শীত-সওয়ারি: প্রবল ঠান্ডা। তাই শাল মুড়ি দিয়ে বাবা-মায়ের সঙ্গে স্কুলের পথে খুদে। বৃহস্পতিবার মেদিনীপুরে। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল।
পৌষের শেষলগ্নে যেন দুরন্ত ফর্মে রয়েছে শীত। দু’দিন আগেই শহর মেদিনীপুরের তাপমাত্রা ৮ ডিগ্রিতে নেমেছিল। এ বার তা আরও নেমে হল ৭.৫ ডিগ্রি। পারদ-পতনে এটা গত কয়েক বছরের রেকর্ড। ২০১৬-র ডিসেম্বরে তাপমাত্রার পারদ একবার ৭.৮ ডিগ্রি ছুঁয়েছিল। অর্থাৎ, পরিসংখ্যান বলছে গত কয়েক বছরের মধ্যে বুধবারই ছিল মেদিনীপুরের শীতলতম দিন।
বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত গণিত বিভাগের মেটিওরোলজি পার্ক সূত্রে খবর, বুধবার মেদিনীপুর শহরের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৭.৫ ডিগ্রি। আর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ১৭.৫ ডিগ্রি। এটাই যে সাম্প্রতিক অতীতে মেদিনীপুরের শীতলতম দিন, তা মানছেন বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মধুমঙ্গল পাল। তাঁর কথায়, “পার্কের থার্মোমিটারে দেখা গিয়েছে, বুধবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৭.৫ ডিগ্রি ছিল। এটা নতুন রেকর্ড।”
নতুন বছর পড়তেই গা-ঝাড়া দিয়েছে শীত। শহরের তাপমাত্রা হামেশাই ৮-৯ ডিগ্রির মধ্যে ওঠানামা করছে। সেই সঙ্গে কামড় বসাচ্ছে উত্তুরে হাওয়া। আগামী রবিবার পৌষ সংক্রান্তি। তত দিন ঠান্ডার এই জমাটি ভাব থাকবে বলেই, শহরবাসীর আশা। যে ভাবে পারদ নামছে তাতে সাড়ে সাত ডিগ্রির রেকর্ডও আগামী ক’দিনে ভেঙে যায় কিনা, তা নিয়ে জল্পনা চলছে আবহবিদদের মধ্যেও। ক্রমশ তাপমাত্রা নামায় শৈত্যপ্রবাহের আশঙ্কাও দেখা দিয়েছে। আবহবিদেরা জানিয়েছেন, সাধারণত শীতকালে রাতের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের থেকে পাঁচ ডিগ্রি নামলেই বলা হয়, শৈত্যপ্রবাহ চলছে।
রোজ সন্ধ্যায় একসঙ্গে আড্ডা দেন মেদিনীপুরের বাসিন্দা নির্মাল্য বন্দ্যোপাধ্যায়, রণদীপ চক্রবর্তীরা। এতদিন চা-বিস্কুট হাতেই গল্পগুজব চলত। দিন কয়েক হল শুকনো পাতা জ্বেলে আগুন পোহাচ্ছেন নির্মাল্যরা। সেই ছবি আবার ফেসবুকে পোস্ট করে রণদীপ লিখেছেন, ‘নিভন্ত এই চুল্লিতে মা একটুখানি আগুন দে। আর কিছুদিন বেঁচেই থাকি বেঁচে থাকার আনন্দে।’ নির্মাল্য, রণদীপরা বলছিলেন, “অনেকদিন পরে শহরে এমন ঠান্ডা দেখছি।” বুধবার সন্ধ্যায় এক সঙ্গীতানুষ্ঠান দেখতে গিয়েছিলেন শহরের বাসিন্দা জয়দীপ নন্দী। তিনিও বলেন, “রাতে কাঁপতে কাঁপতে বাড়ি ফিরেছি। বহু দিন পরে হাড় কাঁপানো শীত পড়েছে।”