দুরন্ত মোবাইলের সঙ্গে এমনিতেই পাল্লা দিতে নাভিশ্বাস প্রপিতামহের যুগের বিএসএনএল ল্যান্ডলাইন। কর্মী সঙ্কটে নাজেহাল রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাটি। ফলে একবার খারাপ হলে কবে যে সংযোগ পাওয়া যাবে জানেন না গ্রাহকরা। মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, খড়্গপুর— সর্বত্রই এক ছবি।
তার উপর অস্থায়ী কর্মীদের ক্ষোভ। অভিযোগ, গত দু’মাসের বেতন পাননি বিএসএনএল-এর খড়্গপুর বিভাগের অস্থায়ী কর্মীরা। আর তার ফলেই নাকি ব্যহত হচ্ছে পরিষেবা। এই বিভাগের অন্তর্গত পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুরের সমস্ত এক্সচেঞ্জেই সমস্যা দেখা দিয়েছে। প্রাপ্য বেতনের জন্য এক্সচেঞ্জের এসডিও কাছে বিক্ষোভ দেখিয়ে স্মারকলিপি জমা দিয়েছেন কর্মীরা। লাভ হয়নি।
‘বিএসএনএল ক্যাজুয়াল মজদুর ইউনিয়ন’-এর জেলা (পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর) সম্পাদক সঞ্জিৎ দেবনাথ বলেন, ‘‘দীর্ঘদিন ধরেই ‘আনলিস্টেড’ ও ‘নন লিস্টেড ক্যাজুয়াল’ কর্মীদের বেতন অনিয়মিত। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বহুবার জানিয়েও কাজ হয়নি।’’ তাঁর দাবি, দু’মাসের মজুরি বকেয়া। ফলে কর্মীরা কাজ করতে চাইছেন না।
মেদিনীপুর এক্সচেঞ্জের এসডিও বিলাস ঘোষ বলেন, ‘‘কর্মীদের সমস্যার কথা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।’’ তবে বিএসএনএল-এর খড়্গপুর ডিভিশনের জেনারেল ম্যানেজার মীরা মারডি অবশ্য দাবি করেছেন, ‘‘আমার কাছে এমন কোনও অভিযোগ জমা পড়েনি।’’
বেশিরভাগ টেলিফোন এক্সচেঞ্জেই স্থায়ী কর্মীর সংখ্যা কম। দু’তিনটি এক্সচেঞ্জের দায়িত্বে রয়েছেন একজন আধিকারিক। ফলে টেলিফোন লাইন ও কেবলের কাজ করেন অস্থায়ী কর্মীরাই। তাঁরা কাজ বন্ধ করলে পরিষেবা ব্যহত হয়। দুই মেদিনীপুরেই টেলিফোন পরিষেবা ব্যহত হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। মেদিনীপুর শহরের জগনুতলা এলাকায় শঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়, শ্যামল চন্দের বাড়ির টেলিফোন দীর্ঘদিন ধরে খারাপ হয়ে পড়ে রয়েছে। বার বার অভিযোগ জানিয়েও লাভ হয় না। রবীন্দ্রনগরের ভোলানাথ মাইতি এমনকী সঙ্গত বাজারের বাণীপ্রভা নিকেতনের টেলিফোনও খারাপ। প্রয়োজনে কেউ বাইরে থেকে যোগাযোগ করতে পারেন না।
মেদিনীপুর এক্সচেঞ্জের ‘ক্যাজুয়াল মজদুর ইউনিয়নে’র সম্পাদক তারাশঙ্কর মণ্ডল বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকারের নিয়ম মেনে কর্মীদের বেতন দেওয়া হয় না। দু’মাস বেতন না পেয়ে বিক্ষোভ ও স্মারকলিপি জমা দিয়েছি। এ ভাবে চলে না।’’ সঞ্জিৎ দেবনাথ বলেন, ‘‘খুব শীঘ্রই বিএসএনএল এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন ও এআইবিডিপিএ মিলিত হয়ে বড় জমায়েত করে সময়সীমা বেঁধে দেব। কাজ না হলে বৃহত্তর আন্দোলন হবে।’’