—ফাইল চিত্র।
ঘড়িতে সকাল সাড়ে ১০টা। চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যানের ঘর তো বটেই, দোতলা পুরসভার অধিকাংশ ঘরই কার্যত ফাঁকা। কোথাও দু’একজন কর্মী এলেও তাঁরা ব্যস্ত খবরের কাগজ পড়তে। সময় গড়ালেও কর্মচারীদের সংখ্যা তেমন নজরে পড়ল না। হলদিয়া পুরসভায় শনিবার গোটা দিনেরই ছবিটা কার্যত ছিল এ রকম।
বন্ধ, সমাবেশের জেরে যাতে কোনও কর্মদিন যাতে নষ্ট না হয়, সে বিষয়ে সব সময় জোর দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু অভিযোগ, তাঁর সমাবেশেই এ দিন গিয়েছেন পুরসভার নির্বাচিত জন প্রতিনিধি এবং দলের কর্মচারী সংগঠনের সদস্যেরা। যার জেরে ‘ফাঁকা’ পড়ে রইল পুরসভা।
এ দিন সকালে হলদিয়া পুরসভার প্রশাসনিক ভবনে গিয়ে দেখা গিয়েছে, কর্মী-আধিকারিক সংখ্যা অত্যন্ত কম। পুরসভার ‘রিসিভ’ কাউন্টার, যেখানে প্রতিদিন ভিড় জমান স্থানীয়েরা, সেখানে এ দিন কাউকেই দেখতে পাওয়া গেল না। পৌনে ১২টা নাগাদ ওই কাউন্টারে মাত্রে এক কর্মীর দেখা মিলল। অথচ ওই কাউন্টারে চার জন কর্মী নিযুক্ত রয়েছেন। খাদ্য সরবরাহ, পানীয় জল সরবরাহের মত গুরুত্বপূর্ণ দফতর কার্যত ‘ফাঁকা’ই ছিল।
খাদ্য সরবরাহ দফতরে বসে দুই কর্মী খবরের কাগজ পড়ছিলেন। তাঁদের বক্তব্য, ‘‘কী আর করব। পুরো অফিস ফাঁকা। লোকজন নেই। এমন সুযোগ হাতছাড়া করা যায়।’’ এ দিন জন্ম-মৃত্যু শংসা পত্র প্রদান দফতর ছিল ‘তালা বন্ধ’।
২৯টি ওয়ার্ডের হলদিয়া পুরসভা এবার বিরোধী শূন্যভাবে জয় পেয়েছে শাসক দল। পুরসভা সূত্রের খবর, তাই নির্বাচিত জন প্রতিনিধিদের অধিকাংশ কলকাতা চলে গিয়েছেন দলীয় কর্মসূচিতে। বাকি সরকারি আধিকারিক বা কর্মীদের অধিকাংশ ‘অনুপস্থিত’ ছিলেন। এ দিন পুরসভাতে লোকজন আসাও ছিল অন্য দিনের তুলনায় একেবারে কম। স্থানীয় এক ব্যক্তির কথায়, ‘‘এ দিনের পরিস্থিতি দেখে শুনে কারও মনে হবে না, এটা জেলার অন্যতম ব্যস্ত শহর হলদিয়ার গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক ভবন।’’
পুরসভার অফিসে কর্মী কম থাকার বিষয়টিকে কটাক্ষ করেছেন সিপিএমের বিধায়ক তাপসী মণ্ডল। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের ডাকা বন্ধে সিটুর সমর্থকে অফিসে না গেলে, তাঁদের শো কজ করা হয়। এ ক্ষেত্রে বৈষম্য কেন?’’ ‘ছুটি কর্ম সংস্কৃতি’ প্রসঙ্গে হলদিয়া পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান সুধাংশু মণ্ডল বলেন, ‘‘যাঁরা দলের কর্মচারী সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত, তাঁরা হয়তো দলের কর্মসূচিতে গিয়েছিলেন। তবে বাকিরা পুরসভায় কাজে সময়ে এসেছিলেন।’’