আলো জ্বলতে দেখে আর মাথার উপর পাখা ঘুরতে দেখে খুশিই হয়েছিল পড়ুয়ারা। সরকারি সাহায্যে বছর খানেক আগে প্রাথমিক স্কুলে বিদ্যুৎ আসে। আলো-পাখা কিনেও স্কুলগুলিকে সাহায্য করা হয়। যদিও বিদ্যুতের মিল মেটাতে গিয়ে এখন হিমশিম খাচ্ছেন পূর্ব মেদিনীপুর জেলার প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা।
বছর খানেক আগে জেলার প্রাথমিক স্কুলগুলিতে বিদ্যুৎ সংযোগ দিতে অর্থ বরাদ্দ করে সর্বশিক্ষা মিশন। স্কুলের শ্রেণিকক্ষ পিছু দু’টি করে টিউবলাইট ও পাখা লাগানোর জন্য সাহায্য করা হয়। সবমিলিয়ে স্কুল পিছু গড়ে ১২-২৫ হাজার টাকা বরাদ্দ করা হয়। বরাদ্দ অর্থে গত মার্চ মাসের মধ্যে জেলার ৩২৬২টি প্রাথমিক স্কুলে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়েছে। এরপর থেকে নিয়ম মতো তিন মাস অন্তর বিদ্যুতের বিলও আসছে। কিন্তু সেই বিলের টাকা কী ভাবে মেটানো হবে, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় প্রধান শিক্ষকেরা।
এগরা উত্তর চক্রের ষড়রং প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা মীনাক্ষী জানার অভিযোগ, ‘‘একবছর আগে স্কুলে বিদ্যুৎ সংযোগের ব্যবস্থা হয়েছে। যদিও বিদ্যুৎ বিলের খরচ মেটাব কী করে বুঝতে পারছি না।’’ বিলের টাকা দেওয়ার জন্য সরকারিভাবে অর্থ বরাদ্দের দাবি জানিয়ে ইতিমধ্যে জেলা সর্বশিক্ষা মিশন ও রাজ্য স্কুল শিক্ষা দফতরের কাছে দাবি জানিয়েছে শিক্ষক সংগঠনগুলি।
পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির জেলা সম্পাদক অরূপকুমার ভৌমিকের অভিযোগ, ‘‘স্কুলগুলিতে প্রতি তিন মাস অন্তর ৪০০-৬০০ টাকা বিল আসছে। কিন্তু ওই টাকা দেওয়ার ব্যবস্থা না থাকায় সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। জেলা সর্বশিক্ষা মিশনের কাছে অর্থ বরাদ্দের দাবি জানিয়েছি।’’
বঙ্গীয় প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির জেলা সম্পাদক সতীশ সাহুরও বক্তব্য, ‘‘প্রতি মাসে বিদ্যুৎ বিলের খরচ মেটাতে সরকারিভাবে অর্থের সংস্থান করা হয়নি। রাজ্য প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ ও স্কুল শিক্ষা দফতরের কাছে সংগঠনের তরফে স্মারকলিপি দিয়ে অর্থ সংস্থানের দাবি জানানো হয়েছিল। কিন্তু এখনও কোনও সুরাহা হয়নি।’’
সমস্যার কথা স্বীকার করে জেলা সর্বশিক্ষা মিশনের প্রকল্প আধিকারিক সুমন বিশ্বাস বলেন, ‘‘প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বিদ্যুৎ বিলের টাকা মেটানোর জন্য সরকারিভাবে এখনও অর্থ বরাদ্দের কোনও ব্যবস্থা নেই। এ নিয়ে স্কুলগুলির সমস্যার বিষয়টি আমাদের নজরে রয়েছে।’’ তিনি বলছেন, ‘‘স্কুল গ্রান্ট থেকে যাতে বিদ্যুৎ বিলের টাকা মেটানো যায়, সে বিষয়ে বলা হয়েছে। অর্থসংস্থান করতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।’’