উন্নয়নে আস্থা! সংশয় শুভেন্দুর বার্তাতেই

খড়্গপুর পুরসভায় তৃণমূল পরিচালিত বর্তমান বোর্ডের চতুর্থ বর্ষপূর্তির অনুষ্ঠান ছিল মঙ্গলবার। অনুষ্ঠানেই এ দিন প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন পরিবহণ মন্ত্রী শুভেন্দু।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

খড়্গপুর শেষ আপডেট: ০৫ জুন ২০১৯ ০০:০৯
Share:

কাছাকাছি: পুরপ্রধান প্রদীপ সরকারের সঙ্গে শুভেন্দু অধিকারী। নিজস্ব চিত্র

ভোটে বিপর্যয়ের পরে তাঁর উপর আস্থা রেখেছেন স্বয়ং নেত্রী। জঙ্গলমহল পুনরুদ্ধারের দায়িত্ব তাঁকে দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুভেন্দু অধিকারী মেদিনীপুরের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরেও বেড়াচ্ছেন। তবে উন্নয়ন অস্ত্রে মানুষের আস্থা ফেরানো আদৌ সম্ভব কিনা, সেই সংশয় উস্কে গেল শুভেন্দুর কথাতেই।

Advertisement

খড়্গপুর পুরসভায় তৃণমূল পরিচালিত বর্তমান বোর্ডের চতুর্থ বর্ষপূর্তির অনুষ্ঠান ছিল মঙ্গলবার। অনুষ্ঠানেই এ দিন প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন পরিবহণ মন্ত্রী শুভেন্দু। পরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বললেন, “ভোটাররা আগামী দিনে যদি কাজের ভিত্তিতে ভোট দেন, তবে তৃণমূল কংগ্রেস জিতবে। আর ভোটারেরা উন্নয়নকে মাথায় না রেখে যদি অন্য কিছু ভাবেন, তবে আমাদের কিছু বলার নেই।” তবে এই সংশয়ের মধ্যেও উন্নয়নের কথাই বলেছেন শুভেন্দু। মঞ্চে দাঁড়িয়ে বলছেন, “গণতন্ত্রিক ব্যবস্থাপনায় হার-জিত থাকেই। তবে আমার বিশ্বাস পুরসভার ভাল কাজ ও পুরসভা যে রাজনৈতিক মতাদর্শে এগিয়ে চলেছে তাতে আমরা পুনরায় মানুষের আস্থা ফেরাতে পারব।”

খড়্গপুর পুরসভা তৃণমূলের দখলে থাকলেও বিধানসভায় জিতেছে বিজেপি। এ বার লোকসভাতেও খড়্গপুর সদর বিধানসভা থেকে বড়সড় লিড পেয়ে মেদিনীপুর কেন্দ্রের সাংসদ হয়েছেন বিজেপি প্রার্থী দিলীপ ঘোষ।

Advertisement

উন্নয়ন সত্ত্বেও পুর এলাকায় দলের এমন খারাপ ফল কেন?

সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে শুভেন্দুর জবাব, “এক একটি নির্বাচনে এক এক রকম মানসিকতা ভোটারদের মধ্যে কাজ করে। যে কোনও কারণেই এখানে ভোটাররা বিজেপিকে সমর্থন করেছেন।” ভবিষ্যতে সব ভোট ব্যালটে করার দাবিও তুলেছেন তিনি। তবে রাজনৈতিক হিংসা বাড়তে থাকা প্রসঙ্গে শুভেন্দু বলেন, “আমরা চাইলে এর ১০গুন সঙ্গে-সঙ্গে হিসাব নিকেশ চুকিয়ে ফেলতে পারি। কিন্তু একটি অংশের ভোটার ভেবেছিল তৃণমূল থেকে বিজেপি উন্নত। বিজেপি এলে শান্তি, সম্প্রীতি, উন্নয়ন অনেককিছু বর্ধিত হবে। সেটা ভোটারেরা একটু দেখুন।”

শহরের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের কৃতীদের এ দিন সংবর্ধিত করেন শুভেন্দু। সেই সঙ্গে মিশ্র সংস্কৃতির শহরে পুরসভার এ দিনের অনুষ্ঠানে ছিল জলসাও। পুরভবন চত্বরে চলা সেই জলসায় অন্য গানের সঙ্গে ছিল জমজমাট ভোজপুরী গানও। শিল্পী জানিয়েছেন, কাউন্সিলর জগদম্বা প্রসাদ গুপ্তর অনুরোধেই তিনি ওই গান গেয়েছেন। যদিও জগদম্বার দাবি, “আমি এমন কোনও অনুরোধ করিনি।” তবে পুরপ্রধান প্রদীপ সরকার বলেন, “মিশ্র সংস্কৃতির শহরে বাংলা, হিন্দির সঙ্গে ভোজপুরী গান বাজনোয় কী অপরাধ!”

তবে এই জলসা নিয়ে খোঁচা দিতে ছাড়ছে না বিরোধীরা। বিজেপির জেলা সহ-সভাপতি গৌতম ভট্টাচার্য বলেন, “পুরসভা উন্নয়নে ব্যর্থ। গরমে মানুষ জল পাচ্ছে না। তাই তো এ বার তৃণমূল এখানে ৪৫ হাজার ভোটে হেরেছে।’’ এই বিজেপি নেতার খোঁচা, ‘‘ভোটে হারের কষ্ট ভুলতেই মনে হচ্ছে তৃণমূলের পুরপ্রধান, কাউন্সিলরা গান-বাজনার আয়োজন করেছেন।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন