টিকিট কাউন্টার বন্ধ পড়ে, যাত্রী দুর্ভোগ খড়্গপুরে

বছর চুয়াত্তরের অশোক রায় খড়্গপুরের ঝাপেটাপুরের বাসিন্দা। সুরাতে ছেলের কাছে যাবেন বলে খড়্গপুর স্টেশনের বোগদা সংলগ্ন টিকিট কাউন্টারে সংরক্ষিত আসনের টিকিট কাটতে গিয়েছিলেন বৃদ্ধ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

খড়্গপুর শেষ আপডেট: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০১:২২
Share:

বন্ধ কাউন্টার। নিজস্ব চিত্র

বছর চুয়াত্তরের অশোক রায় খড়্গপুরের ঝাপেটাপুরের বাসিন্দা। সুরাতে ছেলের কাছে যাবেন বলে খড়্গপুর স্টেশনের বোগদা সংলগ্ন টিকিট কাউন্টারে সংরক্ষিত আসনের টিকিট কাটতে গিয়েছিলেন বৃদ্ধ। সেখানে লম্বা লাইন দেখে গেলেন বাসস্ট্যান্ড লাগোয়া স্টেশনের উত্তরদিকের টিকিট কাউন্টারে। কিন্তু সংরক্ষিত আসনের ওই টিকিট কাউন্টার অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ। অগত্যা বৃদ্ধ আবার গেলেন বোগদার দিকের কাউন্টারে। অশোকবাবু বলছিলেন, “এই বয়সে লাইনে দাঁড়াতে কষ্ট হবে বলে বাসস্ট্যান্ডের দিকে টিকিট কাউন্টারে গিয়েছিলাম। এ ভাবে কাউন্টার বন্ধ রাখার কী কারণ, বুঝলাম না। খুব ভোগান্তি হল।”

Advertisement

চারদিন ধরেই এ ভাবেই ভোগান্তিতে পড়ছেন ‘এ-ওয়ান’ স্টেশন খড়্গপুরের যাত্রীদের। ১৩ ফেব্রুয়ারি থেকে উত্তর দিকে ট্রেনের সংরক্ষিত আসনের টিকিট কাউন্টার অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এতে বেশি ভোগান্তি হচ্ছে দূরপাল্লার ট্রেনের যাত্রীদের। বাইরে থেকে আসা যাত্রীরা পড়ছেন বিভ্রান্তিতে। অনেকেই না জেনে উত্তর অংশে টিকিট কাটতে গিয়ে কাউন্টার বন্ধ দেখছেন। তারপর প্রায় দু’কিলোমিটার ঘুরে বোগদা সংলগ্ন দক্ষিণ দিকের টিকিট কাউন্টারে যেতে হচ্ছে। সেখানে যথারীতি দীর্ঘ লাইন। নিমপুরার পাপ্পু সিংহ বলছিলেন, “বাড়ি এই শহরে। কিন্তু আমি থাকি দিল্লিতে। ফেরার টিকিট কাটতে এসে দেখি এই কাউন্টার বন্ধ। বিজ্ঞপ্তিও এমন ভাবে সাঁটানো হয়েছে যে চোখে পড়ছে না। এত বড় স্টেশনে এমন ব্যবস্থা আশা করা যায় না।”

রেল সূত্রে খবর, বুকিং ক্লার্ক কম থাকাতেই এই সমস্যা। খড়্গপুর স্টেশনে ১২জন বুকিং কাউন্টার কর্মীর অভাব রয়েছে। কর্মীর অভাবে গিরিময়দান স্টেশনের ২ নম্বর প্ল্যাটফর্ম সংলগ্ন টিকিট কাউন্টারও দিনের অধিকাংশ সময়ে বন্ধ থাকে। খড়্গপুরে যে কাউন্টারটি চালু রয়েছে, সেখানকার কর্মীরাও ক্ষুব্ধ। এক বুকিং ক্লার্কের কথায়, “উত্তর দিকের কাউন্টার চারদিন ধরে বন্ধ থাকায় আমরাও বিপাকে পড়েছি। ওই দিকের যাত্রীরা এ দিকে আসায় অতিরিক্ত সময় কাজ করতে হচ্ছে।”

Advertisement

রেল কর্তৃপক্ষ বিষয়টি নিয়ে উদাসীন বলেই অভিযোগ। শুক্রবার রেলের খড়্গপুরের সিনিয়ার ডিভিশনাল কমার্শিয়াল ম্যানেজার কুলদীপ তেওয়ারি জানান, তিনি ছুটিতে রয়েছেন। আর ডিভিশনাল কমার্শিয়াল ম্যানেজার সৌনা মুর্মুর বক্তব্য, “তিনজন বুকিং ক্লার্ক ছুটি নেওয়ায় সমস্যা হয়েছে। তবে আমরা খুব দ্রুত ওই কাউন্টার খোলার ব্যবস্থা করছি।” এ প্রসঙ্গে খড়্গপুরের ডিআরএম রাজকুমার মঙ্গলা বলেন, “আমাদের কর্মীর অভাব রয়েছে এটা ঠিক। তাই আমরা যাত্রীদের বেশি করে মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে টিকিট কাটার অনুরোধ জানাচ্ছি। কিন্তু মাত্র এক শতাংশ যাত্রী মোবাইল অ্যাপ ব্যবহার করছেন।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন