নিরাপদে বেড়ানোর পার্ক নেই, অভিযোগ কাঁথির গৃহিণীদের

পরিকল্পনাহীন কাঁথি শহরকে আরও সুন্দর ও সার্বিক ভাবে গড়ে তুলতে মহিলা কাউন্সিলারদের সদর্থক ও সক্রিয় ভূমিকায় দেখতে চান কাঁথি শহরের গৃহিণীরা। বোঝা গেল তাঁদের সাফ কথা, মহিলা প্রার্থী হিসেবে ভোটে জিতে পুরসভার শোভাবর্ধন করে কোনও লাভ নেই। বরং বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করতে হবে। শহরের মহিলারা আশা করেন সক্রিয় ভূমিকা নেবেন মহিলা কাউন্সিলররা।

Advertisement

সুব্রত গুহ

কাঁথি শেষ আপডেট: ২৩ এপ্রিল ২০১৫ ০১:০৫
Share:

পরিকল্পনাহীন কাঁথি শহরকে আরও সুন্দর ও সার্বিক ভাবে গড়ে তুলতে মহিলা কাউন্সিলারদের সদর্থক ও সক্রিয় ভূমিকায় দেখতে চান কাঁথি শহরের গৃহিণীরা। বোঝা গেল তাঁদের সাফ কথা, মহিলা প্রার্থী হিসেবে ভোটে জিতে পুরসভার শোভাবর্ধন করে কোনও লাভ নেই। বরং বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করতে হবে। শহরের মহিলারা আশা করেন সক্রিয় ভূমিকা নেবেন মহিলা কাউন্সিলররা।

Advertisement

নয় নয় করে পঞ্চাশ বছর পেরিয়ে এসেছে কাঁথি পুরসভা। শহরের চাকুরীজীবী থেকে গৃহবধূ— সকলেই মনে করেন মহিলাদের স্বাচ্ছন্দ্যের দিকে পুরসভা বেশ কিছুটা উদাসীন।

১৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা গৃহবধূ মঞ্জু মুন্দ্রা বেশ ক্ষুব্ধ শহরের অবস্থা নিয়ে। বিশেষত মহিলাদের জন্য পুরসভার পরিষেবা নিয়ে তাঁর যথেষ্ট ক্ষোভ। শহরের বিভিন্ন জায়গায় নতুন ঢালাই রাস্তা তৈরি হচ্ছে, অনেক মোড়েই হাইমাস্ট আলোর ব্যবস্থা হয়এছে। কিন্তু আজও মহিলাদের জন্য কোনও শৌচালয়ের তৈরি হয়নি কোনও রাস্তায়। এমনকী পুরুষদের শৌচালয়গুলিরও কোনও রক্ষণাবেক্ষণ হয় না। মহকুমা শহর হওয়ায় প্রতিদিন বহু মানুষ আসেন এখানে। সমস্যায় পড়েন মহিলারা। তা ছাড়া শৌচালয়গুলিকে ঘিরে নরক তৈরি হয়েছে শহরের মাঝখানে। তিনি বলেন, ‘‘শুধু তাই নয়, শহরের কোনও কোনও ওয়ার্ডে একাংশের মানুষ আজও প্রকাশ্যে শৌচক্রিয়া করে থাকেন। কোনও নজর নেই পুরসভার।’’

Advertisement

শহরের একপ্রান্তে ২০ নম্বর ওয়ার্ড। সেখানে নিকাশি নিয়ে অতিষ্ট বাসিন্দারা। স্থানীয় বাসিন্দা মিতালি দাসের কথায়, ‘‘গোটা ওয়ার্ডে কোনও নিকাশি নালা নেই। বাড়ির বর্জ্য, নোংরা জল প্রায়ই উপচে পড়ে রাস্তায়। একটু বৃষ্টি হলেই ওয়ার্ডের বিস্তীর্ণ এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়ে।’’ তাঁর অভিজ্ঞতায় বৃষ্টির জল আর নিকাশি নালার নোংরা জল মিলেমিশে একাকার হয়ে যায়। অথচ কিছু করার নেই। ওই নোংরা জল পেরিয়েই বাসিন্দাদের যাতায়াত করতে হয়।

শহরে মহিলা ও স্কুল পড়ুয়া কিশোরীদের জন্য একটা পার্ক ভীষণ প্রয়োজন। জানিয়েছেন ১২ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা রীতা ভুঁইয়া। তাঁর আক্ষেপ, ‘‘সারাদিন সাংসারের কাজ ব্যস্ত থাকি। অনেকেই অফিস সামলান। সকালে বা বিকেলের দিকে একটু পায়চারি করা বা যোগ ব্যয়াম করার খোলা মাঠ নেই।’’

৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা রিনা মাইতি মনে করেন নাগরিকদের সচেতন করার দায়িত্বও পুরসভার নেওয়া উচিৎ। অন্তত বিভিন্ন ভাবে প্রচার তারা চালাতেই পারে। তিনি বলেন, ‘‘সাফাই কর্মীরা নিয়মিত কাজ করেন। কিন্তু ফের নোংরা করেন বাসিন্দারা। পরিচ্ছন্নতা ও সবুজায়নের জন্য প্রচার কর্মসূচি নেওয়া উচিৎ পুরসভার।’’ ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা সন্ধ্যা কামিল্যা দাবি করেন যোগ্য মানুষদের নিয়ে গঠিত হোক ওয়ার্ড কমিটিগুলি। তাঁর কথায়, ওয়ার্ডগুলিতে বিভিন্ন পুর সমস্যা ও পরিষেবার ক্ষেত্রে ওয়ার্ড কমিটিগুলির গুরুত্ব অপরিসীম। কিন্তু সেখানে রাজনৈতিক স্বার্থে এমন কিছু মানুষকে বসানো যাতে শুধু রাজনীতিটুকুই হয়।

এ সবের পাশাপাশি কাঁথি শহরের সেন্ট্রাল বাসস্ট্যান্ড-সহ শহরের বিভিন্ন স্ট্যান্ডের যাত্রী প্রতীক্ষালয়গুলি দখলমুক্ত করা দরকার। একটি আধুনিক অডিটোরিয়াম ও সংস্কৃতি কেন্দ্র তৈরি করা, খড়্গচণ্ডী শ্মশানে বৈদ্যুতিক চুল্লি বসানো ছাড়াও পুর এলাকার বিভিন্ন বস্তি এলাকাগুলিতে আরও বেশি করে বস্তি উন্নয়নে জোর দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন কাঁথি পুর শহরের হেঁশেল সামলানো গৃহিনীরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন