ঘণ্টা বন্‌ধের ডাকও দিয়েছেন নন্দীগ্রামের বিজেপি বিধায়ক।

Advertisement

দলীয় নেতাকর্মীদের অনুরোধ জানিয়ে শুভেন্দু বলেন, ‘‘আপনারা ১টার সময় অবস্থান বিক্ষোভ তুলে নেবেন। অনেক গাড়ি আটকে রয়েছে। আগামী কাল আবার বন্‌ধ হবে। শান্তিপূর্ণ ভাবে বন্‌ধ করবেন। আইন কেউ হাতে তুলে নেবেন না।’’

একই সঙ্গে শুভেন্দু বলেন, ‘‘বুধবার ময়না এলাকায় বন্‌ধ হবে। তবে জরুরি পরিষেবা চালু থাকবে। পূর্ব মেদিনীপুরের একশো জায়গায় অবরোধ চলবে। আগামী পরশু দিন সিবিআই তদন্তের দাবিতে এবং বিজয়কৃষ্ণকে শ্রদ্ধা জানিয়ে কালো ব্যাজ পরে ১৫ হাজারের মিছিল হবে। বুধবারই হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে বিজয়কৃষ্ণের পরিবার। রাজ্য সরকারের হাসপাতালে ময়নাতদন্ত করতে দেব না। নন্দীগ্রাম-সহ বহু এলাকা ঠান্ডা করেছি। এখানেও ঠান্ডা করে ছাড়ব। শেষ দেখে ছাড়ব। দেখতে থাকুন।’’

Advertisement

বিজেপি বুথ সভাপতির মৃত্যুর জন্য তৃণমূল নেতা সৌমেন মহাপাত্র এবং পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার অমরনাথ কে-কে দায়ী করেছেন শুভেন্দু। তাঁর কথায়, ‘‘তৃণমূলের ক্ষমতা এখানে তলানিতে। ময়নার বাগচায় ক্ষমতা ফেরাতে মুখ্যমন্ত্রীর তিনটি পুলিশ এই পরিকল্পনা করেছে। অমরনাথ, হাসান এবং প্রাক্তন ওসি গোপাল। আর প্রকাশ্যে উস্কানি দিয়েছেন, সৌমেন, সংগ্রাম দোলুই, শেখ শাহজাহান, উত্তম বারিক, মনোরঞ্জন হাজারারা। আমরা পুলিশ, তৃণমূল নেতা এবং প্রত্যক্ষ দোষীদের শাস্তির দাবিতে মামলা করব।’’

প্রসঙ্গত, সোমবার রাতে বিজেপি বুথ কমিটির সভাপতি বিজয়কৃষ্ণ (৬০)-কে খুনের অভিযোগ ওঠে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। ময়নার বাকচা পঞ্চায়েতের গোরামহল এলাকায় ঘটনাটি ঘটে। যার জেরে এলাকা জুড়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। অভিযোগ, সোমবার বিজয়কৃষ্ণকে অপহরণ করা হয় এবং পরে তাঁকে খুন করা হয়। এ ছাড়াও সঞ্জয় তাঁতি নামে আরও এক বিজেপি কর্মীকে অপহরণ করার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। গোটা ঘটনার প্রতিবাদে সোমবার রাতভর বিজেপির নেতাকর্মীরা ময়না থানা ঘিরে বিক্ষোভ দেখান। মঙ্গলবার সকাল থেকে ময়না বাইপাসের ধারে তিন রাস্তার মোড়ে দলীয় পতাকা হাতে গেরুয়া শিবিরের স্থানীয় নেতারা লাগাতার অবস্থান বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছিলেন। বেলা বাড়তেই সেখানে ভিড় জমতে শুরু করে। তৃণমূল এবং পুলিশের বিরুদ্ধে মাইকিং করতেও দেখা যায় বিক্ষুব্ধদের। অবস্থান বিক্ষোভে বাধা দিতে গেলে পুলিশের সঙ্গে বচসাতেও জড়িয়ে পড়েন ময়নার বিজেপি বিধায়ক অশোক দিন্দা।

যদিও শাসকদল তৃণমূলের তরফ থেকে সব অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। ময়নার ঘটনা প্রসঙ্গে স্থানীয় তৃণমূল নেতা মনোরঞ্জন হাজরা বলেন, ‘‘কয়েক দিন আগে গোরামহল গ্রামের বাসিন্দা সরস্বতী মণ্ডলের বাড়িতে হামলা এবং ভাঙচুরের ঘটনায় ময়না থানায় অভিযোগ দায়ের হয়। সেই ঘটনার জেরেই সোমবার বিকেল নাগাদ বিজয়কৃষ্ণের সঙ্গে কয়েক জনের ঝামেলা বাধে। নিজেদের মধ্যে মারামারির ঘটনাতেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে। ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক। তবে এর পিছনে রাজনীতির কোনও যোগ নেই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন