পুরসভায় দলনেতা নেই, আশঙ্কায় বিরোধীরা

বিরোধীদের কাউন্সিলর সংখ্যা কমতে কমতে এসে ঠেকেছে ন’টিতে। মাস কয়েক আগে পুরসভার বিরোধী দলনেতা কংগ্রেসের রবিশঙ্কর পাণ্ডেও তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

খড়্গপুর শেষ আপডেট: ২৯ নভেম্বর ২০১৬ ০০:৩১
Share:

বিরোধীদের কাউন্সিলর সংখ্যা কমতে কমতে এসে ঠেকেছে ন’টিতে। মাস কয়েক আগে পুরসভার বিরোধী দলনেতা কংগ্রেসের রবিশঙ্কর পাণ্ডেও তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। তারপর থেকেই ফাঁকা পুরসভার বিরোধী দলনেতা ও পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটি (পিএসি)-এর চেয়ারম্যান পদ। কংগ্রেসের অভিযোগ, মাস তিনেক আগে ওই দু’টি পদের জন্য দু’জনের নাম প্রস্তাব করা হয়। যদিও এ বিষয়ে পুরসভা উদাসীন বলে অভিযোগ। পিএসি চেয়ারম্যানের পদ ফাঁকা থাকায় পুরসভায় আসা অর্থের হিসাব মিলছে না বলে অভিযোগ।

Advertisement

গত পুরভোটে ৩৫ আসনবিশিষ্ট পুরসভায় ১১টি আসন পেয়েছিল তৃণমূল। কংগ্রেস ১১টি, বিজেপি সাতটি, বামেরা ৬টি করে আসন দখল করে। পরে বিজেপি ও সিপিআই কাউন্সিলরদের সমর্থনে বোর্ড গঠন করে তৃণমূল। মাস কয়েক আগে পাঁচ জন কংগ্রেস কাউন্সিলরও শাসকদলে যোগ দেন। বর্তমানে তৃণমূলের কাউন্সিলর সংখ্যা ২৬। বাকি ৯টি আসনের মধ্যে ছ’টি কংগ্রেসের দখলে রয়েছে। বাকি তিনটি আসন রয়েছে বাম ও বিজেপির দখলে।

নিয়ম অনুযায়ী, বিরোধী দলগুলির মধ্যে যেহেতু কংগ্রেসের আসন সংখ্যা বেশি। তাই বিরোধী দলনেতা ও পিএসি চেয়ারম্যানেরর পদে কংগ্রেস কাউন্সিলরের নির্বাচিত হওয়ার কথা। কংগ্রেস সূত্রে খবর, মাস তিনেক আগে বিরোধী দলনেত্রী হিসাবে রীতা শর্মা ও পিএসি-র চেয়ারম্যান পদে চিত্তরঞ্জন মণ্ডলের নাম প্রস্তাব করা হয়। তারপরেও ওই দু’টি পদ এখনও পূরণ হয়নি। কংগ্রেসের শহর সভাপতি অমল দাস বলেন, “তিন মাস আগে বিরোধী দলনেতা, পিএসি পদে দুই কাউন্সিলরের নাম প্রস্তাব করেছিলাম। দ্রুত বোর্ড মিটিং ডেকে ওই দু’জনের নাম ঘোষণা করা উচিত ছিল পুরসভার। কিন্তু তা হয়নি। এর ফলে আমরা পুরসভার অর্থ সংক্রান্ত কোনও হিসাব পাচ্ছি না।”

Advertisement

বিরোধীদের অভিযোগ, চেয়ারম্যান পদ ফাঁকা থাকায় পিএসি-র বৈঠকও হচ্ছে না। ফলে পুরসভায় কোন খাতে কত অর্থ আসছে, কী ভাবে সেই অর্থ ব্যয় হচ্ছে তা জানা যাচ্ছে না। এই পরিস্থিতিতে বিভিন্ন খাতে হিসাব বহির্ভূত অর্থ খরচ হতে পারে বলে আশঙ্কা বিরোধীদের। বিরোধী দলের এক নেতার কথায়, ‘‘বিরোধী দল গণতন্ত্রের এখটি স্তম্ভ। অথচ খড়্গপুর পুরসভায় কোনও বিরোধী দলনেতা না থাকায় গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াই
বাধা পাচ্ছে।’’

পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, গত তিন মাসে পুরসভায় কোনও বোর্ড মিটিং হয়নি। তবে গত অগস্ট মাসে রেশন কার্ড নিয়ে বিশেষ বোর্ড মিটিং ডাকা হয়েছিল। যদিও ওই বৈঠকেও বিরোধী দলনেতা পদে কারও নাম ঘোষণা করা হয়নি। এ বিষয়ে রবিশঙ্কর পাণ্ডে বলেন, “কংগ্রেস নাম প্রস্তাব করার পরে আর বোর্ড মিটিং হয়নি। ফলে নাম ঘোষণা হয়নি।’’ তাঁর কথায়, ‘‘আমি যে দিন দলবদল করেছি সে দিন থেকেই তো ওঁরা বিরোধী দলনেতার অফিসঘর ব্যবহার করছে। আর এটা তো বিধানসভা নয়। এখানে বিরোধী দলনেতার আর কী ভূমিকা রয়েছে।”

এ বিষয়ে পুরপ্রধান প্রদীপ সরকার বলেন, “কংগ্রেস নাম প্রস্তাব করার পরে আর বোর্ড মিটিং হয়নি। পরের বোর্ড মিটিংয়ে নিশ্চয় নতুন নাম ঘোষণা করা হবে।” কংগ্রেসের শহর সভাপতি অমলবাবু বলেন, “কালীপুজোর পরে ওই দু’টি পদে নতুন নাম ঘোষণা করা হবে বলে জানানো হয়েছিল। এরপরেও ঘোষণা না হলে আমরা বিষয়টি মহকুমাশাসককে জানাব।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন