Cyclone Yaas

‘দুয়ারে ত্রাণ’, ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় সমীক্ষা

ইয়াসে রাজ্যের সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত জেলাগুলির অন্যতম পূর্ব মেদিনীপুর।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

তমলুক শেষ আপডেট: ৩১ মে ২০২১ ০৬:০৬
Share:

ফাইল চিত্র।

ঘূর্ণিঝড় ইয়াসে ক্ষতিগ্রস্তদের সরকারি ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য ‘দুয়ারে ত্রাণ’ কর্মসূচির ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার।

Advertisement

আমপানের ক্ষতিপূরণ নিয়ে ভূরি ভূরি দুর্নীতির অভিযোগের প্রেক্ষিতে এ বার প্রথম থেকে কড়া সতর্কতা অবলম্বনের নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তরা যাতে কোনওভাবে বঞ্চিত না হয় সেদিকে গুরুত্ব দেওয়ার পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি এমন লোকজন যাতে ক্ষতিপূরণের টাকা পায় সেদিকে কড়া নজরদারির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ঠিক হয়েছে এর জন্য ক্ষতিপূরণ দেওয়ার প্রক্রিয়ায় শুধু সরকারি আধিকারিকরাই থাকবেন। আগামী ৩ জুন থেকে ১৮ জুন পর্যন্ত ‘দুয়ারে ত্রাণ’ কর্মসূচিতে ক্ষতিগ্রস্তদের আবেদন জমা নেওয়ার জন্য প্রতিটি পঞ্চায়েত ও বিডিও অফিসে শিবির করা হবে।

ইয়াসে রাজ্যের সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত জেলাগুলির অন্যতম পূর্ব মেদিনীপুর। দিঘা-সহ সমুদ্র উপকূলবর্তী এলাকা ও রূপনারায়ণ, হুগলি, হলদি ও কেলেঘাইয়ের তীরবর্তী এলাকায় জলোচ্ছাসে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ‘দুয়ারে ত্রাণ’ কর্মসূচির বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে রবিবার জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজি অতিরিক্ত জেলাশাসক, মহকুমাশাসক, সমস্ত বিডিও, জেলা পরিষদের সহ-সভাধিপতি, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি, কর্মাধ্যক্ষ ও গ্রামপঞ্চায়েতের প্রধানদের নিয়ে ভার্চুয়াল বৈঠক করেন। জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, ক্ষতিগ্রস্ত বাসিন্দাদের আবেদন জমা নেওয়ার আগে রবি ও সোমবার, দু’দিন ধরে প্রতিটি ব্লকে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় ঘুরে বিভিন্ন ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে ছবি-সহ তথ্য সংগ্রহ করে জমা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ব্লক প্রশাসন ও গ্রামপঞ্চায়েত আধিকারিকদের নিয়ে তৈরি দল প্রতিটি পঞ্চায়েতে এই সমীক্ষা করবে। ক্ষতিগ্রস্ত ঘরবাড়ি, আনাজ চাষ, পান বরজ ও মাছচাষের ভেড়ি, পুকুর, রাস্তাঘাট সহ অন্যান্য যে সব ক্ষতি হয়েছে সেগুলির বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করবে সমীক্ষক দল। এখনও জেলার বহু এলাকা জলমগ্ন। যাতায়াতের সমস্যা হলে ওই সব এলাকায় ড্রোন উড়িয়ে ক্ষয়ক্ষতি খতিয়ে দেখা হবে। এর জন্য চারটি ড্রোনের ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর।

Advertisement

জেলাশাসক বৈঠকে সতর্ক করে দেন প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তরাই যেন সরকারি ক্ষতিপূরণ পায়। অনৈতিকভাবে কাউকে যাতে সরকারি ক্ষতিপূরণ পাইয়ে দেওয়ার চেষ্টা না করা হয়। ক্ষতিগ্রস্ত বাসিন্দারা সাদা কাগজে ক্ষতির বিবরণ ও ছবি সহ ক্ষতিপূরণের জন্য আবেদন করতে পারবেন। কোন ব্যক্তি বা পরিবার ঘরবাড়ি, আনাজ, পান বরজ, মাছচাষের ক্ষতিপূরণের জন্য পৃথক আবেদন জানাতে পারবেন। আগামী ৩ থেকে ১৮ জুন পর্যন্ত আবেদন জমা নেওয়ার পরে ১৯ জুন থেকে ৩০ জুন তার সরেজমিন তদন্ত করতে এলাকায় যাবে সরকারি তদন্তকারী দল। তদন্তের পরেই ক্ষতিগ্রস্তদের চূড়ান্ত তালিকা তৈরি হবে। তারপর ক্ষতিগ্রস্তদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সরাসরি ক্ষতিপূরণের অর্থ দেওয়া হবে।

জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজি বলেন, ‘‘দুয়ারে ত্রাণ কর্মসূচি কী ভাবে রূপায়িত হবে সে বিষয়ে জেলা পরিষদ. পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি, পঞ্চায়েতের প্রধান, বিভিন্ন দফতরের আধিকারিক, পুলিশ কর্তাদের নিয়ে বৈঠক হয়েছে। আমাদের মূল লক্ষ্য, প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তরা যেন সরকারি ক্ষতিপূরণ পাওয়া থেকে বঞ্চিত না হন। এনিয়ে যেন দুর্নীতির অভিযোগ না ওঠে। ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ক্ষেত্রে কোনএ রং বা অন্য কোনও বিষয় যেন না দেখা হয়।’’ তিনি জানান, যে সব এলাকায় পৌঁছানো যাচ্ছে না সেখানে ড্রোন উড়িয়ে এলাকার পরিস্থিতি নিয়ে তথ্য সংগ্ৰহ করা হচ্ছে।

সূত্রের খবর, হলদিয়া পুরসভায় ২ সদস্যের পরিদর্শন কমিটি তৈরি করা হয়েছে। পুর প্রধানের মনোনীত ১ জন সদস্য ও মহকুমা শাসকের মনোনীত একজন সদস্য প্রতিটি ওয়ার্ডে ঘুরে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি করবে। হলদিয়া পুরপ্রধান সুধাংশু মণ্ডল বলেন, ‘‘রবিবার থেকেই দুই সদস্যের পরিদর্শক দল ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় ঘুরে প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি করছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন